কক্সবাজারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠিত টাস্কফোর্সের ১৫ জুলাই থেকে চলতি সময়ে অভিযান চালিয়ে ২১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮৩ পিস ইয়াবা, প্রায় দেড় হাজার লিটার দেশি মদ, ৩৮ কেজি গাঁজা, ৭৩৫ ক্যান বিয়ার ও আড়াই কেজির বেশি ক্রিস্টাল মেথ জব্দ করা কটেছে। একই সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে ৩৪৭ জন মাদক ব্যবসায়ী।
রবিবার (২৪ আগস্ট) সকালে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র অডিটোরিয়ামে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজার এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠিত টাস্কফোর্সের কার্যক্রম ও অগ্রগতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা।
আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব সোমেন মন্ডল বলেন, “বাংলাদেশে মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন ঠেকাতে সরকার কক্সবাজারে গঠন করেছে বিশেষ টাস্কফোর্স। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সীমান্তবর্তী এলাকায় সক্রিয় মাদক চক্র ভেঙে দিতে ইতোমধ্যেই এই টাস্কফোর্স কার্যক্রম শুরু করেছে”।
টাস্কফোর্স গঠনের সময় উল্লেখ করে এই সদস্য সচিব জানান, চলতি বছরের ১৪ জুলাই কক্সবাজার বিয়াম আঞ্চলিক কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক বৈঠকে টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
“পরবর্তীতে ২০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজার এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য টাস্কফোর্স’ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।আমাকে এই টাস্কফোর্সের সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়”, বলেন মি. মন্ডল।
সোমেন মন্ডল জানান,”এই টাস্কফোর্স তিনটি কৌশলে কাজ করছে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত অভিযান জোরদার, সমাজে মাদকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মাদক মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিতকরণ।”
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন,”মিয়ানমার থেকে নিয়মিত ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথসহ নানা মাদক কক্সবাজারে প্রবেশ করছে। পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চল, সড়ক, রেল ও সমুদ্রপথের কারণে এই জেলা দীর্ঘদিন ধরেই চোরাচালানকারীদের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।”
টাস্কফোর্সের সংশ্লিষ্টদের ধারণা, কেবল আইন প্রয়োগ নয়, সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তাই এই টাস্কফোর্সে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় নেতা, জনপ্রতিনিধি ও তরুণদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।