কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাট এলাকায় বাঁকখালী নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এজাহারনামীয় ৯ জনসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে চারজনকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার সকালে কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কস্তুরাঘাট-খুরুশকূল সংযোগ সেতুর সংলগ্ন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলে দখলদাররা বাধা দেয়। এসময় ইটপাটকেল নিক্ষেপে পুলিশের কনস্টেবল করিম আহত হন। পরে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. ইলিয়াস খান জানান, বিআইডব্লিউটিএর নেতৃত্বে সোমবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিন কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। দ্বিতীয় দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে আবারও অভিযান শুরু হলে দখলদাররা হামলা চালায়। হামলাকারিদের ধাওয়া দিয়ে চারজনকে আটক করে পুলিশ।
বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান জানান, দুই দিনে অন্তত ৭০ একর জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। উচ্ছেদ হওয়া স্থাপনার মালামাল ও মাটি নিলামে বিক্রি করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বুধবারও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে উৎপত্তি হয়ে ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদী কক্সবাজার শহরের মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। এর মধ্যে নুনিয়ারছড়া থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এলাকায় সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে। গত ১০ থেকে ১২ বছরে সেখানে এক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে।
২০১০ সালে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএকে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক করা হলেও জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় দখল অব্যাহত ছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে জেলা প্রশাসনের অভিযানে ৬ শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও পরে ফের দখল হয়ে যায়। বর্তমানে সেখানে নতুন করে দুই শতাধিক স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
গত ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বাঁকখালী নদীর সীমানা নির্ধারণ করে চার মাসের মধ্যে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে।
এর ধারাবাহিকতায় সোমবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, নদীর সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এরপর নদীর সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
টিটিএন ডেস্ক: 























