ঢাকা ০৭:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মুমূর্ষু সময় পার করেছি এই দুই দিন, কারামুক্তির পর নুসরাত ফারিয়া সুপরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে: ফখরুল মহেশখালী ও রামু থানার ওসি প্রত্যাহার ১৭ বছর পর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫শ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন ঈদের ছুটিতে হোটেলে অতিরিক্ত রুম ভাড়া নিলেই ব্যবস্থা – জেলা প্রশাসন চকরিয়ায় একেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও একেএস ফার্মেসি উদ্বোধন জমি বিরোধ: চকরিয়ায় যুবক খুন নুসরাত ফারিয়ার জামিন মঞ্জুর উখিয়ায় ইয়াবাসহ স্কুল শিক্ষক গ্রেফতার – পরিবারের দাবী ‘ষ’ড়’যন্ত্র কক্সবাজার পলিটেকনিকে ছাত্রদল ও শিবিরের পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ: আহত ৮ কক্সবাজার সিটি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ প্রতিবেদন, নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ এনসিপি ‘সেকুলারিস্ট’ নয়, ‘ধর্মতান্ত্রিকও’ নয়: নাহিদ নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর একটা ঘটনা: উপদেষ্টা ফারুকী ৯ জুলাই থেকে ১৩ আগস্ট দেশে ছিলেন না নুসরাত ফারিয়া আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষয়ক্ষতি পুনরুদ্ধারে জেলা পর্যায়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

কক্সবাজারে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারের দাবিতে মানববন্ধন— দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

সমুদ্রের গর্জনে মুখরিত কক্সবাজার — পাহাড়, প্রকৃতি আর পর্যটকে সমৃদ্ধ এক অনন্য জেলা। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা সেবার দিক দিয়ে যেন রয়ে গেছে পিছিয়ে। প্রায় ২৯ লক্ষ মানুষের বসবাস, সঙ্গে ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা, হাজারো সরকারি-বেসরকারি কর্মজীবী এবং প্রতিদিন আগত অগণিত পর্যটক — অথচ নেই একটি সরকারি কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার। কক্সবাজারবাসীর এই দীর্ঘদিনের অবহেলার ক্ষোভ এবার রূপ নিলো মানববন্ধনে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পৌরসভা চত্বরে আয়োজন করা হয় এক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের। “কক্সবাজারবাসীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করো”—এই স্লোগানে একত্রিত হন জেলার স্বেচ্ছাসেবক, সচেতন নাগরিক এবং সর্বদলীয় মানুষ। বিএনপি, জামায়াত, কমিউনিস্ট পার্টি, এনসিপি — রাজনীতির বিভাজন ভুলে সবাই এক কাতারে।

মানববন্ধনে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী বলেন, আমার স্ত্রী একজন কিডনি রোগী। ডায়ালাইসিস করাতে সূদুর চট্টগ্রাম নিয়ে যেতে হয়। যেখানে সপ্তাহে ৩ বার ডায়ালাইসিস করতে হয়। প্রতিবার ৪ হাজার টাকা করে সপ্তাহে ১২ টাকা খরচ হয়। এছাড়া আয়রন ইনজেকশন দিতে হয়। এমন খরচের চিকিৎসা কক্সবাজার থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে করানো সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমরা অনতিবিলম্বে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের দাবি জানাই। যদি দাবি মেনে নেওয়া না হয় তাহলে ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের মতো আন্দোলন করে দাবি আদায় করা হবে। প্রথমে আমরা মতবিনিময় করেছি, এরপর এখানে মানববন্ধন করছি, পরবর্তীতে রাস্তায় নেমে অবরোধ করা হবে বলেও জানান তিনি।

জামায়াত নেতা শহিদুল ইসলাম বাহাদুর বা ভিপি বাহাদুর বলেন, কক্সবাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গায় অবশ্যই কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার প্রয়োজন। আমাদের দাবি যৌক্তিক। যৌক্তিক দাবির জন্য আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন করার দাবি জানান।

বাম নেতা বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম বলেন, প্রথমে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। যদি কলেজ পূর্ণাঙ্গ হয় তাহলে সকল আধুনিক সুযোগসুবিধা পাব। পাশাপাশি এনজিও থেকে বরাদ্দ পাওয়া স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ২৫% থেকে একটি আধুনিক কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি করার জন্য আমরা একমাস সময় বেঁধে দিচ্ছি। এর মধ্যে করতে হবে। নাহয় আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।

আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন বলেন, আমরা সকল মানুষ একত্রিত হয়েছি কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারের মতো আমাদের মৌলিক অধিকার আদায় করতে। আমাদের চাইতে হবে কেন। আমাদের অবশ্যই কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার দিতে হবে কক্সবাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গায়।

পরবর্তীতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিনকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এসময় কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের দাবি জানানো হয় জেলা প্রশাসককে।

বিষয়টি নিয়ে মানববন্ধনের সংগঠক ইমরান হোসাইন নবি বলেন, কক্সবাজার জেলা গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। আমরা গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন করার দাবি জানাচ্ছি। এটি সরকার চাইলে এখনই সম্ভব। বেশি টাকা তো দরকার নেই। এখানে অনেক এনজিও কাজ করে। তাদের বললেও হয়ে যায়। তাই আমাদের যৌক্তিক দাবি সরকারকে জানিয়েছি।

কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী জামশেদ বলেন, কক্সবাজার সদর হাসপাতালে সরকারিভাবে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের জন্য এই মানববন্ধন থেকে সরকার, সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে দাবি জানাচ্ছি। আমাদের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। বিদেশে না গিয়ে আমাদের দেশে আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।

ট্যাগ :

মুমূর্ষু সময় পার করেছি এই দুই দিন, কারামুক্তির পর নুসরাত ফারিয়া

This will close in 6 seconds

কক্সবাজারে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারের দাবিতে মানববন্ধন— দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

আপডেট সময় : ০৮:৩৬:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

সমুদ্রের গর্জনে মুখরিত কক্সবাজার — পাহাড়, প্রকৃতি আর পর্যটকে সমৃদ্ধ এক অনন্য জেলা। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা সেবার দিক দিয়ে যেন রয়ে গেছে পিছিয়ে। প্রায় ২৯ লক্ষ মানুষের বসবাস, সঙ্গে ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা, হাজারো সরকারি-বেসরকারি কর্মজীবী এবং প্রতিদিন আগত অগণিত পর্যটক — অথচ নেই একটি সরকারি কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার। কক্সবাজারবাসীর এই দীর্ঘদিনের অবহেলার ক্ষোভ এবার রূপ নিলো মানববন্ধনে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পৌরসভা চত্বরে আয়োজন করা হয় এক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের। “কক্সবাজারবাসীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করো”—এই স্লোগানে একত্রিত হন জেলার স্বেচ্ছাসেবক, সচেতন নাগরিক এবং সর্বদলীয় মানুষ। বিএনপি, জামায়াত, কমিউনিস্ট পার্টি, এনসিপি — রাজনীতির বিভাজন ভুলে সবাই এক কাতারে।

মানববন্ধনে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী বলেন, আমার স্ত্রী একজন কিডনি রোগী। ডায়ালাইসিস করাতে সূদুর চট্টগ্রাম নিয়ে যেতে হয়। যেখানে সপ্তাহে ৩ বার ডায়ালাইসিস করতে হয়। প্রতিবার ৪ হাজার টাকা করে সপ্তাহে ১২ টাকা খরচ হয়। এছাড়া আয়রন ইনজেকশন দিতে হয়। এমন খরচের চিকিৎসা কক্সবাজার থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে করানো সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমরা অনতিবিলম্বে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের দাবি জানাই। যদি দাবি মেনে নেওয়া না হয় তাহলে ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের মতো আন্দোলন করে দাবি আদায় করা হবে। প্রথমে আমরা মতবিনিময় করেছি, এরপর এখানে মানববন্ধন করছি, পরবর্তীতে রাস্তায় নেমে অবরোধ করা হবে বলেও জানান তিনি।

জামায়াত নেতা শহিদুল ইসলাম বাহাদুর বা ভিপি বাহাদুর বলেন, কক্সবাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গায় অবশ্যই কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার প্রয়োজন। আমাদের দাবি যৌক্তিক। যৌক্তিক দাবির জন্য আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন করার দাবি জানান।

বাম নেতা বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম বলেন, প্রথমে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। যদি কলেজ পূর্ণাঙ্গ হয় তাহলে সকল আধুনিক সুযোগসুবিধা পাব। পাশাপাশি এনজিও থেকে বরাদ্দ পাওয়া স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ২৫% থেকে একটি আধুনিক কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি করার জন্য আমরা একমাস সময় বেঁধে দিচ্ছি। এর মধ্যে করতে হবে। নাহয় আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।

আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন বলেন, আমরা সকল মানুষ একত্রিত হয়েছি কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারের মতো আমাদের মৌলিক অধিকার আদায় করতে। আমাদের চাইতে হবে কেন। আমাদের অবশ্যই কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার দিতে হবে কক্সবাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গায়।

পরবর্তীতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিনকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এসময় কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের দাবি জানানো হয় জেলা প্রশাসককে।

বিষয়টি নিয়ে মানববন্ধনের সংগঠক ইমরান হোসাইন নবি বলেন, কক্সবাজার জেলা গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। আমরা গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন করার দাবি জানাচ্ছি। এটি সরকার চাইলে এখনই সম্ভব। বেশি টাকা তো দরকার নেই। এখানে অনেক এনজিও কাজ করে। তাদের বললেও হয়ে যায়। তাই আমাদের যৌক্তিক দাবি সরকারকে জানিয়েছি।

কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী জামশেদ বলেন, কক্সবাজার সদর হাসপাতালে সরকারিভাবে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের জন্য এই মানববন্ধন থেকে সরকার, সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে দাবি জানাচ্ছি। আমাদের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। বিদেশে না গিয়ে আমাদের দেশে আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।