ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নির্বাচনি জোট নিয়ে কোনো দলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: আখতার রেস্তোরাঁ শিল্প বাঁচাতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কক্সবাজারের রেস্তোরাঁ মালিকদের… বিমানবন্দরের আগুন তদন্তে বিশেষজ্ঞ আসছেন ৪ দেশ থেকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৪৬৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার: আটক ১ সাগরে নিম্নচাপ, বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত সাংবাদিক সরওয়ার আজম মানিকের মায়ের জানাজা সম্পন্ন নির্বাচন সম্পন্ন করতে ব্যর্থ: ‘উখিয়া স্টেশন বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতি’র অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন সাংবাদিক সরওয়ার আজম মানিকের মায়ের ইন্তেকাল: টিটিএনের শোক কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না থাকা লজ্জাজনক- জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ চকরিয়ায় কাভার্ডভ্যানের নিচে মোটর সাইকেল: নিহত-২ প্রার্থী চুড়ান্ত করা ,তারেক জিয়ার দেশে ফেরা, এনসিপির সাথে জোট প্রসঙ্গে যা বললেন সালাউদ্দিন আহমেদ প্রস্তুতি ছিলো চুড়ান্ত: আন্তর্জাতিক ফ্লাইট উড়ার আগেই স্থগিত স্বীকৃতি ঘোষণার ১১ দিনের মাথায় ‘আন্তর্জাতিক’ স্বীকৃতি হারাল কক্সবাজার বিমানবন্দর বাহারছড়ার গহীন পাহাড়ে কোস্টগার্ডের অভিযান: নারী ও শিশুসহ ৪৪ অ’প’হৃ’ত উদ্ধার শাশুড়ির ১২ লাখ টাকার কিলারে খুন হন সালমান শাহ!

জিনিসপত্রের দাম নিয়ে ৭০% মানুষের উদ্বেগ: পিপিআরসির জরিপ

  • টিটিএন ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০১:০৮:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 199

সমাজের নানা আর্থিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক উদ্বেগের কারণে প্রায় ৪৬ শতাংশ মানুষ ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা হারিয়েছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ। ঘুষ আগের চেয়ে কমলেও হয়রানির শিকার মানুষেরা বলছেন, ৭৪ শতাংশ ক্ষেত্রে টাকা ছাড়া কিছু হয় না।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) জরিপে এই চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার রাতে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ‘পরিবার পর্যায়ে মনস্তাত্ত্বিক অবস্থান’ শীর্ষক এক আলোচনায় সংস্থাটির সাম্প্রতিক জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়। গত মে মাসে দেশের ৮ হাজার ৬৭টি খানার মধ্যে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান।

জরিপের পারিবারিক মনস্তত্ত্ব অংশের ফলাফল তুলে ধরে বলা হয়, প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ আর্থিক সংকটের মধ্যে আছে। এদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ চিকিৎসা ব্যয় এবং ২৭ শতাংশ ঋণ পরিশোধ নিয়ে সংকটে আছেন।

হয়রানি ও ঘুষ
ঘুষের বিষয়ে বলা হয়, সরকারি কার্যালয় ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় ঘুষ নেওয়ার প্রবণতা কমেছে।

জরিপে এই প্রথম হয়রানির দিকটি তুলে আনা হয়েছে। এতে দেখা যায়, হয়রানির শিকার ৭৪ শতাংশ মানুষ বলছেন, টাকা না দিলে কিছুই হয় না। সরকারি সেবা নিতে হয়রানির শিকার হন ৭১ শতাংশ মানুষ। স্বাস্থ্যসেবায় এই হার প্রায় ৪৯ শতাংশ।

জরিপে মানুষের উদ্বেগের কারণগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। সন্তানের শিক্ষা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন ৬৫ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া কিশোর অপরাধ এবং মাদক নিয়ে উদ্বিগ্ন ৫৫ এবং ৫৬ শতাংশ মানুষ।

ব্যক্তির আকাঙ্ক্ষা
ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষার বিষয়ে মানুষ ৫৩ শতাংশ ক্ষেত্রে সামাজিক সম্মানের কথা বলেছেন। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি চান তাঁরা। রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষর বিষয়ে ৫৬ শতাংশ মানুষ দুর্নীতি প্রতিরোধের কথা বলেছেন।

সার্বিকভাবে নানা সংকট ও উদ্বেগের কারণে প্রায় ৪৬ শতাংশ মানুষ ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা হারালেও ৫৪ শতাংশ মানুষ এখনো হাল ছেড়ে দিতে নারাজ।

সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, রাষ্ট্রকে কাঠামোগতভাবে অপ্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে গোষ্ঠীতন্ত্র কায়েম করা হয়েছে। এখানে যারা সংগঠিত তারা সুবিধা নিচ্ছে, কিন্তু জনগণ অসংগঠিত থাকায় তাদের ভাগ পাচ্ছে না। আগে সমাজে অর্থ উপার্জন তৃতীয় প্রধান বিষয় থাকলেও এখন মানুষ যেকোনো উপায়ে অর্থ উপার্জনে প্রাধান্য দিচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়া বাংলাদেশের চেয়ে বেশি লড়াকু মনোভাব কারও নেই। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই মনোভাবই মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

দেশে প্রতি চারজনের একজন এখন গরিব
সমস্যা জিইয়ে রাখা হচ্ছে
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলতাফ পারভেজ প্রশ্ন তোলেন, ‘এত বড় বিপ্লবের পর ৪৬ শতাংশ মানুষ কেন ভরসা রাখতে পারছে না।’ তিনি আরও বলেন, নারী ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয় বাড়ছে। সমাজে প্রতিনিয়ত সংঘাতমূলক মনোভাব ছড়াচ্ছে। একদিকে দেশে কর্মসংস্থান নেই, অন্যদিকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগও কমছে। শিক্ষার্থীদের ঠিকভাবে ক্লাসে আনা যায়নি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো গুমোটভাব আছে।

সমস্যা জিইয়ে রাখা হচ্ছে অভিযোগ করে আলতাফ পারভেজ বলেন, ৭ কলেজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করার কার্যক্রম এক বছরেও সমাধান করা যায়নি। এটি নিয়ে অনবরত রাস্তা, অবরোধ হুমকি–ধমকি চলছে। উচ্চকক্ষ নিম্নকক্ষ নিয়ে প্রতিদিনকার বিবাদ টেলিভিশনের মাধ্যমে ভুরুঙ্গামারী পর্যন্ত ছড়িয়ে যাচ্ছে।

জনতুষ্টিবাদী রাজনীতি
বাংলাদেশ জনতুষ্টিবাদী রাজনীতির উর্বর ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ডক্টরাল ফেলো আসিফ বিন আলী। তিনি বলেন, তরুণদের বড় অংশ এখন আশাবাদী নয়। জুলাই তরুণদের ক্ষোভ আরও বাড়তে পারে, এবং সেটা নেপালের মতো সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যেতে পারে। রাজনৈতিক পরিবর্তনের স্বপ্নকে মানুষের অর্থনৈতিক সুবিধায় পরিণত করার আলাপ নেই। ফলে সমাজে যেকোনো চরমপন্থা জায়গা করে নিতে পারে। সেটা হতে পারে ধর্মীয় চরমপন্থা। দেশ এখন জনতুষ্টিবাদীর জন্য প্রস্তুত, যেখানে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা বেশি সমর্থন পাচ্ছে।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিকসের (দায়রা) গবেষক ভূঁইয়া মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, তরুণদের ক্ষোভ বাড়লেও তাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দুর্বল হবে না। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলোর অপ্রাতিষ্ঠানিক পরিচালনা পদ্ধতির কারণেই ক্ষোভ বাড়ছে। কেন বারবার অভ্যুত্থান হলেও সংস্কার করা যায়নি, সেটি বড় প্রশ্ন। হয়রানির বিষয়গুলো অর্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, বরং কাগজে–থাকলেও বাস্তবে সেবা না পাওয়ার কারণে তা হচ্ছে। শহরাঞ্চলে হয়রানির প্রবণতা বেশি। শহরে ভাসমান মানুষ বেশি থাকায় এটা হতে পারে। এটার কারণ আরও খতিয়ে দেখা যেতে পারে। এই জরিপ প্রতিবছর পরিচালনার আহ্বান জানান তিনি।

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মানুষের বড় অংশ আশাবাদী নয়, এটা হতাশাজনক। কেন এত দ্রুত মানুষের একটি বড় অংশের আশা চলে গেল, সেটা গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে।

এই জরিপ প্রতিবছর পরিচালনা করা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

 

সূত্র:প্রথম আলো

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনি জোট নিয়ে কোনো দলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: আখতার

This will close in 6 seconds

জিনিসপত্রের দাম নিয়ে ৭০% মানুষের উদ্বেগ: পিপিআরসির জরিপ

আপডেট সময় : ০১:০৮:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সমাজের নানা আর্থিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক উদ্বেগের কারণে প্রায় ৪৬ শতাংশ মানুষ ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা হারিয়েছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ। ঘুষ আগের চেয়ে কমলেও হয়রানির শিকার মানুষেরা বলছেন, ৭৪ শতাংশ ক্ষেত্রে টাকা ছাড়া কিছু হয় না।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) জরিপে এই চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার রাতে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ‘পরিবার পর্যায়ে মনস্তাত্ত্বিক অবস্থান’ শীর্ষক এক আলোচনায় সংস্থাটির সাম্প্রতিক জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়। গত মে মাসে দেশের ৮ হাজার ৬৭টি খানার মধ্যে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান।

জরিপের পারিবারিক মনস্তত্ত্ব অংশের ফলাফল তুলে ধরে বলা হয়, প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ আর্থিক সংকটের মধ্যে আছে। এদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ চিকিৎসা ব্যয় এবং ২৭ শতাংশ ঋণ পরিশোধ নিয়ে সংকটে আছেন।

হয়রানি ও ঘুষ
ঘুষের বিষয়ে বলা হয়, সরকারি কার্যালয় ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় ঘুষ নেওয়ার প্রবণতা কমেছে।

জরিপে এই প্রথম হয়রানির দিকটি তুলে আনা হয়েছে। এতে দেখা যায়, হয়রানির শিকার ৭৪ শতাংশ মানুষ বলছেন, টাকা না দিলে কিছুই হয় না। সরকারি সেবা নিতে হয়রানির শিকার হন ৭১ শতাংশ মানুষ। স্বাস্থ্যসেবায় এই হার প্রায় ৪৯ শতাংশ।

জরিপে মানুষের উদ্বেগের কারণগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। সন্তানের শিক্ষা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন ৬৫ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া কিশোর অপরাধ এবং মাদক নিয়ে উদ্বিগ্ন ৫৫ এবং ৫৬ শতাংশ মানুষ।

ব্যক্তির আকাঙ্ক্ষা
ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষার বিষয়ে মানুষ ৫৩ শতাংশ ক্ষেত্রে সামাজিক সম্মানের কথা বলেছেন। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি চান তাঁরা। রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষর বিষয়ে ৫৬ শতাংশ মানুষ দুর্নীতি প্রতিরোধের কথা বলেছেন।

সার্বিকভাবে নানা সংকট ও উদ্বেগের কারণে প্রায় ৪৬ শতাংশ মানুষ ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা হারালেও ৫৪ শতাংশ মানুষ এখনো হাল ছেড়ে দিতে নারাজ।

সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, রাষ্ট্রকে কাঠামোগতভাবে অপ্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে গোষ্ঠীতন্ত্র কায়েম করা হয়েছে। এখানে যারা সংগঠিত তারা সুবিধা নিচ্ছে, কিন্তু জনগণ অসংগঠিত থাকায় তাদের ভাগ পাচ্ছে না। আগে সমাজে অর্থ উপার্জন তৃতীয় প্রধান বিষয় থাকলেও এখন মানুষ যেকোনো উপায়ে অর্থ উপার্জনে প্রাধান্য দিচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়া বাংলাদেশের চেয়ে বেশি লড়াকু মনোভাব কারও নেই। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই মনোভাবই মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

দেশে প্রতি চারজনের একজন এখন গরিব
সমস্যা জিইয়ে রাখা হচ্ছে
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলতাফ পারভেজ প্রশ্ন তোলেন, ‘এত বড় বিপ্লবের পর ৪৬ শতাংশ মানুষ কেন ভরসা রাখতে পারছে না।’ তিনি আরও বলেন, নারী ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয় বাড়ছে। সমাজে প্রতিনিয়ত সংঘাতমূলক মনোভাব ছড়াচ্ছে। একদিকে দেশে কর্মসংস্থান নেই, অন্যদিকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগও কমছে। শিক্ষার্থীদের ঠিকভাবে ক্লাসে আনা যায়নি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো গুমোটভাব আছে।

সমস্যা জিইয়ে রাখা হচ্ছে অভিযোগ করে আলতাফ পারভেজ বলেন, ৭ কলেজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করার কার্যক্রম এক বছরেও সমাধান করা যায়নি। এটি নিয়ে অনবরত রাস্তা, অবরোধ হুমকি–ধমকি চলছে। উচ্চকক্ষ নিম্নকক্ষ নিয়ে প্রতিদিনকার বিবাদ টেলিভিশনের মাধ্যমে ভুরুঙ্গামারী পর্যন্ত ছড়িয়ে যাচ্ছে।

জনতুষ্টিবাদী রাজনীতি
বাংলাদেশ জনতুষ্টিবাদী রাজনীতির উর্বর ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ডক্টরাল ফেলো আসিফ বিন আলী। তিনি বলেন, তরুণদের বড় অংশ এখন আশাবাদী নয়। জুলাই তরুণদের ক্ষোভ আরও বাড়তে পারে, এবং সেটা নেপালের মতো সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যেতে পারে। রাজনৈতিক পরিবর্তনের স্বপ্নকে মানুষের অর্থনৈতিক সুবিধায় পরিণত করার আলাপ নেই। ফলে সমাজে যেকোনো চরমপন্থা জায়গা করে নিতে পারে। সেটা হতে পারে ধর্মীয় চরমপন্থা। দেশ এখন জনতুষ্টিবাদীর জন্য প্রস্তুত, যেখানে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা বেশি সমর্থন পাচ্ছে।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিকসের (দায়রা) গবেষক ভূঁইয়া মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, তরুণদের ক্ষোভ বাড়লেও তাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দুর্বল হবে না। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলোর অপ্রাতিষ্ঠানিক পরিচালনা পদ্ধতির কারণেই ক্ষোভ বাড়ছে। কেন বারবার অভ্যুত্থান হলেও সংস্কার করা যায়নি, সেটি বড় প্রশ্ন। হয়রানির বিষয়গুলো অর্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, বরং কাগজে–থাকলেও বাস্তবে সেবা না পাওয়ার কারণে তা হচ্ছে। শহরাঞ্চলে হয়রানির প্রবণতা বেশি। শহরে ভাসমান মানুষ বেশি থাকায় এটা হতে পারে। এটার কারণ আরও খতিয়ে দেখা যেতে পারে। এই জরিপ প্রতিবছর পরিচালনার আহ্বান জানান তিনি।

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মানুষের বড় অংশ আশাবাদী নয়, এটা হতাশাজনক। কেন এত দ্রুত মানুষের একটি বড় অংশের আশা চলে গেল, সেটা গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে।

এই জরিপ প্রতিবছর পরিচালনা করা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

 

সূত্র:প্রথম আলো