ঢাকা ০৯:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফে কাফনের কাপড় পরে আব্দুল্লাহ’র অনুসারীদের মশাল মিছিল, সড়ক অবরোধ ১৫ নভেম্বরের যুব সমাবেশ সফল করতে পেকুয়া যুবদলের প্রস্তুতি সভা জেলা শহরের সাথে দুরত্ব কমবে ২৭ কিলোমিটার: ভারুয়াখালী সেতুর কাজ শেষ হবে কবে? মহেশখালীতে রাসায়নিক স্প্রে ছিটিয়ে পানের বরজ নষ্ট করার অভিযোগ ট্রাভেল ব্যাগের ভিতরে পাচার হচ্ছিলো ১২ কেজি গাঁজা: র‌্যাবের অভিযানে স্ত্রামী-স্ত্রী আটক সৈকতের বালুতটে স্মৃতির আঁচড়ে বন্ধুত্বের রঙিন দিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কারণ নেই: আইন উপদেষ্টা প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরু, ৬৫ হাজার স্কুলে ক্লাস বন্ধ ইজিন বিকল হয়ে মাঝ সাগরে ভাসছিলো ৩ দিন:ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে উদ্ধার নৌবাহিনীর সাংবাদিক আতিককে অপহরণ ও হামলার ঘটনায় ‘আদালতে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা ৬ বছর পর পেকুয়াসহ ৫ উপজেলায় “শহীদ জিয়া মেধা বৃত্তি” পরীক্ষা অনুষ্ঠিত সেন্টমার্টিনে অবৈধ ট্রলার ও থাই জালসহ ১৯ জেলে আটক ইউনুস হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে উত্তাল টেকনাফ : থানা ঘেরাও চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে পাকিস্তানী নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ সাড়ে ৫ কিলোমিটারের কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দিলো ১০ সাঁতারু

বিআইডব্লিউটিএ’র আপত্তি স্বত্তেও গাছ কেটে চ্যানেল ভরাট করে মহেশখালীতে এলজিইডির জেটি নির্মাণ

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের আপত্তি উপেক্ষা করে মহেশখালী চ্যানেলের গোরকঘাটায় জেটি নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলপথ মহেশখালী চ্যানেলের মোহনায় এবং চরভূমিতে এই জেটি নির্মাণ করতে গিয়ে এলজিইডি কেটেছে প্যারাবনের কয়েক হাজার বাইন গাছ।

সঠিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই নির্মিত এই অবৈধ কাঠামোর কারণে চ্যানেল ভরাট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গত ২৪ এপ্রিল কক্সবাজার পরিদর্শনে এসে নৌ ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন ছাড়াই জেটিটি নির্মাণ করা হয়েছে এবং এতে অবৈধভাবে গাছ কাটা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (বন্দর) নয়ন শীল বলেন, “মহেশখালী চ্যানেল দক্ষিণ চট্টগ্রামের পানি বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ এবং এলজিইডির অননুমোদিত নির্মাণের কারণে এখন তা ভরাট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।”

“কাজ শুরুর সময়ই আমরা তাদের একটি চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলেছিলাম কিন্তু তারা আমাদের আপত্তি আমলে নেয়নি” বলেন নয়ন শীল। এই চিঠি যখন দেয়া হয়েছিলো তিনি তখন কক্সবাজারে কর্মরত ছিলেন জানিয়ে আরো বলেন, কাজ বন্ধে নতুন আরো একটি চিঠি প্রস্তুত করা হচ্ছে।

“নদী জলপথ বা চরভূমিতে কিছু নির্মাণ করতে হলে বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন লাগবে। এলজিইডি আমাদের অনুমতি নেয়নি তারা নিয়ম ভেঙেছে” বলেন তিনি।

সম্প্রতি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটা এলাকায় চ্যানেল ও চরভূমিতে পাইলিংয়ের কাজ চলছে এবং ইতোমধ্যে হাজার হাজার ম্যানগ্রোভ গাছ কাটা হয়েছে।

যেখানে এলজিইডি মূল চ্যানেলে নতুন জেটি নির্মাণ করছে সেখান থেকে মাত্র ৩০০ মিটারের ভেতরে গোরকঘাটা খালে একটি পুরনো জেটি রয়েছে যা চ্যানেলের সঙ্গেও সংযুক্ত।

এলজিইডি মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ বনি আমিন বলেন, নির্মাণাধীন জেটিটি ৭০০ মিটার দীর্ঘ ও ৭.৩ মিটার প্রশস্ত যার সঙ্গে ৩০০ মিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকার এই প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে।

“জেটির ভিত্তি কাজ শেষ হয়েছে। পুরনো জেটিটি মাত্র ১০ ফুট প্রশস্ত আর আমাদেরটা ২৪ ফুট। এই প্রকল্প এলাকার জনস্বার্থে করা হচ্ছে” বলেন বনি আমিন।

২০০৩–০৪ অর্থবছরে গাছগুলো প্রাকৃতিক উপকূলীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে রোপণ করা হয়েছিল। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই উপকূলীয় বনায়ন বিভাগ চট্টগ্রাম থেকে এলজিইডি কক্সবাজার অফিসে একটি আপত্তিপত্র পাঠানো হয় যেখানে বলা হয় এমন গাছ কাটতে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।

এলজিইডির কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান বলেন, তারা বন বিভাগের অনুমতি নিয়েছেন তবে বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি নেননি। তিনি দাবি করেন জেটিটি চ্যানেলে পলি জমার কারণ হবে না।

তবে প্রকৌশলী নিশ্চিত করতে পারেননি জেটি নির্মাণের আগে কোনো সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে কিনা।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

টেকনাফে কাফনের কাপড় পরে আব্দুল্লাহ’র অনুসারীদের মশাল মিছিল, সড়ক অবরোধ

This will close in 6 seconds

বিআইডব্লিউটিএ’র আপত্তি স্বত্তেও গাছ কেটে চ্যানেল ভরাট করে মহেশখালীতে এলজিইডির জেটি নির্মাণ

আপডেট সময় : ০৮:২৭:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের আপত্তি উপেক্ষা করে মহেশখালী চ্যানেলের গোরকঘাটায় জেটি নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলপথ মহেশখালী চ্যানেলের মোহনায় এবং চরভূমিতে এই জেটি নির্মাণ করতে গিয়ে এলজিইডি কেটেছে প্যারাবনের কয়েক হাজার বাইন গাছ।

সঠিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই নির্মিত এই অবৈধ কাঠামোর কারণে চ্যানেল ভরাট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গত ২৪ এপ্রিল কক্সবাজার পরিদর্শনে এসে নৌ ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন ছাড়াই জেটিটি নির্মাণ করা হয়েছে এবং এতে অবৈধভাবে গাছ কাটা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (বন্দর) নয়ন শীল বলেন, “মহেশখালী চ্যানেল দক্ষিণ চট্টগ্রামের পানি বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ এবং এলজিইডির অননুমোদিত নির্মাণের কারণে এখন তা ভরাট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।”

“কাজ শুরুর সময়ই আমরা তাদের একটি চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলেছিলাম কিন্তু তারা আমাদের আপত্তি আমলে নেয়নি” বলেন নয়ন শীল। এই চিঠি যখন দেয়া হয়েছিলো তিনি তখন কক্সবাজারে কর্মরত ছিলেন জানিয়ে আরো বলেন, কাজ বন্ধে নতুন আরো একটি চিঠি প্রস্তুত করা হচ্ছে।

“নদী জলপথ বা চরভূমিতে কিছু নির্মাণ করতে হলে বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন লাগবে। এলজিইডি আমাদের অনুমতি নেয়নি তারা নিয়ম ভেঙেছে” বলেন তিনি।

সম্প্রতি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটা এলাকায় চ্যানেল ও চরভূমিতে পাইলিংয়ের কাজ চলছে এবং ইতোমধ্যে হাজার হাজার ম্যানগ্রোভ গাছ কাটা হয়েছে।

যেখানে এলজিইডি মূল চ্যানেলে নতুন জেটি নির্মাণ করছে সেখান থেকে মাত্র ৩০০ মিটারের ভেতরে গোরকঘাটা খালে একটি পুরনো জেটি রয়েছে যা চ্যানেলের সঙ্গেও সংযুক্ত।

এলজিইডি মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ বনি আমিন বলেন, নির্মাণাধীন জেটিটি ৭০০ মিটার দীর্ঘ ও ৭.৩ মিটার প্রশস্ত যার সঙ্গে ৩০০ মিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকার এই প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে।

“জেটির ভিত্তি কাজ শেষ হয়েছে। পুরনো জেটিটি মাত্র ১০ ফুট প্রশস্ত আর আমাদেরটা ২৪ ফুট। এই প্রকল্প এলাকার জনস্বার্থে করা হচ্ছে” বলেন বনি আমিন।

২০০৩–০৪ অর্থবছরে গাছগুলো প্রাকৃতিক উপকূলীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে রোপণ করা হয়েছিল। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই উপকূলীয় বনায়ন বিভাগ চট্টগ্রাম থেকে এলজিইডি কক্সবাজার অফিসে একটি আপত্তিপত্র পাঠানো হয় যেখানে বলা হয় এমন গাছ কাটতে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।

এলজিইডির কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান বলেন, তারা বন বিভাগের অনুমতি নিয়েছেন তবে বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি নেননি। তিনি দাবি করেন জেটিটি চ্যানেলে পলি জমার কারণ হবে না।

তবে প্রকৌশলী নিশ্চিত করতে পারেননি জেটি নির্মাণের আগে কোনো সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে কিনা।