কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীর হালিমাপাড়া এলাকায় এক ইজিবাইক চালককে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত মুজিবুর রহমান (৩৭) একই এলাকার মৃত আবদুর জলিলের ছেলে।
কক্সবাজার মডেল থানার ওসি ইলিয়াস খান জানান, রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটকের তথ্য দেন ওসি। তবে ‘তদন্তের স্বার্থে’ উল্লেখ করে তার নাম পরিচয় জানাতে চাননি তিনি।
এঘটনা সংঘটিত হয় একটি গ্যারেজের ভেতর। ওই সময়কার সেখানের সিসিটিভি চিত্র আমাদের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায় নিহত চালক মুজিব অপর এক চালকের সাথে কথা বলছিলেন। হঠাৎ তিন-চার জন যুবক এসে মুজিবকে মারধর করতে থাকে। তাদের হাতে ছুরি জাতীয় বস্তু দেখা যায়।
মুজিবের সাথে কথোপকথনে থাকা অটো চালক দেলোয়ার বলেন, “কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা মারতে মারতে মুজিবকে গ্যারেজ থেকে বের করে ফেলে, একপর্যায়ে ছুরিকাঘাত করে চলে যায়”।
“গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন”- বলেন দেলোয়ার।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সেলিম বলেন, “হামলাকারীদের হাতে গুলিও দেখেছি।”
নিহত মুজিবের ভাই তানভীর বলেন, “ইজিবাইক কেনার ঋণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মুজিবুর রহমান ও পাশের ইসলামপুর এলাকার হোছনের ছেলে মাদকাসক্ত গোলাম মোস্তফার দ্বন্দ্ব হয়। ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় মোস্তফার ইজিবাইক রেখে দিয়েছিলেন আমার ভাই মুজিব। এঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মুজিবুর রহমানকে খুন করেছে গোলাম মোস্তফা।”
এঘটনায় অংশ নেয়া যুবকরা কক্সবাজার শহরের ছিনতাইসহ নানান অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য দিয়েছে সেখানকার স্থানীয়রা এবং যুবকরা অস্ত্র সজ্জিত থেকেই অপকর্ম করে যান।
হালিমাপাড়া সমাজ কমিটির সভাপতি নুরুল আবছার বলেন, “এঘটনায় অংশ নেয়া গোলাম মোস্তফা, আনোয়ার ও তাদের আরেক ভাই শাওন একত্রে অতর্কিত গ্যারেজে ঢুকে হত্যা করে মুজিবকে।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক এলাকাবাসী জানান, এঘটনায় অংশ নেয়া যুবক শাওনের রয়েছে নিজস্ব সন্ত্রাসী গ্রুপ। যারা অস্ত্রসজ্জিত হয়ে কক্সবাজার শহরজুড়ে ছিনতাই, মাদক বহন ও বিক্রির কাজে জড়িত।
কক্সবাজার থানার ওসি ইলিয়াস খানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আপাতত কোনো তথ্য দিতে চাননি। তিনি বলেন, অপরাধীরা চিহ্নিত হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এই হত্যাকান্ডের পরই ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গোলাম মোস্তফাদের বাড়ি ভাংচুর করেন। এসময় সেখান থেকে ৩টি বুলেট উদ্ধার করে এলাকাবাসী।