মহেশখালীতে ১০ বছরের এক শিশুকে জোরপূর্বক যৌন নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওটি যাচাই-বাছাই করে টিটিএন নিশ্চিত হয়েছে এটি ২০২৪ সালের ঘটনা। যেটি ঘটেছে কালারমারছড়ার অফিসপাড়া এলাকার পাহাড়ে এবং নির্যাতনকারীর হলেন নাজেম উদ্দিন (৩৮)।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, নাজেম উদ্দিন, জুলকার নাইনসহ একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্কুল ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশুদের যৌন নির্যাতন করে আসছে। কিন্তু ভয়ের কারণে কেউ মুখ খুলতে পারে না।
এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলেছেন টিটিএন। পরিবারটি জানায়, অভিযুক্ত নাজেম উদ্দিন ভয়ভীতি দেখিয়ে শিশুটিকে পৈশাচিক যৌন নির্যাতন করেছে। যা ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়। ভিডিওটি ধারণ করে জুলকারনাইন (২৮) নামের আরেক যুবক।
ভুক্তভোগী শিশুটির বড় ভাই জানান, বৃহস্পতিবার (৩ জুন) ফেসবুকে ভিডিওটি দেখতে পান। পরে তার ছোট ভাইয়ের সাথে কথা বলে তারা জানতে পারেন ২০২৪ সালের ১৩ জানুয়ারি দুপুর ১ টায় স্থানীয় ফকিরজুম পাড়া খেলার মাঠ থেকে বাড়িতে ফেরার পথে শিশুটিকে পাহাড়ে তুলে নিয়ে মারধর করে এবং জোরপূর্বক যৌন নির্যাতন করে নাজেম উদ্দিন। তা ভিডিও করে জুলকার নাইন।
তিনি বলেন, “আমার ছোট ভাইটিকে অস্ত্রের ভয় দেখানো হয়, যদি এই ঘটনা কাউকে বলে তাহলে তাকেসহ আমার বাবা ও আমাকে মেরে ফেলবে। এই ভয় থেকে এতোদিন কাউকে কিছু বলেনি সে।”
এই ঘটনায় অভিযুক্ত নাজেম উদ্দিন ও জুলকারনাইন কে আসামি করে মহেশখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক জানান, কালারমারছড়ায় যুবক দ্বারা শিশু বলৎকারের ঘটনায় মহেশখালী থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার করতে মহেশখালী থানা পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।
অভিযুক্ত নাজেম উদ্দিন কালারমারছড়া অফিস পাড়া এলাকার রশিদ আহমেদ প্রকাশ জামাত রশিদের পুত্র এবং অপর অভিযুক্ত জুলকার নাইন একই এলাকার মো. লেদুর পুত্র বলে জানা যায়।
স্থানীয়রা জানায় নাজেম উদ্দিন যুবদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। দলীয় মিটিং মিছিলের বিভিন্ন ছবিতে এই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে কালারমারছড়া ইউনিয়ন যুবদলের সদ্য সাবেক আহ্বায়ক ক.ম আলমগীর জানান নাজেম উদ্দিন যুবদলের সাথে সাংগঠনিক ভাবে সম্পৃক্ত ছিলো না। তবে বিএনপির সমর্থক হিসেবে বিভিন্ন মিটিং মিছিলে উপস্থিত থাকতেন।
স্থানীয়রা এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।