শ্রদ্ধেয় নেতা লুৎফর রহমান কাজল ভাইয়ের মতো করে যদি নিজের ভাব প্রকাশ করি তবে উনার মতো করেই বলতে হয়- “পুড়া ঘরে কেহ কেহ আলু পুড়ে খেল”।
গত কয়েকদিন ধরে যারা কক্সবাজার বাঁকখালী নদীর পাড় হতে উচ্ছেদকৃত স্থাপনার মালামাল ও মাটি নিলাম নিয়েছে, এখন তারা নিজেরাই উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।
গত কয়েকদিনে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোর যে দাবি বা অভিযোগ বা বক্তব্য ছিলো , এখন যারা আন্দোলন করছে তাদেরও একই দাবি বা অভিযোগ বা বক্তব্য, তারা দীর্ঘদিন ধরে উক্ত জায়গা বা এলাকায় বসবাস করছে, এবং সরকার হতে রেজিস্ট্রি নিয়ে রাজস্ব পরিশোধ করে খতিয়ান ভুক্ত করা হয়েছে।
যারা নিজের বসতভিটে রক্ষার জন্য যে যুক্তি দেখিয়ে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আজ আন্দোলন করছেন, একই যুক্তি গত কয়েকদিন ধরে যারা উচ্ছেদ হয়েছে তারাও দেখিয়ে ছিলো, কিন্তু দুঃখজনক আপনাদের লোভ গত কয়েকদিন উচ্ছেদ হওয়া মানুষ গুলোর আহাজারি কান্না আপনাদের কর্নপাত দৃষ্টিপাত হতে দেয় নাই, লোভ আপনাদের অন্ধ ও বধির করে দিয়ে ছিলো, বিবেকহীন করে দিয়ে ছিলো।
টাকা কামানোর জন্য মানুষ এতো নিচে নামতে পারে! অন্তত যারা রাজনীতি করে, যারা জনপ্রতিনিধিত্ব করে, তাদের কিছু বিষয়ে নিজেকে বিরত রাখতে হয়, যেনো রাষ্ট্র বা জনগণের স্বার্থে কথা বলার সুযোগ থাকে। সমাজের এমন শ্রেণির কিছু মানুষ আছে যারা টাকা কামানোর ক্ষেত্রে কোন কিছু ছাড় বা বাছবিবেচনা করে না, যা পায় লুটেপুটে খায়, এসমস্ত লোক দ্বারা যে সংগঠন বা রাজনৈতিক দল উপস্থাপিত হয়, সে সংগঠন বা রাজনৈতিক দল জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলে।
আমরা প্রত্যেকে চায়, প্রকৃতি রক্ষার জন্য বা নদী রক্ষার জন্য বাঁকখালী নদীর পাড় দখল মুক্ত হউক, কিন্তু তার আগে নির্ধারণ করতে হবে নদীর জায়গা কতটুকু কি পরিমাণ। এবং বিগত সময়ে যে সকল রাঘববোয়ালেরা প্রশাসনকে ব্যবহার করে এই নদীর জায়গা দখল করেছে, এবং দখলকৃত জায়গা সমাজের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষগুলোকে বসতভিটে বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার জন্য বিক্রি করেছে, এবং তৎকালীন সময়ে সরকারের যে সব কর্মকর্তা বা দপ্তর এসমস্ত জায়গা রেজিস্ট্রি করিয়েছে, খাজনা আদায় করে খতিয়ান ভুক্ত করেছে, সেসব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সনাক্ত করতে হবে, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা করে সম্পদ জব্দ করে ভুক্তভোগী লোকদের ক্ষতিপূরন দিতে হবে।
এখন হচ্ছে উল্টো, রাঘববোয়ালেরা খেয়ে চলে গেছে, সরকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তা, যারা এসব নদীর পাড় দখল হতে শুরু করে রেজিস্ট্রি খতিয়ান করা এসব প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত ছিলো তাদের নামও প্রকাশ হচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে কোন রকম ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে না।
লেখক
শাহাদাত হোসেন রিপন
সাবেক সভাপতি
কক্সবাজার জেলা ছাত্রদল।