ঢাকা ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পেকুয়ায় আগুনে পুড়লো ছয় বসতবাড়ি সিএনজির চাকায় পি’ষ্ট হয়ে মা’রা গেলো ১২ বছরের মোহাম্মদ সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার একান্ত বৈঠক রামু সেনানিবাসে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হলো সশস্ত্র বাহিনী দিবস ঢাকায় বর্ষসেরা সাংবাদিকের সম্মাননা পেলেন কক্সবাজারের ইরফান বিজিবির ডগ “রকি” উদ্ধার করলো ৬০ হাজার ইয়াবা, যুবক আটক বাংলাদেশী ২৮ মাঝিমাল্লাসহ ফিশিং ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড ইট আর মাটিতে চাপা পড়ে নিভল ৬ প্রাণ, আহত শতাধিক ভূমিকম্পের পর প্রধান উপদেষ্টার বার্তা সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহীদদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা ভূমিকম্পে যে ঝাঁকুনি হলো, তা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ: ভূমিকম্প–বিশেষজ্ঞ হুমায়ুন আখতার ৫.৭ মাত্রার এমন ভূমিকম্প ‘আগে কখনো দেখেনি’ ঢাকা ভূমিকম্পে পুরান ঢাকায় নিহত ৩ ঘরের দরজা ভেঙ্গে ব্যবসায়ীকে অ’পহ’রন: রোহিঙ্গা স’ন্ত্রা’সীদের সাথে এপিবিএনের ৬১ রাউন্ড গো’লাগু’লি যে ৪ বিষয়ে আল্লাহর আশ্রয় চেয়ে দোয়া করেছেন মহানবী (সা.)

প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ে

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম এখন কেজিপ্রতি ১১০ থেকে ১২০ টাকা। এক মাসে আগেও ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হতো। প্রতিবছরই অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। অক্টোবরে দাম বাড়তে শুরু করে এবং নভেম্বর ও ডিসেম্বরে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। আবার প্রতিবছরই ভারত থেকে আমদানি করে দাম কমাতে হয়। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) সম্প্রতি স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধিতে সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে। সেখানেও এই চিত্র ওঠে এসেছে। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন অনুসারে, গত ৩ বছরে নভেম্বরে গড় দাম ছিল যথাক্রমে ২০২৩ সালে ১১৫ টাকা, ২০২৪ সালে ১৩০ টাকা ও চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ১০৫ টাকা।

 

কেন দাম বাড়ে

অক্টোবর-ডিসেম্বরে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির বেশ কিছু কারণ আছে। প্রথমত, উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য; দ্বিতীয়ত, পেঁয়াজ সংরক্ষণের অভাব; তৃতীয়ত, মৌসুমের শেষ পর্যায়; চতুর্থত, বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ক্ষতি।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবছরই অক্টোবরের পর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাজারে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। মৌসুমের শেষ পর্যায়ে কৃষকের হাতেও পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকে না। তাই দাম বাড়ে।

পেঁয়াজ সংরক্ষণের অভাব

পেঁয়াজ সংরক্ষণের মৌসুম হলো জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। সরকারি সংরক্ষণাগার না থাকায় কৃষকেরা নিজেরাই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে থাকেন। পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে সরকারিভাবে সংরক্ষণের অভাবকে চিহ্নিত করেছে ট্যারিফ কমিশন। ট্যারিফ কমিশন বলেছে, বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বর্তমানে সরকারিভাবে পেঁয়াজ সংরক্ষণের হিমাগার নেই। কৃষক নিজের বাড়িতেই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করেন।

মৌসুমের শেষ পর্যায়

নভেম্বর ও ডিসেম্বর হলো পেঁয়াজের মৌসুমের শেষ পর্যায়। এই সময়ে কৃষকের ঘরে মজুত কম থাকে। সে কারণেও পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে মুড়িকাটা পেঁয়াজ (আগাম পেঁয়াজ) বাজারে আসতে শুরু করবে; তখন পেঁয়াজের দাম কমবে।

এখন বাজারে হালি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। গতকাল শনিবার পাবনায় এক মণ হালি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়। ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত পেঁয়াজের মৌসুম। এপ্রিল মাস থেকে পেঁয়াজ সংরক্ষণ শুরু হয়।

মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য

কৃষকের কাছ থেকে বাজারে আসা পর্যন্ত পেঁয়াজের একাধিকবার হাত বদল হয়। প্রতি ধাপে মুনাফা করেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। প্রতিটি ধাপেই মধ্যস্বত্বভোগীরা তাঁদের নির্ধারিত মুনাফায় পেঁয়াজ বিক্রি করে থাকেন। মধ্যস্বত্বভোগীদের অতি মুনাফার কারণেও মৌসুমে পেঁয়াজের দাম বাড়ে।

পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, এমন জেলা যেমন পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মেহেরপুরসহ একাধিক জেলায় গত দুই সপ্তাহে বৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিপুল পরিমাণ আগাম পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। এটাও বাজারে পেঁয়াজে মূল্যবৃদ্ধির কারণ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এ বছর কোন মাসে কত দাম

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে। তবে নভেম্বরে ১ কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন অনুসারে, গত জানুয়ারিতে এক কেজি পেঁয়াজের গড় দাম ছিল ৬৫ টাকা। পরের মাসে তা ৫২ টাকায় নেমে আসে। মার্চ মাসে পেঁয়াজের দাম আরও কিছুটা কমে ৪২ টাকা হয়। এপ্রিল মাসে হয় ৪৮ টাকা। মূলত ওই চার মাস হলো পেঁয়াজের মৌসুম। এরপরের ৩ মাস পেঁয়াজের দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকার মধ্যেই ছিল। আগস্টে অবশ্য হঠাৎ পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকায় ওঠে। পরের দুই মাস কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম ৭৫ টাকায় স্থির থাকে। চলতি নভেম্বরে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম ৪০ শতাংশ বেড়ে ১০৫ টাকা হয়।

পেঁয়াজ আমদানি কি সমাধান

প্রতিবছর পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ইতিমধ্যে ট্যারিফ কমিশন পেঁয়াজ আমদানির সুপারিশ করে বাণিজ্যসচিব ও কৃষিসচিবকে চিঠি দিয়েছে।

বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানির প্রধান উৎস দেশ ভারত। পেঁয়াজের মোট আমদানির ৯৯ শতাংশই ভারত থেকে করা হয়। এ ছাড়া তুরস্ক, পাকিস্তান, মিয়ানমার, চীন ও মিসর থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। গত অর্থবছরে মোট ৪ লাখ ৮৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। বর্তমানে পেঁয়াজের ওপর মোট ১০ শতাংশ শুল্ক কর আছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন। তবে সংরক্ষণ সমস্যাসহ নানা কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়। তাই গত অর্থবছরে ৩৩ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ বাজারে এসেছে।

ট্যারিফ কমিশন প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বর সময়ে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ঠেকানোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। এ ছাড়া বছরজুড়ে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য সরকারি পর্যায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে তারা।

ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান প্রথম আলোকে বলেন, পেঁয়াজের উচ্চ দামের সুবিধা কৃষক পাচ্ছেন না। মধ্যস্বত্বভোগীরা এই সুযোগ নিচ্ছেন। তাই পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ দিলে বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমে যাবে। ভোক্তারা যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন।

সূত্র: প্রথম আলো

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

This will close in 6 seconds

প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ে

আপডেট সময় : ০১:০৮:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম এখন কেজিপ্রতি ১১০ থেকে ১২০ টাকা। এক মাসে আগেও ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হতো। প্রতিবছরই অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। অক্টোবরে দাম বাড়তে শুরু করে এবং নভেম্বর ও ডিসেম্বরে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। আবার প্রতিবছরই ভারত থেকে আমদানি করে দাম কমাতে হয়। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) সম্প্রতি স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধিতে সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে। সেখানেও এই চিত্র ওঠে এসেছে। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন অনুসারে, গত ৩ বছরে নভেম্বরে গড় দাম ছিল যথাক্রমে ২০২৩ সালে ১১৫ টাকা, ২০২৪ সালে ১৩০ টাকা ও চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ১০৫ টাকা।

 

কেন দাম বাড়ে

অক্টোবর-ডিসেম্বরে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির বেশ কিছু কারণ আছে। প্রথমত, উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য; দ্বিতীয়ত, পেঁয়াজ সংরক্ষণের অভাব; তৃতীয়ত, মৌসুমের শেষ পর্যায়; চতুর্থত, বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ক্ষতি।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবছরই অক্টোবরের পর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাজারে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। মৌসুমের শেষ পর্যায়ে কৃষকের হাতেও পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকে না। তাই দাম বাড়ে।

পেঁয়াজ সংরক্ষণের অভাব

পেঁয়াজ সংরক্ষণের মৌসুম হলো জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। সরকারি সংরক্ষণাগার না থাকায় কৃষকেরা নিজেরাই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে থাকেন। পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে সরকারিভাবে সংরক্ষণের অভাবকে চিহ্নিত করেছে ট্যারিফ কমিশন। ট্যারিফ কমিশন বলেছে, বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বর্তমানে সরকারিভাবে পেঁয়াজ সংরক্ষণের হিমাগার নেই। কৃষক নিজের বাড়িতেই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করেন।

মৌসুমের শেষ পর্যায়

নভেম্বর ও ডিসেম্বর হলো পেঁয়াজের মৌসুমের শেষ পর্যায়। এই সময়ে কৃষকের ঘরে মজুত কম থাকে। সে কারণেও পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে মুড়িকাটা পেঁয়াজ (আগাম পেঁয়াজ) বাজারে আসতে শুরু করবে; তখন পেঁয়াজের দাম কমবে।

এখন বাজারে হালি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। গতকাল শনিবার পাবনায় এক মণ হালি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়। ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত পেঁয়াজের মৌসুম। এপ্রিল মাস থেকে পেঁয়াজ সংরক্ষণ শুরু হয়।

মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য

কৃষকের কাছ থেকে বাজারে আসা পর্যন্ত পেঁয়াজের একাধিকবার হাত বদল হয়। প্রতি ধাপে মুনাফা করেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। প্রতিটি ধাপেই মধ্যস্বত্বভোগীরা তাঁদের নির্ধারিত মুনাফায় পেঁয়াজ বিক্রি করে থাকেন। মধ্যস্বত্বভোগীদের অতি মুনাফার কারণেও মৌসুমে পেঁয়াজের দাম বাড়ে।

পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, এমন জেলা যেমন পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মেহেরপুরসহ একাধিক জেলায় গত দুই সপ্তাহে বৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিপুল পরিমাণ আগাম পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। এটাও বাজারে পেঁয়াজে মূল্যবৃদ্ধির কারণ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এ বছর কোন মাসে কত দাম

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে। তবে নভেম্বরে ১ কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন অনুসারে, গত জানুয়ারিতে এক কেজি পেঁয়াজের গড় দাম ছিল ৬৫ টাকা। পরের মাসে তা ৫২ টাকায় নেমে আসে। মার্চ মাসে পেঁয়াজের দাম আরও কিছুটা কমে ৪২ টাকা হয়। এপ্রিল মাসে হয় ৪৮ টাকা। মূলত ওই চার মাস হলো পেঁয়াজের মৌসুম। এরপরের ৩ মাস পেঁয়াজের দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকার মধ্যেই ছিল। আগস্টে অবশ্য হঠাৎ পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকায় ওঠে। পরের দুই মাস কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম ৭৫ টাকায় স্থির থাকে। চলতি নভেম্বরে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম ৪০ শতাংশ বেড়ে ১০৫ টাকা হয়।

পেঁয়াজ আমদানি কি সমাধান

প্রতিবছর পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ইতিমধ্যে ট্যারিফ কমিশন পেঁয়াজ আমদানির সুপারিশ করে বাণিজ্যসচিব ও কৃষিসচিবকে চিঠি দিয়েছে।

বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানির প্রধান উৎস দেশ ভারত। পেঁয়াজের মোট আমদানির ৯৯ শতাংশই ভারত থেকে করা হয়। এ ছাড়া তুরস্ক, পাকিস্তান, মিয়ানমার, চীন ও মিসর থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। গত অর্থবছরে মোট ৪ লাখ ৮৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। বর্তমানে পেঁয়াজের ওপর মোট ১০ শতাংশ শুল্ক কর আছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন। তবে সংরক্ষণ সমস্যাসহ নানা কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়। তাই গত অর্থবছরে ৩৩ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ বাজারে এসেছে।

ট্যারিফ কমিশন প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বর সময়ে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ঠেকানোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। এ ছাড়া বছরজুড়ে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য সরকারি পর্যায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে তারা।

ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান প্রথম আলোকে বলেন, পেঁয়াজের উচ্চ দামের সুবিধা কৃষক পাচ্ছেন না। মধ্যস্বত্বভোগীরা এই সুযোগ নিচ্ছেন। তাই পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ দিলে বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমে যাবে। ভোক্তারা যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন।

সূত্র: প্রথম আলো