ঢাকা ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ইজিন বিকল হয়ে মাঝ সাগরে ভাসছিলো ৩ দিন:ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে উদ্ধার নৌবাহিনীর সাংবাদিক আতিককে অপহরণ ও হামলার ঘটনায় ‘আদালতে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা ৬ বছর পর পেকুয়াসহ ৫ উপজেলায় “শহীদ জিয়া মেধা বৃত্তি” পরীক্ষা অনুষ্ঠিত সেন্টমার্টিনে অবৈধ ট্রলার ও থাই জালসহ ১৯ জেলে আটক ইউনুস হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে উত্তাল টেকনাফ : থানা ঘেরাও চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে পাকিস্তানী নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ সাড়ে ৫ কিলোমিটারের কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দিলো ১০ সাঁতারু চকরিয়ায় আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেফতার: ২ টি মাইক্রোবাস উদ্ধার বিশ্বকাপে খেলার ঘোষণা তাহলে দিয়েই দিলেন মেসি! তুলার গোডাউনে ভয়াবহ আ’গুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কক্সবাজার জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের বার্ষিক বনভোজন ও নবীনবরণ অনুষ্ঠিত ‎ নাইক্ষ্যংছড়ির জারুলিয়াছড়িতে ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা যুবক আটক বিডি ক্লিন উখিয়ার পরিচ্ছন্নতা অভিযান: ২ টন বর্জ্য অপসারণ রামুতে ব্রি ধান ১০৩ জাতের ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস প্রাথমিকে সঙ্গীত শিক্ষক পুনর্বহালের দাবিতে কক্সবাজারে বিক্ষোভ

সাগরে ভাসতে থাকা মহেশখালীর জেলেরা উদ্ধার হলো যেভাবে

মহেশখালী থেকে মাছ শিকারে গিয়ে ট্রলার ডুবে প্রায় একদিন সমুদ্রে ভেসে থাকার পর প্রাণে বেঁচে ঘরে ফিরেছেন ১৪ জেলে। এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় স্বস্তি নেমে এসেছে।

ফিরে আসা জেলেরা জানান, উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার জালাল মিয়া বহদ্দারের মালিকানাধীন এফবি মায়ের দোয়া নামের ৫২ অশ্বশক্তির একটি মাছ ধরার ট্রলারটি গত এক সপ্তাহ আগে ১৪ মাঝি-মাল্লা নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। সমুদ্রের গুলিরদ্বার পয়েন্টে মাছ শিকারের পর অন্য এলাকায় যাওয়ার পথে দিকভ্রান্ত হয়ে পড়েন ট্রলারের মাঝি আব্দুস সালাম। একপর্যায়ে ট্রলারটি ছয় বিও পয়েন্টের কাছাকাছি পৌঁছায়।

জেলেরা জানান, বুধবার রাত ৮টার দিকে হঠাৎ একটি অজ্ঞাত বড় ট্রলার তাদের ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে এফবি মায়ের দোয়া ডুবে যায়। মুহূর্তেই ১৪ মাঝি-মাল্লা সমুদ্রে পড়ে যান। জীবন বাঁচাতে তারা ট্রলারে থাকা ছোট ছোট ট্যাংক ও জালের ফ্লোট আঁকড়ে ধরেন এবং সেগুলো একসঙ্গে বেঁধে ঢেউয়ের তোড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভেসে থাকেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে হাতিয়ার একটি জেলেট্রলার তাদের উদ্ধার করে। পরে চট্টগ্রাম উপকূলে নামিয়ে দিলে শুক্রবার ভোরে তারা বাড়ি ফিরতে সক্ষম হন।

ট্রলারের মাঝি আব্দুস সালাম বলেন, “আমাদের ট্রলার হাতিয়ার এলাকায় পৌঁছানোর আগে কয়েকটি ট্রলারে দস্যুতা হয়েছিল। হয়তো সেই কারণেই আমাদের ট্রলারকে ডাকাতের ট্রলার ভেবে বড় ট্রলারটি ইচ্ছাকৃতভাবে ডুবিয়ে দিয়েছে। আমাদের বোটটি ছিল তাইল্ল্যা জালের ছোট বোট, আর তাদের বোট ছিল লাল জালের অনেক বড় বোট। ওই বোটটির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”

ট্রলার মালিক জালাল মিয়া বহদ্দার, তার ভাই ছিদ্দিক আকবর এবং বেঁচে যাওয়া জেলেরা জানান, সমুদ্রে এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে জীবিত ফিরে আসা আল্লাহর অশেষ রহমত। ট্রলারের ১৪ মাঝি-মাল্লা সবাই তাজিয়াকাটা এলাকার বাসিন্দা ও পরস্পর আত্মীয়। জাল ও সরঞ্জামসহ বোটটি ডুবে যাওয়ায় তাদের প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন মালিক।

এদিকে, উদ্ধারকারী ট্রলারের একজন মাল্লার ধারণ করা ছবিতে মহেশখালীর জেলেদের দুরাবস্থার চিত্র ধরা পড়ে। কয়েক মিনিটের ভিডিও ফুটেজেও দেখা যায়- ভেসে থাকা ক্লান্ত জেলেদের কান্না, হতাশা ও প্রাণে বাঁচার আকুতি। হৃদয়বিদারক সেই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ও স্বজনদের মধ্যে গভীর আবেগের সৃষ্টি হয়।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

ইজিন বিকল হয়ে মাঝ সাগরে ভাসছিলো ৩ দিন:ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে উদ্ধার নৌবাহিনীর

This will close in 6 seconds

সাগরে ভাসতে থাকা মহেশখালীর জেলেরা উদ্ধার হলো যেভাবে

আপডেট সময় : ০৬:৫৫:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মহেশখালী থেকে মাছ শিকারে গিয়ে ট্রলার ডুবে প্রায় একদিন সমুদ্রে ভেসে থাকার পর প্রাণে বেঁচে ঘরে ফিরেছেন ১৪ জেলে। এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় স্বস্তি নেমে এসেছে।

ফিরে আসা জেলেরা জানান, উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার জালাল মিয়া বহদ্দারের মালিকানাধীন এফবি মায়ের দোয়া নামের ৫২ অশ্বশক্তির একটি মাছ ধরার ট্রলারটি গত এক সপ্তাহ আগে ১৪ মাঝি-মাল্লা নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। সমুদ্রের গুলিরদ্বার পয়েন্টে মাছ শিকারের পর অন্য এলাকায় যাওয়ার পথে দিকভ্রান্ত হয়ে পড়েন ট্রলারের মাঝি আব্দুস সালাম। একপর্যায়ে ট্রলারটি ছয় বিও পয়েন্টের কাছাকাছি পৌঁছায়।

জেলেরা জানান, বুধবার রাত ৮টার দিকে হঠাৎ একটি অজ্ঞাত বড় ট্রলার তাদের ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে এফবি মায়ের দোয়া ডুবে যায়। মুহূর্তেই ১৪ মাঝি-মাল্লা সমুদ্রে পড়ে যান। জীবন বাঁচাতে তারা ট্রলারে থাকা ছোট ছোট ট্যাংক ও জালের ফ্লোট আঁকড়ে ধরেন এবং সেগুলো একসঙ্গে বেঁধে ঢেউয়ের তোড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভেসে থাকেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে হাতিয়ার একটি জেলেট্রলার তাদের উদ্ধার করে। পরে চট্টগ্রাম উপকূলে নামিয়ে দিলে শুক্রবার ভোরে তারা বাড়ি ফিরতে সক্ষম হন।

ট্রলারের মাঝি আব্দুস সালাম বলেন, “আমাদের ট্রলার হাতিয়ার এলাকায় পৌঁছানোর আগে কয়েকটি ট্রলারে দস্যুতা হয়েছিল। হয়তো সেই কারণেই আমাদের ট্রলারকে ডাকাতের ট্রলার ভেবে বড় ট্রলারটি ইচ্ছাকৃতভাবে ডুবিয়ে দিয়েছে। আমাদের বোটটি ছিল তাইল্ল্যা জালের ছোট বোট, আর তাদের বোট ছিল লাল জালের অনেক বড় বোট। ওই বোটটির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”

ট্রলার মালিক জালাল মিয়া বহদ্দার, তার ভাই ছিদ্দিক আকবর এবং বেঁচে যাওয়া জেলেরা জানান, সমুদ্রে এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে জীবিত ফিরে আসা আল্লাহর অশেষ রহমত। ট্রলারের ১৪ মাঝি-মাল্লা সবাই তাজিয়াকাটা এলাকার বাসিন্দা ও পরস্পর আত্মীয়। জাল ও সরঞ্জামসহ বোটটি ডুবে যাওয়ায় তাদের প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন মালিক।

এদিকে, উদ্ধারকারী ট্রলারের একজন মাল্লার ধারণ করা ছবিতে মহেশখালীর জেলেদের দুরাবস্থার চিত্র ধরা পড়ে। কয়েক মিনিটের ভিডিও ফুটেজেও দেখা যায়- ভেসে থাকা ক্লান্ত জেলেদের কান্না, হতাশা ও প্রাণে বাঁচার আকুতি। হৃদয়বিদারক সেই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ও স্বজনদের মধ্যে গভীর আবেগের সৃষ্টি হয়।