১২ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগই খানাখন্দে ভরা। অনেক জায়গার পিচ উঠে মাটি ও বৃষ্টির পানির সংমিশ্রণে কাঁদার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খানা-খন্দের মধ্যেই চলছে যানবাহন। সড়কের তিনটি বেইলি সেতুও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এই সড়ক দিয়েই চলছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গাড়ি। বলছি রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের কথা।
বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগ এর অধীনে এ সড়কটি বর্তমানে ১২ ফুট প্রস্থ। এই সড়ক দিয়ে পূরবী বাস গাড়ি, বড় কাঠ বহনকারী ট্রাক এবং নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির সদস্যের খাদ্য অন্যান্য সরঞ্জামসহ তাঁদের অভ্যন্তরীণ সড়ক উন্নয়নে ব্যবহৃত কার্ভার্ড ভ্যানের প্রস্থ সাড়ে ৮ ফুট। অপরদিকে দূরপাল্লার মালবাহী গাড়ির চওড়াও সাড়ে ৮ ফুট। এমন দুইটি গাড়ি মুখোমুখি হলে যানজট থেকে নিস্তার পাওয়া যায় না। দুই চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় মানুষের পায়ে হাটাও মুশকিল হয়ে পড়ে। অন্যদিকে পুরো সড়কের একাধিক স্থানে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বেইলি সেতু ৩টিও হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার লাখো মানুষের দুর্ভোগ লাগবে এই সড়কটি সম্প্রসারণ করে সেতুগুলো নতুনভাবে নির্মাণের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের।
অবশেষে স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৪ বছর পর উদ্যোগ নিলো সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ)। বান্দরবান সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলি মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের উন্নয়ন ও নতুন করে ৩টি সেতু নির্মাণের জন্য ২৪২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে সম্প্রতি পাশ হয়েছে। একনেকে পাশ হওয়া ৮৯০ কোটি টাকার মধ্যে বান্দরবান সড়ক ও জনপদ বিভাগের তিনটি সড়কের উন্নয়ন হবে। যার একটি রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়ক। শীঘ্রই পরামর্শক সরেজমিন কাজ শুরু করবে। এ ক্ষেত্রে তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ির ১১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস কে এম কফিল উদ্দিন কায়েস বলেছেন- বিজিবি জোয়ানরা বিভিন্ন অপারেশনে তাদের গাড়ি চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে তাই তিনিও সড়কের উন্নয়ন কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জোর সুপারিশ করেছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তোফাইল আহমদ বলেন- এই সড়কটির উন্নয়ন হলে আশপাশের দৃশ্যপট পাল্টে যাবে। এটা অত্যাধিক জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়কটির উন্নয়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা দাবি জানিয়ে আসছে।
রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের সমাজ সেবক তৈয়ব উল্লাহ বলেন- বেহাল সড়কটির জন্য প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। গর্জনিয়া ও কচ্ছপিয়ার শত শত কৃষকের পণ্য পরিবহনের প্রধান সড়কও এটি।
এই সড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছে রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া, গর্জনিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর, দোছড়ি, বাইশারী ও সোনাইছড়িসহ ৬ ইউনিয়নের মানুষ। এই এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩ শতাধিক। এতে শিক্ষক শিক্ষার্থী আছে ৪০ হাজারের বেশি। বিশেষ করে রামুর খাদ্য-শস্য ভাণ্ডার খ্যাত কচ্ছপিয়া ও গর্জনিয়া ইউনিয়ন সহ সীমান্তের ৬টি ইউনিয়নের উৎপাদিত পণ্য বেচাকেনার হাট গর্জনিয়া বাজারের পণ্য আনা-নেয়ায় ব্যবহার হচ্ছে রামু–নাইক্ষ্যংছড়ি সড়ক। জনসাধারণের কষ্ট লাগবে দ্রুত সড়কটি প্রশস্থকরণসহ সংস্কার জরুরি।