ঢাকা ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
হল সংসদে বিজয়ী হলেন বন কাগজে প্রচারণা চালানো টেকনাফের তামিম বিএনপি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি ঐতিহাসিক নির্বাচন চায়: সালাহউদ্দিন আহমেদ উখিয়া-টেকনাফের নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে: শাহজাহান চৌধুরী কক্সবাজার সরকারি কলেজে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত স্কুল ব্যাগে ইয়াবা পাচার:চকরিয়ায় পুলিশের জালে দম্পতি চাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণা কখন? কক্সবাজারে ছিনতাইয়ে জড়িত পুলিশের ‘সাবেক সদস্য’ আটক শহরের সমিতিপাড়ায় আগুনে পুড়েছে ২ দোকান :১১ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি শেষ হলো চাকসুর ভোট গ্রহণ:চলছে গণনা ছাত্র প্রতিনিধি-সাংবাদিক মিলে টেকনাফে ‘চেয়ারম্যান ও প্রশাসক’ পদ দেয়ার কথা বলে কোটি টাকার বানিজ্য! জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি, এখান থেকে শুরু করুন: চবি উপাচার্য চাকসুর ভোটগ্রহণ শুরু সীমান্তে ফের মাইন বিস্ফোরণ, মিয়ানমার নাগরিক নিহত- বাংলাদেশি আহত চকরিয়া হারবাং ইউনিয়ন ছাত্রদলের আংশিক কমিটি গঠিত তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে সাঁতার প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন

দাওয়াতের ভাষা হবে মিষ্টি ও সুন্দর

  • টিটিএন ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৩:২৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫
  • 127

দাওয়াত মানে ডাকা বা আহ্বান করা। মানুষকে আল্লাহর পথে ডেকে আনা, দুনিয়ার শান্তি ও আখিরাতের মুক্তির দিকে আহ্বান করাই এর মূল উদ্দেশ্য। এটি কেবল একটি ধারণা নয়; বরং প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব ও কাজ।

যেমন ডাক্তারি বিদ্যা ছাড়া চিকিৎসা করলে রোগীর প্রাণহানি হতে পারে, তেমনি দাওয়াতের জ্ঞান ছাড়া ময়দানে নামলে মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ভরা মজলিশে অশালীন ভাষা ব্যবহার বা কটু কথা বলা দাওয়াতের সঠিক পদ্ধতি নয়। এতে সাধারণ মুসলমান, বিশেষত কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণেরা ইসলাম ও আলেমদের থেকে দূরে সরে যেতে পারেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইসলামবিদ্বেষীরা সরল মুসলমানদের ইমান নিয়ে খেলতে পারে এবং নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে পারে।

‘আপনার প্রভুর পথে দাওয়াত দিন জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সুন্দর নীতিসম্পন্ন উপদেশ দিয়ে। তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো এমনভাবে, যা সবচেয়ে সুন্দর।
সুরা নাহল, আয়াত: ১২৫

নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে কী বলে ইসলাম
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা আমাদের দাওয়াতের পদ্ধতি স্পষ্টভাবে শিখিয়েছেন, ‘আপনার প্রভুর পথে দাওয়াত দিন জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সুন্দর নীতিসম্পন্ন উপদেশ দিয়ে। তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো এমনভাবে, যা সবচেয়ে সুন্দর।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ১২৫)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, দাওয়াত মানে কেবল আহ্বান নয়; বরং শালীন, সদয় ও প্রজ্ঞাপূর্ণ ভাষায় মানুষকে আল্লাহর পথে আনা। ঝগড়া বা কটু ভাষার পরিবর্তে সৌজন্য ও সদাচার দাওয়াতকে কার্যকর করে।

রাসুল (সা.) দাওয়াতের কাজে সর্বদা নম্রতা ও ভালোবাসার পরিচয় দিয়েছেন। কাফের-মুশরিকরা তাঁকে বিদ্রূপ করে ‘রাইনা’ (আমাদের দিকে তাকান) শব্দটির ভিন্ন উচ্চারণ করে (যার অর্থ হতো ‘আমাদের রাখাল’) ডাকত। তবু তিনি কখনো কটু কথা বলেননি; বরং শান্তভাবে ভালোবাসার ভাষায় দাওয়াত চালিয়ে গেছেন।

হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘সহজ করে দাও, কঠিন করো না। সুসংবাদ দাও, ভয় দেখিয়ে মানুষকে দূরে সরিও না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৯; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৭৩৪)

নিজেকে অযোগ্য মনে হলে ইসলাম কী বলে
সহজ করে দাও, কঠিন করো না। সুসংবাদ দাও, ভয় দেখিয়ে মানুষকে দূরে সরিও না।
সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৯
এ হাদিসে দাওয়াত ও শিক্ষা প্রদানের মূলনীতি শেখানো হয়েছে। মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকতে হবে সহজ ও বোধগম্য ভাষায়, যাতে তারা আকৃষ্ট হয়। কঠোরতা, জটিল নিয়ম বা ভয় দেখিয়ে কাউকে দূরে ঠেলে দেওয়া ইসলামের শিক্ষা নয়। ভালোবাসা, দয়া ও আশার বার্তাই সফল দাওয়াতের প্রকৃত পথ।

আমাদের দাওয়াতি মজলিশ হোক ভালোবাসা ও প্রজ্ঞার আলোকধারা, যেখানে ছড়িয়ে পড়বে সহনশীলতা ও সৌজন্য, হিংসা-বিদ্বেষের কোনো ছাপ থাকবে না। কোমল ও মমতাভরা আহ্বানে মানুষ আকৃষ্ট হবে, হৃদয় উন্মুক্ত হবে আল্লাহর স্মরণে।

আসুন আমরা এমন দাওয়াতের পরিবেশ গড়ে তুলি, যাতে আমাদের ভালোবাসার পরশে দূরে সরে যাওয়া মানুষেরাও ফিরে আসে প্রতিপালকের পথে, ইসলামের পথে

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

হল সংসদে বিজয়ী হলেন বন কাগজে প্রচারণা চালানো টেকনাফের তামিম

This will close in 6 seconds

দাওয়াতের ভাষা হবে মিষ্টি ও সুন্দর

আপডেট সময় : ০৩:২৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫

দাওয়াত মানে ডাকা বা আহ্বান করা। মানুষকে আল্লাহর পথে ডেকে আনা, দুনিয়ার শান্তি ও আখিরাতের মুক্তির দিকে আহ্বান করাই এর মূল উদ্দেশ্য। এটি কেবল একটি ধারণা নয়; বরং প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব ও কাজ।

যেমন ডাক্তারি বিদ্যা ছাড়া চিকিৎসা করলে রোগীর প্রাণহানি হতে পারে, তেমনি দাওয়াতের জ্ঞান ছাড়া ময়দানে নামলে মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ভরা মজলিশে অশালীন ভাষা ব্যবহার বা কটু কথা বলা দাওয়াতের সঠিক পদ্ধতি নয়। এতে সাধারণ মুসলমান, বিশেষত কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণেরা ইসলাম ও আলেমদের থেকে দূরে সরে যেতে পারেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইসলামবিদ্বেষীরা সরল মুসলমানদের ইমান নিয়ে খেলতে পারে এবং নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে পারে।

‘আপনার প্রভুর পথে দাওয়াত দিন জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সুন্দর নীতিসম্পন্ন উপদেশ দিয়ে। তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো এমনভাবে, যা সবচেয়ে সুন্দর।
সুরা নাহল, আয়াত: ১২৫

নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে কী বলে ইসলাম
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা আমাদের দাওয়াতের পদ্ধতি স্পষ্টভাবে শিখিয়েছেন, ‘আপনার প্রভুর পথে দাওয়াত দিন জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সুন্দর নীতিসম্পন্ন উপদেশ দিয়ে। তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো এমনভাবে, যা সবচেয়ে সুন্দর।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ১২৫)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, দাওয়াত মানে কেবল আহ্বান নয়; বরং শালীন, সদয় ও প্রজ্ঞাপূর্ণ ভাষায় মানুষকে আল্লাহর পথে আনা। ঝগড়া বা কটু ভাষার পরিবর্তে সৌজন্য ও সদাচার দাওয়াতকে কার্যকর করে।

রাসুল (সা.) দাওয়াতের কাজে সর্বদা নম্রতা ও ভালোবাসার পরিচয় দিয়েছেন। কাফের-মুশরিকরা তাঁকে বিদ্রূপ করে ‘রাইনা’ (আমাদের দিকে তাকান) শব্দটির ভিন্ন উচ্চারণ করে (যার অর্থ হতো ‘আমাদের রাখাল’) ডাকত। তবু তিনি কখনো কটু কথা বলেননি; বরং শান্তভাবে ভালোবাসার ভাষায় দাওয়াত চালিয়ে গেছেন।

হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘সহজ করে দাও, কঠিন করো না। সুসংবাদ দাও, ভয় দেখিয়ে মানুষকে দূরে সরিও না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৯; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৭৩৪)

নিজেকে অযোগ্য মনে হলে ইসলাম কী বলে
সহজ করে দাও, কঠিন করো না। সুসংবাদ দাও, ভয় দেখিয়ে মানুষকে দূরে সরিও না।
সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৯
এ হাদিসে দাওয়াত ও শিক্ষা প্রদানের মূলনীতি শেখানো হয়েছে। মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকতে হবে সহজ ও বোধগম্য ভাষায়, যাতে তারা আকৃষ্ট হয়। কঠোরতা, জটিল নিয়ম বা ভয় দেখিয়ে কাউকে দূরে ঠেলে দেওয়া ইসলামের শিক্ষা নয়। ভালোবাসা, দয়া ও আশার বার্তাই সফল দাওয়াতের প্রকৃত পথ।

আমাদের দাওয়াতি মজলিশ হোক ভালোবাসা ও প্রজ্ঞার আলোকধারা, যেখানে ছড়িয়ে পড়বে সহনশীলতা ও সৌজন্য, হিংসা-বিদ্বেষের কোনো ছাপ থাকবে না। কোমল ও মমতাভরা আহ্বানে মানুষ আকৃষ্ট হবে, হৃদয় উন্মুক্ত হবে আল্লাহর স্মরণে।

আসুন আমরা এমন দাওয়াতের পরিবেশ গড়ে তুলি, যাতে আমাদের ভালোবাসার পরশে দূরে সরে যাওয়া মানুষেরাও ফিরে আসে প্রতিপালকের পথে, ইসলামের পথে