ভালোবাসার সপ্তাহের চতুর্থ দিনটি হচ্ছে টেডি ডে। প্রেমিক-প্রেমিকা বা কাপলরা একে অন্যকে টেডি বিয়ার উপহার দেন। তবে কখনো কি মনে হয়েছে আপনার যে, কেন টেডি বিয়ার পুতুলের জন্য ভালোবাসা দিবসে একটা দিন রাখা হলো, অন্য কোনো পুতুল নয় কেন?
টেডি ডে’র সঙ্গে অনেকটাই জড়িয়ে আছে টেডির গল্প। টেডি উপহার হিসেবে খুব বেশি দিন বিখ্যাত হয়নি। গত শতক থেকে এটি উপহার হিসেবে জনপ্রিয় হয়। কিন্তু তার পেছনে আছে এক গল্প। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেই গল্পের নায়ক।
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ শতকের গোড়ার দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট একবার শিকারে যান। তখন রুজভেল্টের সহকারীরা একটি কালো ভালুক ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে দেয়। সেটিকে গুলি করার জন্য সঙ্গীরা পরামর্শ দেন প্রেসিডেন্টকে। তবে রুজভেল্ট বিষয়টিকে একেবারেই পছন্দ করেননি।
ভাল্লুককে দেখে মত বদলে ফেলেন তিনি। এরপর ভাল্লুকটিকে ছেড়ে দেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি। থিওডোরের এই ঘটনার কথা সঙ্গে সঙ্গে রটে যায়। একজন রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট ক্লিফোর্ড বেরিম্যান রুজভেল্টের এ ঘটনাটি সংবাদপত্রে পড়েন। তিনি ওই ঘটনার একটি ব্যঙ্গচিত্র আঁকেন। বেরিম্যানের কার্টুনটি ওয়াশিংটন পোস্টে ১৬ নভেম্বর ১৯০২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
এরপর ব্যবসায়ী মরিস মিচটম ও তার স্ত্রী রোজ ভালুকের মতো একটি খেলনা তৈরি করেন এ ব্যঙ্গচিত্র দেখে। আর সেটি রাষ্ট্রপতির জন্য উৎসর্গ করেন। তারা এটিকে ‘টেডির বিয়ার’ হিসেবে তখন নামকরণ করেন।
রুজভেল্টের নাম ব্যবহারের যখন অনুমতি পান মিচটম; তখন টেডি বিয়ার প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এদিকে ব্যবসায়ে লাভবান হয়ে রাশিয়ান ব্যবসায়ী মিচটম শিগগির আইডিয়াল টয় সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যা মিচটমের মৃত্যুর পরে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম পুতুল তৈরির প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
টেডির চেহারার মধ্যে আছে এক নিষ্পাপ আদুরে ভাব। যে কারণে ব্যক্তিগত সম্পর্কে জায়গা করে নিল উপহার। কিশোরী, তরুণীদের মধ্যে টেডি প্রেম অচিরে বাড়তে থাকে। আর সেই থেকে প্রেমের একটি মিষ্টি উপহার টেডি। টেডি ডে’র সেই উপহারের জন্য বরাদ্দ একটি দিন। এদিন চাইলে সঙ্গী রং-বেরঙের টেডি উপহার দিতে পারেন।