বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
রোববার রাত ৩টায় নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী এ অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোনথা’। এটি থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম, যার অর্থ সুন্দর বা সুবাসিত ফুল।
আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করবে।
মোনথা সরাসরি বাংলাদেশ আঘাত না হানলেও কয়েকদিন বৃষ্টি প্রবণতা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়বে না। স্থলভাগ অতিক্রম করার পর বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ বেশ কিছু অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে।”
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোনথা’ দক্ষিণপশ্চিম ও দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। রোববার রাত ৩টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ছিল ৬২ কিলোমিটার; যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।
আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যান্য এলাকায় আকাশ আংশিক মেঘলা এবং আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত ১২টায় ‘মোনথা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এটি মঙ্গলবার সন্ধ্যা বা রাতে আঘাত হানতে পারে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে। তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
সাগরে কোনো ঘূর্ণিবায়ুর চক্র তৈরি হলে এবং এর কেন্দ্রের কাছে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৬২ কিলোমিটারের বেশি হলে তখন তাকে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
শক্তির বিচারে ঘূর্ণিঝড়কে চারটি মাত্রায় ভাগ করেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার হলে তাকে ‘ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়।
বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৮৯-১১৭ কিলোমিটার হলে তাকে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়।
বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১১৮-২১৯ কিলোমিটার হলে তাকে ‘হারিকেনের গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়।
বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার হলে তাকে সুপার সাইক্লোন বা অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়।
সর্বশেষ চলতি সমাসের শুরুতে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’। সে ঝড়ের তেমন কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়েনি।
সূত্র :বিডিনিউজ
টিটিএন ডেস্ক : 
























