ঢাকা ১২:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ভালো কিছু শুরুর আশা পঁচিশের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে আসা পর্যটকদের স্বামীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত খালেদা জিয়া জনজোয়ারে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ঢাকায় পাকিস্তানের স্পিকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জনতার ঢল সংসদ ভবনের পথে খালেদা জিয়ার মরদেহ কক্সবাজারে খালেদা জিয়ার শেষ সফর ছিলো ২০১৭ সালে থার্টি ফার্স্টে লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম হবে: মানতে হবে পুলিশী নির্দেশনা, বার বন্ধ থাকবে শোক পালন: সাগরতীরের তারকা হোটেলগুলোতে থার্টি-ফার্স্টের আয়োজন বাতিল চকরিয়ায় যুবদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যা রুমিন ফারহানা-নীরবসহ ৮ জনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার থার্টি ফার্স্ট নাইট:জেলা পুলিশের কঠোর বিধি-নিষেধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে যৌথ অভিযান কোস্টগার্ডের

কক্সবাজারের বাঁকখালী: “জায়গা যদি নদীর হয়, আমাদের থেকে খাজনা নিলো কেনো?”

“এগুলো তো উচ্ছেদ না। উচ্ছেদের নামে আমাদেরকে গলা টিপে পিষে ওরা মেরে ফেলতে চাচ্ছে। জায়গাটা যদি নদী থাকে তাহলে সরকার আমাদের কাছ থেকে প্রতি বছর খাজনা নিয়েছে কেন?” এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন সীমা রাণী দাশ। তিনি কক্সবাজার শহরের বাঁকখালীর পাড়ে নতুন গড়ে উঠা উকিল পাড়ার বাসিন্দা।

বাঁকখালী জমি উদ্ধারের নামে খতিয়ানভুক্ত জমি হতে কস্তুরাঘাট উকিলপাড়া উচ্ছেদ না করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাটির বাসিন্দারা।

রোববার সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত ওই মানববন্ধনে সীমা রাণি বলেন, “আমাদেরকে উচ্ছেদ করতে হলে সরকার ওখানে থাকার অনুমতি দিয়েছিল কেন? যদি সরকার অনুমতি না দিত তাহলে তো আমরা আমাদের সর্বোচ্চ টাকা দিয়ে জায়গাটা কিনতাম না।

“আমরা চেয়েছিলাম একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই, কিন্তু সরকার সেই মাথার ওপর বুল ডোজার চালাতে চায়। সরকারের যদি লাগে তাহলে আমরা জায়গাটি দিয়ে দিতে রাজি আছি। তবে এই জায়গাটি অধিগ্রহণ করে নিতে হবে” – বলেন সীমা।

নিজেদের ভুক্তভোগী দাবী করা মানববন্ধনে আসা উচ্ছেদ আতংকে থাকা এসব বাসিন্দারা বলেন, বর্তমানে দেশে তো আইন বলতে কিছুই নেই। সরকার আবার লুকোচুরি করাও শুরু করে দিয়েছে। যেখানে এফিলিয়েট ডিভিশনের প্রধান বিচারপতির নিষেধাজ্ঞা আছে, সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কোন কারণে, কি স্বার্থে তারা আমাদের ব্যাক্তিমালিকানাধীন জায়গা ভাংচুর করতে চাচ্ছে?

এলাকাবাসীদের একজন বলেন, আমাদেরকে অবগত না করে চোরের মতো তারা দ্বিতীয়বার কেন ভাংচুর করতে চাচ্ছে। প্রথমবার উচ্ছেদের পর তো আমরা আবার যাই নাই। প্রশাসন থেকে আমাদেরকে বলা হয়েছিল আপনাদের জায়গায় আপনারা ফিরে যান। আমরা তো জোর করে সেখানে যাইনি। আমাদেরকে প্রশাসন পাঠিয়ে খতিয়ানও করে দিয়েছে, খাজনা নিয়েছে। তাহলে আমরা অবৈধ হলাম কোন দিক দিয়ে।

প্রতিবাদী সাদা কাফন পড়ে এসে এক নারী বলেন, “আমরা সাদা কাফন পড়ে বের হয়েছি। প্রয়োজনে মরে যাবো,তবুও আমাদের জায়গা ছাড়বো না। যদি আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙ্গতে হয় তাহলে তা আমাদের রক্তের ওপর ভাঙ্গতে হবে।”

ফের প্রতিবাদ যেকারণে –
শনিবার সকালে বাঁকখালী নদী পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন।

এসময় নৌ উপদেষ্টা বলেন, “হাইকোর্টের একটি রায়ের অপেক্ষায় আছি। যার প্রেক্ষিতে বাঁকখালী নদী ও তীরবর্তী স্থাপনা বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে রায়টি বিএস নাকি আরএস জরিপ অনুযায়ী কার্যকর হবে, সেটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “গতবার এসে দেখেছি নদীতীরে কিছু সরকারি রাস্তা ও স্থাপনা রয়েছে। যদি আরএস জরিপ হয় তাহলে রাস্তা চলে যেতে পারে, আর বিএস হলে দেখা যাবে রাস্তা টিকে আছে।”

এরপর গত কয়েকবছরের ব্যবধানে গড়ে উঠা নদীর তীর এলাকার উকিল পাড়ার বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হন এবং রোববার সকালে মানববন্ধন করেন।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

This will close in 6 seconds

কক্সবাজারের বাঁকখালী: “জায়গা যদি নদীর হয়, আমাদের থেকে খাজনা নিলো কেনো?”

আপডেট সময় : ০৫:১৯:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

“এগুলো তো উচ্ছেদ না। উচ্ছেদের নামে আমাদেরকে গলা টিপে পিষে ওরা মেরে ফেলতে চাচ্ছে। জায়গাটা যদি নদী থাকে তাহলে সরকার আমাদের কাছ থেকে প্রতি বছর খাজনা নিয়েছে কেন?” এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন সীমা রাণী দাশ। তিনি কক্সবাজার শহরের বাঁকখালীর পাড়ে নতুন গড়ে উঠা উকিল পাড়ার বাসিন্দা।

বাঁকখালী জমি উদ্ধারের নামে খতিয়ানভুক্ত জমি হতে কস্তুরাঘাট উকিলপাড়া উচ্ছেদ না করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাটির বাসিন্দারা।

রোববার সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত ওই মানববন্ধনে সীমা রাণি বলেন, “আমাদেরকে উচ্ছেদ করতে হলে সরকার ওখানে থাকার অনুমতি দিয়েছিল কেন? যদি সরকার অনুমতি না দিত তাহলে তো আমরা আমাদের সর্বোচ্চ টাকা দিয়ে জায়গাটা কিনতাম না।

“আমরা চেয়েছিলাম একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই, কিন্তু সরকার সেই মাথার ওপর বুল ডোজার চালাতে চায়। সরকারের যদি লাগে তাহলে আমরা জায়গাটি দিয়ে দিতে রাজি আছি। তবে এই জায়গাটি অধিগ্রহণ করে নিতে হবে” – বলেন সীমা।

নিজেদের ভুক্তভোগী দাবী করা মানববন্ধনে আসা উচ্ছেদ আতংকে থাকা এসব বাসিন্দারা বলেন, বর্তমানে দেশে তো আইন বলতে কিছুই নেই। সরকার আবার লুকোচুরি করাও শুরু করে দিয়েছে। যেখানে এফিলিয়েট ডিভিশনের প্রধান বিচারপতির নিষেধাজ্ঞা আছে, সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কোন কারণে, কি স্বার্থে তারা আমাদের ব্যাক্তিমালিকানাধীন জায়গা ভাংচুর করতে চাচ্ছে?

এলাকাবাসীদের একজন বলেন, আমাদেরকে অবগত না করে চোরের মতো তারা দ্বিতীয়বার কেন ভাংচুর করতে চাচ্ছে। প্রথমবার উচ্ছেদের পর তো আমরা আবার যাই নাই। প্রশাসন থেকে আমাদেরকে বলা হয়েছিল আপনাদের জায়গায় আপনারা ফিরে যান। আমরা তো জোর করে সেখানে যাইনি। আমাদেরকে প্রশাসন পাঠিয়ে খতিয়ানও করে দিয়েছে, খাজনা নিয়েছে। তাহলে আমরা অবৈধ হলাম কোন দিক দিয়ে।

প্রতিবাদী সাদা কাফন পড়ে এসে এক নারী বলেন, “আমরা সাদা কাফন পড়ে বের হয়েছি। প্রয়োজনে মরে যাবো,তবুও আমাদের জায়গা ছাড়বো না। যদি আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙ্গতে হয় তাহলে তা আমাদের রক্তের ওপর ভাঙ্গতে হবে।”

ফের প্রতিবাদ যেকারণে –
শনিবার সকালে বাঁকখালী নদী পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন।

এসময় নৌ উপদেষ্টা বলেন, “হাইকোর্টের একটি রায়ের অপেক্ষায় আছি। যার প্রেক্ষিতে বাঁকখালী নদী ও তীরবর্তী স্থাপনা বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে রায়টি বিএস নাকি আরএস জরিপ অনুযায়ী কার্যকর হবে, সেটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “গতবার এসে দেখেছি নদীতীরে কিছু সরকারি রাস্তা ও স্থাপনা রয়েছে। যদি আরএস জরিপ হয় তাহলে রাস্তা চলে যেতে পারে, আর বিএস হলে দেখা যাবে রাস্তা টিকে আছে।”

এরপর গত কয়েকবছরের ব্যবধানে গড়ে উঠা নদীর তীর এলাকার উকিল পাড়ার বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হন এবং রোববার সকালে মানববন্ধন করেন।