ঢাকা ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সীমান্তে ফের মাইন বিস্ফোরণ, মিয়ানমার নাগরিক নিহত- বাংলাদেশি আহত চকরিয়া হারবাং ইউনিয়ন ছাত্রদলের আংশিক কমিটি গঠিত তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে সাঁতার প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন ৬ বছরে ২৫ হত্যাকান্ড: বদরখালীতে পুলিশ ফাঁড়ি পুনঃস্থাপনের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন উখিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে অস্ত্র ও মাদক কারবারি এনায়েত উল্লাহ আটক চার পিস ইয়াবা ধরতে উখিয়ার ওসির ‘আলোচিত অভিযান’ দোকান মালিক সমিতি ফেডারেশনের আজীবন সদস্য পদ থেকে মাহাবুবুর রহমান চৌধুরীর পদত্যাগ টিটিএন পরিবারের শোক: সাংবাদিক আনসার হোসেনের সহধর্মিণী আর নেই একনজরে চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন দোকান মালিক সমিতির সদস্য জিল্লু ও জাহেদের পদ বাতিল ঈদগাঁওতে দেশীয় অস্ত্রসহ সিএনজি চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ অনলাইনে জামিননামা গ্রহণ শুরু হচ্ছে কাল, এক ক্লিকে পৌঁছে যাবে জেলখানায়: আইন উপদেষ্টা মেক্সিকোয় ভারি বৃষ্টি, বন্যায় ৬৪ মৃত্যু; নিখোঁজ ৬৫ হঠাৎ মার্কিন দূতাবাসে নিরাপত্তা জোরদার ঈদগাঁওয়ের ইউএনও বিমল চাকমার বিরুদ্ধে মামলা, ২ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ

রামুতে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামীর সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার সখ্যতার অভিযোগ

কক্সবাজারের রামুতে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধেই ‘ভুয়া’ চাঁদাবাজি মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রামু থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে।

শনিবার (১১ অক্টোবর) ভুক্তভোগী জিটু বড়ুয়া এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়, গত ২৪ জুন রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাজারীকুল গ্রামের খোকন বড়ুয়ার নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী জিটু বড়ুয়া ও তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। দুই দিন পর জিটু রামু থানায় খোকন বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

তবে সাড়ে তিন মাস পার হলেও পরোয়ানাভুক্ত প্রধান আসামি খোকন বড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। বরং তিনি উল্টো ৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে জিটু বড়ুয়াদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি পাল্টা মামলা করেন। দুটি মামলারই তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই কামাল হোসেন।

জিটু বড়ুয়ার অভিযোগ, চাঁদাবাজি মামলায় অনুকূল প্রতিবেদন দিতে তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন এসআই কামাল। ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তিনি তড়িঘড়ি করে খোকন বড়ুয়ার মামলায় ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধেই ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।

জিটুর বাবা শিবু বড়ুয়া বলেন, “যে খোকন বড়ুয়া আমাদের উপর হামলা করে পরোয়ানাভুক্ত আসামি হয়েছেন, তাকে আটক না করে এসআই কামাল উল্টো ঘুষ খেয়ে তার পক্ষেই প্রতিবেদন দিয়েছেন।”

ঘটনার প্রতিবাদে গত ১১ জুলাই রামু থানার সামনে মানববন্ধন করে হাজারীকুল, সিপাহীপাড়া ও নাথপাড়ার বাসিন্দারা। স্থানীয়রা জানান, হামলার পেছনে ছিল জমি বিরোধ; চাঁদা দাবি বা চাঁদাবাজির অভিযোগ ছিল ‘পুরোপুরি সাজানো নাটক’।

অভিযুক্ত এসআই কামাল হোসেন অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “দুটি মামলারই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।” তবে কেন প্রধান আসামি খোকন বড়ুয়াকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওই মামলায় পরোয়ানা জারি আছে, তবে বিষয়টি আগে জানতাম না।”

রামু থানার ওসি আরিফ হোসাইন বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রামু থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ফরিদ বলেন, “ঘটনাটি আসলেই দুঃখজনক। এসআই কামাল চাইলে এমন প্রতিবেদন না দিলেও পারতেন।”

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন শাহীন জানান, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।”

এর আগে একই থানার সাবেক এসআই চিরঞ্জীব বড়ুয়ার বিরুদ্ধেও ঘুষ দাবি সংক্রান্ত একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তাকে প্রত্যাহার করা হয়।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

সীমান্তে ফের মাইন বিস্ফোরণ, মিয়ানমার নাগরিক নিহত- বাংলাদেশি আহত

This will close in 6 seconds

রামুতে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামীর সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার সখ্যতার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

কক্সবাজারের রামুতে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধেই ‘ভুয়া’ চাঁদাবাজি মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রামু থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে।

শনিবার (১১ অক্টোবর) ভুক্তভোগী জিটু বড়ুয়া এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়, গত ২৪ জুন রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাজারীকুল গ্রামের খোকন বড়ুয়ার নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী জিটু বড়ুয়া ও তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। দুই দিন পর জিটু রামু থানায় খোকন বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

তবে সাড়ে তিন মাস পার হলেও পরোয়ানাভুক্ত প্রধান আসামি খোকন বড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। বরং তিনি উল্টো ৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে জিটু বড়ুয়াদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি পাল্টা মামলা করেন। দুটি মামলারই তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই কামাল হোসেন।

জিটু বড়ুয়ার অভিযোগ, চাঁদাবাজি মামলায় অনুকূল প্রতিবেদন দিতে তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন এসআই কামাল। ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তিনি তড়িঘড়ি করে খোকন বড়ুয়ার মামলায় ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধেই ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।

জিটুর বাবা শিবু বড়ুয়া বলেন, “যে খোকন বড়ুয়া আমাদের উপর হামলা করে পরোয়ানাভুক্ত আসামি হয়েছেন, তাকে আটক না করে এসআই কামাল উল্টো ঘুষ খেয়ে তার পক্ষেই প্রতিবেদন দিয়েছেন।”

ঘটনার প্রতিবাদে গত ১১ জুলাই রামু থানার সামনে মানববন্ধন করে হাজারীকুল, সিপাহীপাড়া ও নাথপাড়ার বাসিন্দারা। স্থানীয়রা জানান, হামলার পেছনে ছিল জমি বিরোধ; চাঁদা দাবি বা চাঁদাবাজির অভিযোগ ছিল ‘পুরোপুরি সাজানো নাটক’।

অভিযুক্ত এসআই কামাল হোসেন অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “দুটি মামলারই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।” তবে কেন প্রধান আসামি খোকন বড়ুয়াকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওই মামলায় পরোয়ানা জারি আছে, তবে বিষয়টি আগে জানতাম না।”

রামু থানার ওসি আরিফ হোসাইন বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রামু থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ফরিদ বলেন, “ঘটনাটি আসলেই দুঃখজনক। এসআই কামাল চাইলে এমন প্রতিবেদন না দিলেও পারতেন।”

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন শাহীন জানান, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।”

এর আগে একই থানার সাবেক এসআই চিরঞ্জীব বড়ুয়ার বিরুদ্ধেও ঘুষ দাবি সংক্রান্ত একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তাকে প্রত্যাহার করা হয়।