ঢাকা ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বাবলু চেয়ারম্যান, রানিম আহবায়ক: ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদ গঠিত কক্সবাজারে কোন ‘মাসুদ’ কে ভালো হতে বললেন তাহেরি! যুবদের কর্মমুখী হতে হবে -যুব কল্যাণ অনুদানের চেক বিতরণকালে জেলা প্রশাসক টৈটংয়ে খালার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে প্রাণ গেলো দুই ভাই-বোনের মহেশখালীতে অস্ত্রসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি আটক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন’স অ্যাওয়ার্ড পেলেন তাশরিফা ফাইরুজ মনোনয়নপত্র বিতরণ কাল; উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের নির্বাচন ৮ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির ভারত না দক্ষিণ আফ্রিকা, কে হবে নতুন চ্যাম্পিয়ন? ‘নৌকা’ উপহার পেয়ে বিপাকে উপদেষ্টা, ফেসবুকে চাইলেন পরামর্শ সারাদেশে আজ যেমন থাকবে আবহাওয়া গাইবান্ধায় গরু চোর সন্দেহে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা মিয়ানমারে পাচারকালে ১৫’শ বস্তা সিমেন্টসহ আটক ১১: দুটি বোট জব্দ চবি ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হলেন রামুর শাহজালাল শাহীন নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে এবার ১৩ ভরি স্বর্ণ ও ১০ ভরি রুপা উদ্ধার

“ম্যাম, আমরা আপনার অপসারণ চাই…”

  • আফজারা রিয়া
  • আপডেট সময় : ১২:২৯:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
  • 3670

দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার পৌরসভায় নাগরিক হয়রানি, অবৈধ লাইসেন্স প্রদান ও টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে পৌরবাসী। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) পৌরসভা চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে।

সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা পৌর প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে প্রশাসক আন্দোলনকারীদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তারা কি চায়। এর উত্তরে সংগঠক এসএস সাগর জবাব দিয়েছিলেন, “ম্যাম আমরা আপনার অপসারণ চাই”।

যা সাগর নিজের ফেইসবুকে স্ট্যাটাস আকারে দিয়েছেন। এরপর তা নিয়ে চলে আলোচনা।

টিটিএন সাগরের কাছে জানতে চায় তার এমন জবাব শোনার পর প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজ কি বলেছিলেন? সাগর জানান তার এমন উত্তরে প্রশাসক কিছুটা সময় চুপ হয়ে যান, তারপর বলেন, “আমার অপসারণের দাবি থাকলে সেটা ডিসি স্যার সিদ্ধান্ত নিবেন”।

এরপর আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে পৌরসভার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে নানা অভিযোগ তুলে ধরা হয় প্রশাসকের কাছে। এসময় আন্দোলনকারীদের নানান প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

কক্সবাজার পৌরসভায় নাগরিক সেবা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নত হয়েছে জানিয়ে পৌর প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজ আন্দোলনকারীদের বলেন, যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সন্দেহজনক মনে হয়েছে, তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভায় চলমান সিন্ডিকেটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পৌরসভা সহায়ক কমিটি’ নামে একটি কমিটি এবিষয়ে কাজ করছে।

টমটমের লাইসেন্সের বিষয় যুক্তিতর্ক হয় আন্দোলনকারী ও প্রশাসকের মধ্যে। এসময় আন্দোলনের সংগঠক সাগর টমটম লাইসেন্স ইস্যুকে বিশৃঙ্খলার একটি বড় কারণ বলে সেখানে তুলে ধরেন।

প্রশ্ন করা হয়, “পৌর শহরে আগে থেকেই প্রায় তিন হাজার টমটম লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এরপরও যানজট বেড়েই চলেছে। তাহলে নতুন করে লাইসেন্স দেওয়ার যৌক্তিকতা কী?”

এর উত্তরে পৌর প্রশাসক জানান, “বিভিন্ন কমিটি ও বৈঠক থেকে এই সিদ্ধান্ত এসেছে। তবে শহরে বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনায় নতুন লাইসেন্স প্রদান আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে”।

এ প্রসঙ্গে সাগর জানান, “যদি পৌর শহর অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত হয়, তাহলে নিয়ম মেনে লাইসেন্স দেওয়া হোক। আর যদি না হয়, তাহলে শুধু স্থগিত নয়, এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।”

প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজ জানান, এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে কক্সবাজার পৌর প্রশাসককে অপসারণের দাবিতে ডিসিকে স্মারকলিপিও দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। জেলা প্রশাসক এসময় আশ্বস্ত করেন, তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

পৌরবাসীর পক্ষ থেকে আন্দোলনের সংগঠক সাগর জানান, “আমাদের পক্ষ থেকে দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে আরও তীব্র আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।”

গত বছরের ৫ অগাস্ট গণ অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার ১১ দিনের মাথায় ১৯ আগস্ট দেশের সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করা হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর অপসারণ করা হয় কাউন্সিলরদের।

এরপর সবখানেই প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।

রুবাইয়া আফরোজ কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে আছেন কক্সবাজার পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির নির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলরদের বেশিরভাগই প্রকাশ্যে নেই। তাদের অনেকেই বিভিন্ন মামলার আসামি হয়েছেন।

ট্যাগ :

বাবলু চেয়ারম্যান, রানিম আহবায়ক: ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদ গঠিত

This will close in 6 seconds

“ম্যাম, আমরা আপনার অপসারণ চাই…”

আপডেট সময় : ১২:২৯:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার পৌরসভায় নাগরিক হয়রানি, অবৈধ লাইসেন্স প্রদান ও টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে পৌরবাসী। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) পৌরসভা চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে।

সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা পৌর প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে প্রশাসক আন্দোলনকারীদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তারা কি চায়। এর উত্তরে সংগঠক এসএস সাগর জবাব দিয়েছিলেন, “ম্যাম আমরা আপনার অপসারণ চাই”।

যা সাগর নিজের ফেইসবুকে স্ট্যাটাস আকারে দিয়েছেন। এরপর তা নিয়ে চলে আলোচনা।

টিটিএন সাগরের কাছে জানতে চায় তার এমন জবাব শোনার পর প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজ কি বলেছিলেন? সাগর জানান তার এমন উত্তরে প্রশাসক কিছুটা সময় চুপ হয়ে যান, তারপর বলেন, “আমার অপসারণের দাবি থাকলে সেটা ডিসি স্যার সিদ্ধান্ত নিবেন”।

এরপর আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে পৌরসভার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে নানা অভিযোগ তুলে ধরা হয় প্রশাসকের কাছে। এসময় আন্দোলনকারীদের নানান প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

কক্সবাজার পৌরসভায় নাগরিক সেবা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নত হয়েছে জানিয়ে পৌর প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজ আন্দোলনকারীদের বলেন, যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সন্দেহজনক মনে হয়েছে, তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভায় চলমান সিন্ডিকেটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পৌরসভা সহায়ক কমিটি’ নামে একটি কমিটি এবিষয়ে কাজ করছে।

টমটমের লাইসেন্সের বিষয় যুক্তিতর্ক হয় আন্দোলনকারী ও প্রশাসকের মধ্যে। এসময় আন্দোলনের সংগঠক সাগর টমটম লাইসেন্স ইস্যুকে বিশৃঙ্খলার একটি বড় কারণ বলে সেখানে তুলে ধরেন।

প্রশ্ন করা হয়, “পৌর শহরে আগে থেকেই প্রায় তিন হাজার টমটম লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এরপরও যানজট বেড়েই চলেছে। তাহলে নতুন করে লাইসেন্স দেওয়ার যৌক্তিকতা কী?”

এর উত্তরে পৌর প্রশাসক জানান, “বিভিন্ন কমিটি ও বৈঠক থেকে এই সিদ্ধান্ত এসেছে। তবে শহরে বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনায় নতুন লাইসেন্স প্রদান আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে”।

এ প্রসঙ্গে সাগর জানান, “যদি পৌর শহর অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত হয়, তাহলে নিয়ম মেনে লাইসেন্স দেওয়া হোক। আর যদি না হয়, তাহলে শুধু স্থগিত নয়, এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।”

প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজ জানান, এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে কক্সবাজার পৌর প্রশাসককে অপসারণের দাবিতে ডিসিকে স্মারকলিপিও দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। জেলা প্রশাসক এসময় আশ্বস্ত করেন, তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

পৌরবাসীর পক্ষ থেকে আন্দোলনের সংগঠক সাগর জানান, “আমাদের পক্ষ থেকে দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে আরও তীব্র আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।”

গত বছরের ৫ অগাস্ট গণ অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার ১১ দিনের মাথায় ১৯ আগস্ট দেশের সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করা হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর অপসারণ করা হয় কাউন্সিলরদের।

এরপর সবখানেই প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।

রুবাইয়া আফরোজ কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে আছেন কক্সবাজার পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির নির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলরদের বেশিরভাগই প্রকাশ্যে নেই। তাদের অনেকেই বিভিন্ন মামলার আসামি হয়েছেন।