কক্সবাজার-০৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি এই নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।
তিনি বুধবার রাতে কক্সবাজারে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময়কালে এই ঘোষণা দেন। তবে তিনি জানান, ধানের শীষ প্রতীক পেলেই কেবল তিনি প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। স্বতন্ত্র কিংবা অন্য কোন দল থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি আমার দল। বিএনপির প্রতিই আমার আস্থা ও বিশ্বাস। দলের প্রতি আমার বিশ্বস্থতা একটুও নড়চড় হবে না।
কক্সবাজার শহরের গোলদীঘির পাড় এলাকায় তাঁর নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল। এতে সাংবাদিকদের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদের দেখা যায়।
ইঞ্জিনিয়ার সহিদ্জ্জুামান বলেন, সদর-রামু-ঈদগাঁওয়ের মানুষের আমার উপর আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। আমি কখনও তাদের কাছে অবিশ্বস্থ ছিলাম না। যদিও একটি পক্ষ সবসময় আমার পেছনে লেগেছিল।
তিনি বলেন, আমি সংস্কারপন্থীদের একজন ছিলাম এটা সত্য। হয়তো ওই সময়ে সেটা আমার ভুল ছিল। সেই হিসেবে অনেক বড় বড় নেতারাও সে সময় ভুল করেছিলেন। বিএনপিতে যারা প্রকৃত অর্থে সংস্কারপন্থী ছিলেন তাঁরা এখন দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেখানে আমাকেই কেন বারবার সংস্কারপন্থী সংস্কারপন্থী বলে তিরস্কৃত হতে হবে।
মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান আরও বলেন, বিএনপিতে এখন সংস্কারপন্থী বলে কিছু নেই। সবাই এক নেতা, এক আদর্শে বিশ্বাসী। আমিও বিএনপির বিশ্বাস থেকে কখনও দূরে থাকিনি।
তিনি বলেন, আমি কখনোই বিএনপি থেকে বহিস্কৃত ছিলাম না। আমার সদস্য পদও কখনো বাতিল করা হয়নি। আমি সবসময় বিএনপিতেই ছিলাম, বিএনপিতেই আছি। যদিও একটি পক্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বারবার আমার বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়েছে।
তাঁর ভাষ্য মতে, সবার একটা বিষয় জেনে রাখা দরকার- কোন এক সময় সংস্কারপন্থী বলে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আমাকে দল থেকে বহিস্কার করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু দল জেলা বিএনপির সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করেনি। বিএনপি আমাকে কখনও বহিস্কার করেনি, কখনও আমার সদস্য পদও বাতিল করেনি।
তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি ১৭ বছর ধরে রাজনীতি থেকে দূরে ছিলাম-এটা সত্য নয়। আমি সবসময় বিএনপির সাথেই ছিলাম। কিন্তু এই সময়ে তেমন ভাবে দলীয় কার্যক্রমে আমাকে সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ দেয়া হয়নি। আমি আমার মতো করে এলাকায় বিএনপির রাজনীতি করেছি। সাধারণ মানুষের সাথে ছিলাম। সামাজিক ভাবে, অর্থনৈতিক ভাবে আমি সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলাম।
তাঁর মতে, ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার আমার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থা লাগিয়ে রেখেছিল। আমি যেন বিএনপির সাথে কাজ করতে না পারি সে জন্য আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল। কিন্তু আমি কখনও দলীয় আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি।
ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান বলেন, আমার রাজনীতি হলো সাধারণ মানুষের সাথে। আমি তাদের ভালোবাসি, তারাও আমাকে ভালোবাসে। এই ভালোবাসা অনেকের সহ্য হয় না। তাই আমার গণসংযোগ, আমার দলীয় কার্যক্রমে নানা ভাবে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু আমি বিএনপির রাজনীতি করেই যাবো।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আমি ধানের শীষের মনোনয়ন চাইবো। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, সবাইকে সাথে নিয়ে জেতার জন্য কাজ করে যাবো। আর যদি দল অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়, আমি সবাইকে সাথে নিয়ে তাঁর জন্য কাজ করে যাবো। এখানে অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই। স্বতন্ত্র কিংবা অন্য কোন দলের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা আমার নেই।
এসময় বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আখতারুল আলম, কক্সবাজার পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস্তাফিজুর রহমান, রামু উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ সিকদার চেয়ারম্যান, বিএনপি নেতা এডভোকেট এস্তেফাজুর রহমান, জেলা বিএনপি নেতা শওকত আলম শওকত, ভারুয়াখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল হক, বিএনপি নেতা জানে আলম প্রমূখ।