একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, ৪ কোটি ৬০ লাখ রুপিতেই বুঝি ফয়সালা হয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছুক্ষণ কোনো পক্ষ থেকেই আর বাড়তি আগ্রহ দেখা যায়নি। নিলামকক্ষে তখন চাপা উত্তেজনা—হাতুড়ি পড়তে আর সামান্যই বাকি। কিন্তু ঠিক সেই শেষ মুহূর্তে নতুন করে জমে উঠল লড়াই। একের পর এক বিডে তরতরিয়ে বাড়তে থাকল মুস্তাফিজুর রহমানের পারিশ্রমিক। শেষ পর্যন্ত ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে গিয়ে থামল সেই দৌড়। আইপিএলের নিলামের টেবিলে কার্যত ঝড় তুলে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই বাঁহাতি পেসারকে দলে ভিড়াল কলকাতা নাইট রাইডার্স।
এই পারিশ্রমিকের মাধ্যমে আইপিএলের ইতিহাসে বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের জন্য সর্বোচ্চ মূল্য পাওয়ার রেকর্ড গড়লেন মুস্তাফিজ। আগের রেকর্ডটিও ছিল তার নিজেরই। গত আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালস তাকে ৬ কোটি রুপিতে দলে নিয়েছিল। যদিও সেটি ছিল নিলামের বাইরে বদলি হিসেবে, আর পুরো মৌসুমের জন্যও নয়। তবুও সেই অঙ্কই এতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।
নিলামের টেবিলে সরাসরি বিডের মাধ্যমে এতদিন বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ২০০৯ সালের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স তাকে ৬ লাখ ডলারে দলে নেয়, যা তখনকার বাজারদর অনুযায়ী ৪ কোটি রুপির কিছু বেশি ছিল। দীর্ঘদিন ধরে সেই রেকর্ড অক্ষত ছিল। প্রায় দেড় দশক পর এসে মুস্তাফিজ সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন মাইলফলক গড়লেন।
কলকাতার জন্য মুস্তাফিজের এই অন্তর্ভুক্তি শুধু আর্থিক দিক থেকেই নয়, কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। অভিজ্ঞতা, বৈচিত্র্যময় কাটার আর চাপের মুহূর্তে বল করার সামর্থ্য—সব মিলিয়ে আইপিএলের মতো প্রতিযোগিতায় তার মূল্য যে কতটা, নিলামের শেষ মুহূর্তের এই তুমুল লড়াইই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। একই সঙ্গে এটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্যও একটি বড় অর্জন, যা আন্তর্জাতিক ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে দেশের ক্রিকেটারদের বাজারমূল্য ও গ্রহণযোগ্যতা আরও এক ধাপ ওপরে তুলে ধরল।
টিটিএন ডেস্ক 




















