প্রশাসনকে বিভিন্ন অভিযানে সহযোগিতা করায় চোরা ও মাদক কারবারী এবং অবৈধ ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রামুর গাড়ি চালক পিয়েস বড়ুয়া। সততা ও নিষ্ঠার সাথে সরকারী দায়িত্ব পালন এবং প্রশাসনকে সহযোগিতা করায় তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে মাঠে নেমেছে একটি পক্ষ; এমন অভিযোগ পিয়েস বড়ুয়ার।
গাড়ি চালক পিয়েস বড়ুয়া অভিযোগ করেন, তিনি ২০১১ সালে গাড়ি চালক হিসেবে (চুক্তিভিত্তিক) যোগদান করার পর থেকে স্বল্প বেতনে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। চাকরিকালীন সময়ে তিনি পাহাড় খেকো, অবৈধ বালু ব্যবসায়ী, মাদক পাচারকারীসহ অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করে আসছিলেন। আর এতেই তার জন্য উঠেপড়ে লাগে একটি সুবিধাবাদী পক্ষ ও অবৈধ ব্যবসায়ীসহ চোরাকারবারীরা।
তিনি জানান, গত শনিবার (২২ মার্চ) গণমাধ্যমে রামু এসিল্যান্ডের গাড়ি চালক পিয়েস, দূর্নীতির টাকায় অঢেল সম্পদের মালিক, শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে তার অভূতপূর্ব ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে এই সংবাদটি পরিবেশন করা হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।
এই সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে ভূমি অফিসের গাড়ি চালকের চাকরী করে পিয়েস বড়ুয়া কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল বাড়ির মালিক হয়েছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবী করেন তিনি।
২০২৩ সালের ৬ এপ্রিল কক্সবাজার বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদ সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, মাত্র ৩ শতক পৈত্রিক জমির উপর পিয়েস বড়ুয়াসহ ৩ ভাই ও ১ বোন মিলে ৩ তলা পাকা দালান নির্মাণ করে বসবাস করছেন। ২০১১ সালের প্রথমদিকে এক ভাই ঘর নির্মাণ করে বসবাস করা শুরু করেন। পরবর্তীতে অন্য ভাই ও বোন পর্যায়ক্রমে টাকা যোগাড় করে ঘর নির্মাণ করেন।
প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু ফেসবুক স্ট্যাটাসে বুঝাতে চেয়েছেন যে, জমির পরিমাণ কম হলেও সকল ভাই-বোনেরা সমঝোতার মাধ্যমে ছোট জায়গাতেও পাকা দালান নির্মাণ করতে পারেন। তাতে দোষের কিছু নেই। এতে করে সমাজে পারিবারিক সম্প্রীতিও বৃদ্ধি পায়।
রামু ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার অন্যান্য উপজেলার চেয়ে রামুতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চোখে পড়ার মত। যা সম্ভব হয়েছে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশেদুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ সাজ্জাদ জাহিদ রাতুলের চৌকষ নেতৃত্বে।
রামুতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ সাজ্জাদ জাহিদ রাতুলের নেতৃত্বে পাহাড় খেকো, বালু খেকো, চোরাচালান বিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের জানুয়ারীতে ১১ দিনে ১১টি অভিযানে ২১ জনকে দন্ডাদেশ এবং ৪ লাখ ১৩ হাজার ৫শ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। ফেব্রুয়ারীতে ৮টি অভিযানে দন্ডিত ব্যক্তি ১০ জন এবং ১০টি মামলায় ৬ লক্ষ ১ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করে ভ্রাম্যমান আদালত। চলতি মাসে ৩টি অভিযানে ৪টি মামলায় দন্ডিত ব্যক্তি ৪ জন এবং অর্থদন্ডের পরিমাণ ১ লক্ষ ৮ হাজার টাকা।
বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন ২০০৯, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩, সড়ক পরিবহন আইন- ২০১৮, পণ্যের পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ এর আলোকে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানায় রামু উপজেলা প্রশাসন।