ঢাকা ০৭:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের গোপন ‘গুদামে’ মাদক রাখে কারা? নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন ইমাম হোসেন: দ্রুত গতির মোটরসাইকেল কেড়ে নিলো প্রাণ মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই : প্রেস উইং নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে এবার শূকর ও কুকুরের প্রাণহানি প্রেসক্লাবের ইফতার সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধির একটি মাধ্যম-ইউএনও চকরিয়া আবুল কাসেম বাবুর ২য় মৃত্যু বার্ষিকীতে জেলা খেলাঘরের স্মরণ সভা বিয়ের দু’মাসেই সড়ক দূর্ঘটনায় দম্পতি: স্বামী নিহত স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি উত্তর ধূরুং ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী সভা ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন উখিয়ায় তরুণ সংবাদকর্মীদের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন “মোহাম্মদ জাবেরের সন্ধান চাই” আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলার খেলোয়াড়, ছোট মাঠের না: প্রধান উপদেষ্টা যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ মাদককারবারি আটক এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে হত্যার ৮ ঘন্টার ব্যবধানে তিন সহোদরসহ গ্রেফতার চার পেকুয়ায় সাপের কামড়ে মৃত্যু: ওঝার কাছে যাওয়ায় দেরি হয় হাসপাতালে নিতে

কক্সবাজারে বিমানবাহিনীর সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষ: দুটি মামলা দায়ের, ডিসির এলাকা পরিদর্শন

কক্সবাজারে বিমান ঘাঁটির কাছে বিমান বাহিনী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনার ৭ দিন পর গতকাল সোমবার বিকেলে মামলা করেন সংঘর্ষের সময় নিহত শিহাব কবির নাহিদ এর বাবা মো. নাসির উদ্দীন। তবে সেখানে আসামী হিসেবে কারো নাম বা ‘অজ্ঞাত’ কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।

মামলা করতে বিলম্বের কারন হিসেবে এজাহারে নাসির উদ্দীন লিখেছেন- সন্তান কবর দেয়ার পর শারিরীক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে শয্যাশায়ী ছিলেন।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারী অন্য মামলাটি দায়ের করে বিমান বাহিনী। সেখানে দুজনের নাম উল্লেখ করা হয় আর অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে আরো ৩০০ জনকে। মামলাটি দায়ের করেন বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট মো. জিয়াউল হক।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ইলিয়াস খান মামলার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, “তদন্ত চলছে। এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি”।

নিহত নাহিদের বাবা নাসির উদ্দিন মামলা করতে বিলম্বের কারন হিসেবে এজাহারের ভাষাকে টেনে আনলেও, তিনি বিচার পাওয়া নিয়ে ফের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাসির উদ্দীন বলেন, “এজাহারটা আমার ছেলের জন্য আমার শোকবার্তা, আমার কান্না। কক্সবাজারে এখন এমপি নেই কিন্তু সাবেক এমপি তো আছে, এতোগুলো রাজনৈতিক দল আছে, সিভিল সোসাইটি আছে, নাগরিক সামাজিক সংগঠন আছে, কেউ কি শোকবার্তা দিছে? কেউ কী প্রতিবাদ করলো? তারা আতংকে কিছু করলো না আর আমি তো ব্যক্তি মানুষ! আর আমার ছেলেকে কারা মারছে বুঝতে হবে!”

এখনো ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাননি জানিয়ে তিনি প্রতিবেদন নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন।

এর আগে নাসির উদ্দীন তার সন্তানের হাসপাতাল থেকে দেয়া মৃত্যু সনদ ও পুলিশের করা সুরতাহাল প্রতিবেদনের উপর আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন।

বিমানবাহিনীর করা মামলা নিয়ে স্থানীয়রা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় ভূমি রক্ষা আন্দোলনের দিদারুল ইসলাম রুবেল বলেন,”মামলা ২৭ তারিখ হলেও আমরা আজকে দুপুরে জানতে পেরেছি। এলাকায় আজ ডিসি স্যার এসেছিলেন। তাকেও আমরা বলেছি। রাতে আমাদের মিটিং আছে সেখান থেকে পরবর্তী করণীয় নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে”।

এদিকে আজ দুপুরে সমিতিপাড়া ও কুতুবদিয়া পাড়া পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক সালাউদ্দিন আহমেদ। স্থানীয়দের শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি আজ সেখানে গিয়েছিলাম। স্থানীয়রা সহ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারাও ছিলেন। তেমন কিছু দেখিনি। মামলার বিষয়টি সম্পূর্ণ আইনী প্রক্রিয়া। তারা যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে সেটা বলতে পারে, কিন্তু তেমন কিছু বলেনি”।

গত সপ্তাহে স্থানীয়দের সাথে এক বৈঠকে দুইপক্ষ নিয়ে একসাথে বসার কথা বলেছিলেন জেলা প্রশাসক । এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ” বসার চেয়ে মাঠে বেশি যাওয়া জরুরি। সেখানে একটা কমিটি হয়েছে বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা মিলে। বিমান বাহিনী ও এভিয়েশনের জায়গায় যারা আছেন তারা নিজেরা চিহ্নিত করে নিজেরাই সরে যাবেন বলেছেন, এ ব্যপারে তাদের যা প্রয়োজন তাই করা হবে।”

তবে এ বিষয়টি নিয়ে পূনরায় জানতে চাওয়া হয় স্থানীয়দের কাছে। স্থানীয় দিদারুল ইসলাম রুবেল জানান, সকল স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে কমিটি কাল সকালে ডিসি অফিসে মিটিং হবে।

সরে যাওয়ার বিষয়ে রুবেল বলেন, “আমরা স্পষ্ট বলেছি বিমান বাহিনীর অধিগ্রহণ করা জায়গায় যারা আছেন তাদের যথাযথ স্থায়ী পুনর্বাসন করেই সরাতে হবে।”

 

মামলার এজাহারে যা আছে

নিহত শিহাব কবির নাহিদের বাবা নাছির উদ্দীনের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে আমি চোখের চিকিৎসা করাতে স্ত্রীকে (আমেনা খাতুন) নিয়ে বাড়ি থেকে শহরের কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে যান। দুপুর ১২টার দিকে সেখানে মহিউদ্দিন নামের এক যুবকের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, একমাত্র ছেলে শিহাব কবিরকে বিমানবাহিনীর জনৈক সদস্য গুলি করে হত্যা করেছেন এবং সন্তানের লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পড়ে আছে। খবর শোনার পর তিনি স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ছুটে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানান, পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) করার পর লাশ হস্তান্তর করা হবে। সন্ধ্যা ছয়টায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ হস্তান্তর করে। শিহাব কোনো রাজনীতি কিংবা বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল না। বিমানবাহিনীর সদস্য কিংবা অন্য কারও সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব–সংঘাতও ছিল না।

এজাহারে আরও বলা হয়, ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে বিমানবাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় যুবক জাহেদুল ইসলামকে ঘাঁটিতে নিয়ে নির্যাতন চালান। এ খবরে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং জাহেদুল ইসলামকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। শিহাব কবির রাস্তায় কী ঘটছে দেখার জন্য সমিতিপাড়ার জনৈক নাঈমের বাসার কাছে যান। তখন মাথায় গুলি লেগে গুরুতর আহত হয়। এ সময় বিমানবাহিনীর সদস্যরা শিহাবকে নিয়ে যান। তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে শিহাবকে হাসপাতালে না নিয়ে দেরি করেন, এর ফলে রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়।

বিমানবাহিনীর করা মামলা
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে নাশকতা ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি বিনষ্টের উদ্দেশ্যে বিমানবাহিনীর ঘাঁটির স্পর্শকাতর স্থাপনাগুলোর ওপর দেশি অস্ত্র, ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ অতর্কিতে হামলা করে। দুষ্কৃতকারীরা বিমানবাহিনীর ছয়-সাতটি সিসিটিভি ক্যামেরা, দুটি মোটরসাইকেল, কয়েকটি সরকারি গাড়ি, একটি অফিস ভবন, নির্মাণাধীন দালান ভাঙচুর করে। নির্মাণসামগ্রীও লুটপাট করা হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৬৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের গোপন ‘গুদামে’ মাদক রাখে কারা?

This will close in 6 seconds

কক্সবাজারে বিমানবাহিনীর সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষ: দুটি মামলা দায়ের, ডিসির এলাকা পরিদর্শন

আপডেট সময় : ০৩:১২:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

কক্সবাজারে বিমান ঘাঁটির কাছে বিমান বাহিনী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনার ৭ দিন পর গতকাল সোমবার বিকেলে মামলা করেন সংঘর্ষের সময় নিহত শিহাব কবির নাহিদ এর বাবা মো. নাসির উদ্দীন। তবে সেখানে আসামী হিসেবে কারো নাম বা ‘অজ্ঞাত’ কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।

মামলা করতে বিলম্বের কারন হিসেবে এজাহারে নাসির উদ্দীন লিখেছেন- সন্তান কবর দেয়ার পর শারিরীক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে শয্যাশায়ী ছিলেন।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারী অন্য মামলাটি দায়ের করে বিমান বাহিনী। সেখানে দুজনের নাম উল্লেখ করা হয় আর অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে আরো ৩০০ জনকে। মামলাটি দায়ের করেন বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট মো. জিয়াউল হক।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ইলিয়াস খান মামলার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, “তদন্ত চলছে। এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি”।

নিহত নাহিদের বাবা নাসির উদ্দিন মামলা করতে বিলম্বের কারন হিসেবে এজাহারের ভাষাকে টেনে আনলেও, তিনি বিচার পাওয়া নিয়ে ফের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাসির উদ্দীন বলেন, “এজাহারটা আমার ছেলের জন্য আমার শোকবার্তা, আমার কান্না। কক্সবাজারে এখন এমপি নেই কিন্তু সাবেক এমপি তো আছে, এতোগুলো রাজনৈতিক দল আছে, সিভিল সোসাইটি আছে, নাগরিক সামাজিক সংগঠন আছে, কেউ কি শোকবার্তা দিছে? কেউ কী প্রতিবাদ করলো? তারা আতংকে কিছু করলো না আর আমি তো ব্যক্তি মানুষ! আর আমার ছেলেকে কারা মারছে বুঝতে হবে!”

এখনো ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাননি জানিয়ে তিনি প্রতিবেদন নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন।

এর আগে নাসির উদ্দীন তার সন্তানের হাসপাতাল থেকে দেয়া মৃত্যু সনদ ও পুলিশের করা সুরতাহাল প্রতিবেদনের উপর আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন।

বিমানবাহিনীর করা মামলা নিয়ে স্থানীয়রা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় ভূমি রক্ষা আন্দোলনের দিদারুল ইসলাম রুবেল বলেন,”মামলা ২৭ তারিখ হলেও আমরা আজকে দুপুরে জানতে পেরেছি। এলাকায় আজ ডিসি স্যার এসেছিলেন। তাকেও আমরা বলেছি। রাতে আমাদের মিটিং আছে সেখান থেকে পরবর্তী করণীয় নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে”।

এদিকে আজ দুপুরে সমিতিপাড়া ও কুতুবদিয়া পাড়া পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক সালাউদ্দিন আহমেদ। স্থানীয়দের শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি আজ সেখানে গিয়েছিলাম। স্থানীয়রা সহ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারাও ছিলেন। তেমন কিছু দেখিনি। মামলার বিষয়টি সম্পূর্ণ আইনী প্রক্রিয়া। তারা যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে সেটা বলতে পারে, কিন্তু তেমন কিছু বলেনি”।

গত সপ্তাহে স্থানীয়দের সাথে এক বৈঠকে দুইপক্ষ নিয়ে একসাথে বসার কথা বলেছিলেন জেলা প্রশাসক । এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ” বসার চেয়ে মাঠে বেশি যাওয়া জরুরি। সেখানে একটা কমিটি হয়েছে বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা মিলে। বিমান বাহিনী ও এভিয়েশনের জায়গায় যারা আছেন তারা নিজেরা চিহ্নিত করে নিজেরাই সরে যাবেন বলেছেন, এ ব্যপারে তাদের যা প্রয়োজন তাই করা হবে।”

তবে এ বিষয়টি নিয়ে পূনরায় জানতে চাওয়া হয় স্থানীয়দের কাছে। স্থানীয় দিদারুল ইসলাম রুবেল জানান, সকল স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে কমিটি কাল সকালে ডিসি অফিসে মিটিং হবে।

সরে যাওয়ার বিষয়ে রুবেল বলেন, “আমরা স্পষ্ট বলেছি বিমান বাহিনীর অধিগ্রহণ করা জায়গায় যারা আছেন তাদের যথাযথ স্থায়ী পুনর্বাসন করেই সরাতে হবে।”

 

মামলার এজাহারে যা আছে

নিহত শিহাব কবির নাহিদের বাবা নাছির উদ্দীনের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে আমি চোখের চিকিৎসা করাতে স্ত্রীকে (আমেনা খাতুন) নিয়ে বাড়ি থেকে শহরের কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে যান। দুপুর ১২টার দিকে সেখানে মহিউদ্দিন নামের এক যুবকের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, একমাত্র ছেলে শিহাব কবিরকে বিমানবাহিনীর জনৈক সদস্য গুলি করে হত্যা করেছেন এবং সন্তানের লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পড়ে আছে। খবর শোনার পর তিনি স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ছুটে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানান, পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) করার পর লাশ হস্তান্তর করা হবে। সন্ধ্যা ছয়টায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ হস্তান্তর করে। শিহাব কোনো রাজনীতি কিংবা বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল না। বিমানবাহিনীর সদস্য কিংবা অন্য কারও সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব–সংঘাতও ছিল না।

এজাহারে আরও বলা হয়, ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে বিমানবাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় যুবক জাহেদুল ইসলামকে ঘাঁটিতে নিয়ে নির্যাতন চালান। এ খবরে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং জাহেদুল ইসলামকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। শিহাব কবির রাস্তায় কী ঘটছে দেখার জন্য সমিতিপাড়ার জনৈক নাঈমের বাসার কাছে যান। তখন মাথায় গুলি লেগে গুরুতর আহত হয়। এ সময় বিমানবাহিনীর সদস্যরা শিহাবকে নিয়ে যান। তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে শিহাবকে হাসপাতালে না নিয়ে দেরি করেন, এর ফলে রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়।

বিমানবাহিনীর করা মামলা
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে নাশকতা ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি বিনষ্টের উদ্দেশ্যে বিমানবাহিনীর ঘাঁটির স্পর্শকাতর স্থাপনাগুলোর ওপর দেশি অস্ত্র, ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ অতর্কিতে হামলা করে। দুষ্কৃতকারীরা বিমানবাহিনীর ছয়-সাতটি সিসিটিভি ক্যামেরা, দুটি মোটরসাইকেল, কয়েকটি সরকারি গাড়ি, একটি অফিস ভবন, নির্মাণাধীন দালান ভাঙচুর করে। নির্মাণসামগ্রীও লুটপাট করা হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৬৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা।