নাটোরে সিংড়ায় বিএনপির জনসভা মঞ্চে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমান দৃষ্টির উপস্থিতি ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
শুক্রবার বিকালে সিংড়া কোর্ট মাঠের জনসভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ফারজানা রহমান দৃষ্টিকে দেখার পরই দলের নেতাকর্মীরা সমালোচনা শুরু করেন।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা কাজী গোলাম মোর্শেদ, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ এমদাদুল হক আল মামুন সভামঞ্চে ছিলেন।
রহিম নেওয়াজ ও শেখ এমদাদুল হক আল মামুনের ঠিক পেছনেই বসেন সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমান দৃষ্টি।
যুব মহিলা লীগের কর্মী ফারজানা রহমান দৃষ্টি ২০২০ সালে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন। তিনি জুনাইদ আহমেদ পলকের চাচা-শ্বশুর প্রভাষক আনিছুর রহমানের মেয়ে। সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু তার আপন চাচা।
সিংড়া পৌর বিএনপির সদস্যসচিব তায়েজুল ইসলাম বলেন, “আওয়ামী লীগের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা এমন একজন নারী মঞ্চে ওঠার সুযোগ পায় কিভাবে? এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি যুব মহিলা লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে দেখা যেত। তিনি নৌকার নির্বাচনি প্রচারেও নিয়মিত যোগ দিতেন।
তিনি বলেন, “ফারজানা রহমান দৃষ্টি সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের প্রভাব দেখিয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স দখল করে এখনো সেখানে একটি ক্লিনিক দিয়ে রেখেছেন। আর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু তাকে আজকে মঞ্চে ওঠার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমরা এই ঘটনা নিন্দা জানাই এবং দলীয় হাই কমান্ডকে আহ্বান জানাই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। আত্মীয়করণ করে দলের ক্ষতি আমরা মেনে নেব না।”
এ বিষয়ে ফারজানা রহমান দৃষ্টি বলেন, “আমি বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত এটা সবাই জানে। আমি আওয়ামী লীগের কোনো প্রাথমিক সদস্য বা পদেও নেই। সুতরাং অন্যান্য পদে থাকার প্রশ্নই উঠে না।
“আমি সমাবেশে গিয়েছি সেটাও কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে যাইনি। যেহেতু সামাজিক কাজ করি, তাই একটি পক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আমাকে হেয় করতেই এগুলো ছড়াচ্ছে।”
সিংড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, “আমি তাকে মঞ্চে ওঠাইনি। অনেক মানুষ জনসভায় এসেছে, কিভাবে উঠেছে জানি না। আর সে যে যুব মহিলা লীগের কোনো পদে রয়েছে এ বিষয়টিও আমি জানতাম না।”
বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, “মিটিংয়ে হাজার হাজার লোক এসেছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে তো কাউকে চিনি না। আমাদের কানে যখন বিষয়টি এসেছে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এ ব্যাপারে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) অ্যাডভোকেট শাহীন শওকত বলেন, “বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম