টেকনাফে মানবপাচার মামলায় বয়স বাড়িয়ে আসামী করা হয়েছে দুই স্কুল শিক্ষার্থীকে। গেলো বছরের ৪ নভেম্বর মামলাটি দায়ের করেন টেকনাফ থানার এএসআই আদম আলী।
মামলার এজাহার অনুযায়ী দেখা যায়, ৪ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লম্বরী পাড়ার পর্যটন বাজার সংলগ্ন একটি সুপারি বাগান থেকে ১২ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে পুলিশ। যারা মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে সেখানে জড়ো হয়েছিলেন।
এসময় ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময় আটক করা হয় ৪ জনকে। যার প্রেক্ষিতে আটক ৪ জনসহ আরো ৭ জনকে পলাতক দেখিয়ে মামলা করা হয়।
উদ্ধার ভুক্তভোগীদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ১১ জনের নাম পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয় মামলার এজাহারে।
মামলার ১০ ও ১১ নং আসামীর বয়স উল্লেখ করা হয় যথাক্রমে ২১ ও ১৯। কিন্তু আমাদের হাতে আসা তথ্য বলছে তারা দুজনেই সহোদর এবং টেকনাফের স্কলার্স স্কুল এন্ড কলেজের ১০ম ও ৮ম শ্রেণির ছাত্র এবং অনলাইন জন্মসনদ অনুযায়ী ১৬ ও ১৪ বছর। যাদের নিয়ে প্রত্যয়ন পত্রও দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ওই মামলার আসামী হিসেবে আছে এ দুই সহোদরের মা ফেরদৌস আক্তার। তিনি ইতোমধ্যে এ মামলায় কারাভোগ করে বেরিয়েছেন।
ফেরদৌস আক্তার জানান, ১৯ নভেম্বর তিনি টেকনাফ থানায় যান তার বসরভিটা সংক্রান্ত বিরোধের বিষয় নিয়ে। কিন্তু সেখান তার বিষয়টি না শুনে তাকে টেনে হিঁচড়ে হাজতে নেয়া হয়।
ফেরদৌস আক্তার বলেন, “আমি নিজেও জানিনা আমার নামে কোনো মামলা আছে। সেদিনের থানায় সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলেই বুঝা যাবে আমার সাথে কি হয়েছে।”
সেদিনই তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় জানিয়ে ফেরদৌস আক্তার বলেন, “আমি টেকনাফ সদরে ভাড়া বাসায় থাকি ৩ বছর ধরে। আমার বসতভিটা বিক্রি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলার কারনে আমি থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর আমাকে এমন কেনো করা হলো বুঝতে পারছিনা!”
মামলার বাদি এএসআই আদম আলীর কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,”আমি নতুন এসেছি টেকনাফে। ভুক্তভোগীদের বয়ানের ভিত্তিতেই আসামীর তালিকা করা হয়েছে। আমরা মানবপাচার রোধে কাজ করতে চাই। তাই এখানে এমন অভিযোগের সত্যতা নেই।
তবে মামলার আইনজীবী ছোটন কান্তি শীল দাবী করেন, ভুক্তভোগীরা ১৬৪ ধারায় যে জবানবন্দি দিয়েছে তাতে ফেরদৌস আক্তার ও তার দুই সন্তানের নাম বলেনি। এখানে অন্যকোনো বিষয় রয়েছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই আসামী করা হয়। এখানে যদি কোনো স্কুল ছাত্র আসামী হয়ে থাকে তাহলে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।
নারীর অভিযোগের বিষয়ে ওসি বলেন, এমন হওয়ার কথা নয়।