গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় শুরু হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহির প্রক্রিয়া। সেই ধারাবাহিকতায় সরকারের পতনের পর গত ১১ মাসে পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে ৭৬১টি মামলা। এসব মামলায় আসামি হয়েছেন ১ হাজার ১৬৮ জন পুলিশ সদস্য। তাদের মধ্যে ৬১ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ তথ্য উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ‘নতুন বাংলাদেশ: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন পরবর্তী এক বছরের ওপর পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে। সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে টিআইবির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে টিআইবির ফেলো শাহজাদা এম আকরাম বলেন, ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় জড়িত পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। যদিও কিছু কিছু বিভাগীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, বাস্তব ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে কার্যকর জবাবদিহির দৃশ্যমান অগ্রগতি খুবই সীমিত। এতে সরকারের সদিচ্ছা ও সক্ষমতার ঘাটতি প্রতিফলিত হয়।
হত্যা মামলা ৬৩৮টি, গ্রেফতার মন্ত্রী-এমপি ৮৭ জন
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, গত এক বছরে সারা দেশে দায়ের করা মামলার সংখ্যা ১ হাজার ৬০২টি। এর মধ্যে ৬৩৮টি মামলা সরাসরি হত্যার অভিযোগে।
পতিত সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে আনুমানিক ৮৭ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব মামলার প্রায় ৭০ শতাংশের তদন্তে ‘সন্তোষজনক অগ্রগতি’ রয়েছে বলে দাবি করেছে টিআইবি। ৬০-৭০টি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও বিচার শুরু
গবেষণায় বলা হয়, গত এক বছরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় ৪২৯টি অভিযোগ ও ২৭টি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এই মামলাগুলোর আসামির সংখ্যা ২০৬ জন। তাদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ৭৩ জনকে। শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়েছে। যদিও ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্য ধীরগতিতে চলছে বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় (১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত) সারা দেশে দায়ের করা প্রায় সব হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলেও জানান শাহজাদা এম আকরাম।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ফেলো মো. জুলকারনাইন, ফারহানা রহমানসহ অন্যান্য গবেষক ও বিশ্লেষকরা।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন