ঢাকা ০২:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
এবার নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু, আজ ষষ্ঠী রাখাইনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে: ড. খলিলুর রহমান রামু বাইপাসে ‘খালেকুজ্জামান চত্বর’ পূনর্বহালের দাবিতে হাজারো মানুষের মানববন্ধন খালেদা জিয়া নারী শিক্ষায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন: রামুতে কাজল ভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩৬ জন নিহত ঐক্যবদ্ধ না হলে গুপ্ত স্বৈরাচারের আবির্ভাব হবে : তারেক রহমান সাংবাদিকদের ৩টি কলিজা লাগে: জামায়াত আমির তারা নাকি জান্নাতের টিকিট দেবে, নাউজুবিল্লাহ: সালাহউদ্দিন আহমদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলেই কি কক্সবাজারে পর্যটনের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে? রোহিঙ্গা ছাড়া জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সম্মেলন: ‘নায়ক ছাড়া নাটক’ মন্তব্য কক্সবাজার সৈকত দখল ও অব্যবস্থাপনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে দুষছে টুরিস্ট পুলিশ টেকনাফে মাটি খুঁড়ে মিললো ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা প্রত্যাবাসন চাই- জাতিসংঘে সম্মেলনের আগে ক্যাম্পে সমাবেশ করে বিশ্বকে রোহিঙ্গাদের বার্তা অবহেলার বোঝা নামিয়ে টেকসই ভবিষ্যতের ডাক চায় সিসিএডি

সার্বক্ষণিক ইবাদত আল্লাহর জিকির

জিকির হলো সর্বোত্তম ইবাদত। জিকির শব্দের অর্থ হচ্ছে স্মরণ করা, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। অর্থাৎ নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করা, তাঁর আনুগত্য করা।

সব ইবাদতের প্রাণ হচ্ছে আল্লাহর জিকির।

আল্লাহ তাআলা বান্দাদের সর্বাবস্থায় অধিক হারে তাঁর জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন—আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে বেশি পরিমাণে স্মরণ করো এবং সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৪১-৪২)
সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির করতে হবে

সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির করতে হবে দাঁড়িয়ে, বসে, এমনকি শুয়ে যেভাবে পারা যায়, আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টি বিষয়ে (তারা বলে) হে আমাদের রব! এসব আপনি অনর্থক সৃষ্টি করেননি।

’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯১)

জিকিরের অনন্য বৈশিষ্ট্য

জিকির এমন একটি ইবাদত যার কোনো সময়, সীমা, পরিমাণ ও শর্ত নেই। দিনে-রাতে, সকাল-সন্ধ্যায়, হাঁটতে-বসতে এমনকি শয়ন অবস্থায় এবং অজু অবস্থায় হোক কিংবা অজুবিহীন হোক সর্বাবস্থায় জিকির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া এ ইবাদতের জন্য কোনো বিশেষ পরিশ্রমও করতে হয় না। এবং কোনো অবসরের দরকার পড়ে না।

জিকিরের মাধ্যমে পার্থিব কার্যক্রমও ইবাদতে পরিণত হয়ে যায়। যেমন—আহার করার সময় আহারের দোয়া পড়লে, ঘুমানোর সময় ঘুমের দোয়া পড়লে এগুলো ইবাদতে রূপান্তরিত হয়ে যায়। অর্থাৎ সর্বদা আল্লাহর স্মরণ রাখা—কোনো অবস্থাতেই আল্লাহ সম্পর্কে অমনোযোগী ও গাফিল না হওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর তোমরা যখন নামাজ সম্পন্ন করো, তখন দণ্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহ জিকির করো।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১০৩)
জিকিরকারী ব্যক্তির দৃষ্টান্ত জীবিতদের মতো

আল্লাহর জিকিরকারী ব্যক্তির দৃষ্টান্ত জীবিত ব্যক্তিদের মতো।

যারা আল্লাহর জিকির করে না, তাদের কলব মরে যায় যদিও তারা জীবিত থাকে। জিকিরের মাধ্যমে মানুষের মরা কলব জিন্দা হয়। যেমন—আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা ঈমানদার তারা এমন লোক যে যখন আল্লাহর জিকির করা হয় তখন তাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে। আর যখন তাদের সামনে আল্লাহর আয়াত পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা স্বীয় রবের ওপর ভরসা করে।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ২)
জিকির থেকে গাফিল ব্যক্তি মৃততুল্য

কখনো জিকির থেকে গাফিল হওয়া যাবে না। জিকির থেকে গাফিল হলে সৃষ্টির ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে নানা বিপদাপদ নাজিল হয়ে থাকে। যারা জিকির থেকে গাফিল হয় তাদের দৃষ্টান্ত হলো—যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে এবং যে আল্লাহর জিকির করে না তাদের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতদের মতো। (বুখারি, হাদিস : ৬৪০৭, মুসলিম, হাদিস : ৭৭৯)

জিকিরকারী ব্যক্তি আল্লাহর বেশি পছন্দনীয়

আল্লাহ তাআলা জিকিরকারীকে পছন্দ করেন। জিকিরকারীর দোয়া কবুল করেন। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি আমার বান্দার ধারণা মোতাবেক হই এবং আমি তার সঙ্গে থাকি যখন সে আমার জিকির করে। যদি সে তার মনে মনে আমার জিকির করে আমি তাকে আমার কুদরতি মনে জিকির করি। আর যদি সে আমাকে মজলিসে গণজমায়েতে জিকির করে তাহলে আমি তাকে তাদের চেয়ে উত্তম মজলিসে স্মরণ করি। (বুখারি, হাদিস : ৭৪০৫, মুসলিম, হাদিস : ২৬৭৫)

মহান আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি জিকির করে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করার তাওফিক দান করুন, আমিন।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

এবার নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

This will close in 6 seconds

সার্বক্ষণিক ইবাদত আল্লাহর জিকির

আপডেট সময় : ১২:৫১:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

জিকির হলো সর্বোত্তম ইবাদত। জিকির শব্দের অর্থ হচ্ছে স্মরণ করা, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। অর্থাৎ নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করা, তাঁর আনুগত্য করা।

সব ইবাদতের প্রাণ হচ্ছে আল্লাহর জিকির।

আল্লাহ তাআলা বান্দাদের সর্বাবস্থায় অধিক হারে তাঁর জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন—আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে বেশি পরিমাণে স্মরণ করো এবং সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৪১-৪২)
সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির করতে হবে

সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির করতে হবে দাঁড়িয়ে, বসে, এমনকি শুয়ে যেভাবে পারা যায়, আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টি বিষয়ে (তারা বলে) হে আমাদের রব! এসব আপনি অনর্থক সৃষ্টি করেননি।

’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯১)

জিকিরের অনন্য বৈশিষ্ট্য

জিকির এমন একটি ইবাদত যার কোনো সময়, সীমা, পরিমাণ ও শর্ত নেই। দিনে-রাতে, সকাল-সন্ধ্যায়, হাঁটতে-বসতে এমনকি শয়ন অবস্থায় এবং অজু অবস্থায় হোক কিংবা অজুবিহীন হোক সর্বাবস্থায় জিকির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া এ ইবাদতের জন্য কোনো বিশেষ পরিশ্রমও করতে হয় না। এবং কোনো অবসরের দরকার পড়ে না।

জিকিরের মাধ্যমে পার্থিব কার্যক্রমও ইবাদতে পরিণত হয়ে যায়। যেমন—আহার করার সময় আহারের দোয়া পড়লে, ঘুমানোর সময় ঘুমের দোয়া পড়লে এগুলো ইবাদতে রূপান্তরিত হয়ে যায়। অর্থাৎ সর্বদা আল্লাহর স্মরণ রাখা—কোনো অবস্থাতেই আল্লাহ সম্পর্কে অমনোযোগী ও গাফিল না হওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর তোমরা যখন নামাজ সম্পন্ন করো, তখন দণ্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহ জিকির করো।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১০৩)
জিকিরকারী ব্যক্তির দৃষ্টান্ত জীবিতদের মতো

আল্লাহর জিকিরকারী ব্যক্তির দৃষ্টান্ত জীবিত ব্যক্তিদের মতো।

যারা আল্লাহর জিকির করে না, তাদের কলব মরে যায় যদিও তারা জীবিত থাকে। জিকিরের মাধ্যমে মানুষের মরা কলব জিন্দা হয়। যেমন—আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা ঈমানদার তারা এমন লোক যে যখন আল্লাহর জিকির করা হয় তখন তাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে। আর যখন তাদের সামনে আল্লাহর আয়াত পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা স্বীয় রবের ওপর ভরসা করে।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ২)
জিকির থেকে গাফিল ব্যক্তি মৃততুল্য

কখনো জিকির থেকে গাফিল হওয়া যাবে না। জিকির থেকে গাফিল হলে সৃষ্টির ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে নানা বিপদাপদ নাজিল হয়ে থাকে। যারা জিকির থেকে গাফিল হয় তাদের দৃষ্টান্ত হলো—যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে এবং যে আল্লাহর জিকির করে না তাদের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতদের মতো। (বুখারি, হাদিস : ৬৪০৭, মুসলিম, হাদিস : ৭৭৯)

জিকিরকারী ব্যক্তি আল্লাহর বেশি পছন্দনীয়

আল্লাহ তাআলা জিকিরকারীকে পছন্দ করেন। জিকিরকারীর দোয়া কবুল করেন। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি আমার বান্দার ধারণা মোতাবেক হই এবং আমি তার সঙ্গে থাকি যখন সে আমার জিকির করে। যদি সে তার মনে মনে আমার জিকির করে আমি তাকে আমার কুদরতি মনে জিকির করি। আর যদি সে আমাকে মজলিসে গণজমায়েতে জিকির করে তাহলে আমি তাকে তাদের চেয়ে উত্তম মজলিসে স্মরণ করি। (বুখারি, হাদিস : ৭৪০৫, মুসলিম, হাদিস : ২৬৭৫)

মহান আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি জিকির করে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করার তাওফিক দান করুন, আমিন।