ঢাকা ০৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নির্বাচনি জোট নিয়ে কোনো দলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: আখতার রেস্তোরাঁ শিল্প বাঁচাতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কক্সবাজারের রেস্তোরাঁ মালিকদের… বিমানবন্দরের আগুন তদন্তে বিশেষজ্ঞ আসছেন ৪ দেশ থেকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৪৬৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার: আটক ১ সাগরে নিম্নচাপ, বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত সাংবাদিক সরওয়ার আজম মানিকের মায়ের জানাজা সম্পন্ন নির্বাচন সম্পন্ন করতে ব্যর্থ: ‘উখিয়া স্টেশন বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতি’র অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন সাংবাদিক সরওয়ার আজম মানিকের মায়ের ইন্তেকাল: টিটিএনের শোক কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না থাকা লজ্জাজনক- জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ চকরিয়ায় কাভার্ডভ্যানের নিচে মোটর সাইকেল: নিহত-২ প্রার্থী চুড়ান্ত করা ,তারেক জিয়ার দেশে ফেরা, এনসিপির সাথে জোট প্রসঙ্গে যা বললেন সালাউদ্দিন আহমেদ প্রস্তুতি ছিলো চুড়ান্ত: আন্তর্জাতিক ফ্লাইট উড়ার আগেই স্থগিত স্বীকৃতি ঘোষণার ১১ দিনের মাথায় ‘আন্তর্জাতিক’ স্বীকৃতি হারাল কক্সবাজার বিমানবন্দর বাহারছড়ার গহীন পাহাড়ে কোস্টগার্ডের অভিযান: নারী ও শিশুসহ ৪৪ অ’প’হৃ’ত উদ্ধার শাশুড়ির ১২ লাখ টাকার কিলারে খুন হন সালমান শাহ!

সাগর-রুনি হত্যা: তদন্ত নিয়ে অসন্তুষ্ট আদালত বলল ‘আপ্রাণ চেষ্টা’ চালাতে

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত এ কার্যক্রম শেষ করতে আপ্রাণ চেষ্টার তাগিদ দিয়েছে।

রোববার ঢাকার মহানগর হাকিম মিনহাজুর রহমানের আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। পাশাপাশি তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে শুনানির দিন ছিল।

তদন্ত কর্মকর্তাকে হাজির হয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে গত ১১ অগাস্ট নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।

এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল আদালতে উপস্থিত হন। বেলা ১২টা ১০ মিনিটে মামলার তদন্তের অগ্রগতি বিষয়ে শুনানি শুরু হয়৷

আদালত তদন্ত কর্মকর্তা আজিজুলের কাছে জানতে চান, তিনি সিআইডিতে আছেন কি না? আজিজুল আদালতকে জানান, তিনি পিবিআইতে আছেন।

মামলা তদন্তের অগ্রগতি কতদূর? আদালত জানতে চাইলে এ তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “উচ্চ আদালতের নির্দেশে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তদন্ত শুরু হয়। এরপর আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তদন্তের। আমি এই মামলা সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন ও ডিএনএ এক্সপার্টদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি।

“দুজনের মিক্সড ডিএনএ তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এসব কারণে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে দেরি হচ্ছে।”

আজিজুল বলেন, “কিছুদিন আগে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় পার হলেও উচ্চ আদালতে থেকে আরও সময় নেওয়া হয়েছে।”

এসময় বিচারক বলেন, “যা বুঝলাম- এই মামলার আগের তদন্ত কর্মকর্তা যিনি ছিলেন, তিনিও একই কথা বলেছেন। আপনার তদন্তের অগ্রগতিতে আদালত অসন্তুষ্ট, আপনি আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।”

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া করা বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি।

সাগর সে সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলী রোমান শেরেবাংলা থানায় মামলা করেন।

ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন এক যুগেও দাখিল হয়নি। আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়েছে ১২১ বার। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত আগামী ৩০ নভেম্বর দিন ঠিক করেছে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই রফিকুল ইসলাম।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে র‌্যাবকে বাদ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সেদিন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করে এ তদন্ত কাজ সম্পন্ন করতে ছয় মাস বেঁধে দেয় হাই কোর্ট।

এর তিন সপ্তাহ বাদে গত ২৩ অক্টোবর আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্ত কাজ শেষ করতে টাস্কফোর্স গঠন করে সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংশ্লিষ্ট পরিপত্রে বলেছে, “ছয় মাসের মধ্যে টাস্কফোর্স তার প্রতিবেদন হাই কোর্টে দাখিল করবে। টাস্কফোর্স প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।”

পরে গত ২২ এপ্রিল টাস্কফোর্সকে আরো ছয় মাস সময় দিয়েছে হাই কোর্ট। টাস্কফোর্সের অধীনে পিবিআই মামলাটির তদন্ত করছে।

২০১২ সালে সাগর-রুনিকে হত্যার রাতে সেই ফ্ল্যাটে তাদের সঙ্গে ছিল একমাত্র সন্তান পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ। তাকে উদ্ধৃত করে পুলিশ তখন জানিয়েছিল, খুনি ছিল দুজন।

আলোড়ন সৃষ্টি করা ওই হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর বছরের পর বছর গড়ালেও হত্যা রহস্যের কিনারা হয়নি।

হত্যার পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন রুনির ভাই নওশের রোমান। বিভিন্ন সময়ে মোট আটজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজন জামিনও পান।

তারা হলেন- রুনির বন্ধু তানভীর রহমান, বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।

প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তে নামে। চার দিন পর তদন্তের ভার দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে।

তারা রহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল তদন্তভার র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

দায়িত্ব পেয়ে ডিএনএসহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক পরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থল থেকে বটি, পরিধেয় কাপড়সহ বেশ কিছু বস্তু পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবেও পাঠায় র‌্যাব। কিন্তু এতদিনেও তার ফল প্রকাশ করা হয়নি।

তদন্ত প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা নিহত সাংবাদিক দম্পতির পরিবার এবং পেশাজীবীদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই মামলার দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

এর আগে বিভিন্ন সময় সাবেক সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এই হত্যাকাণ্ডের কূলকিনারা করার আশা দিলেও সুফল মেলেনি।

শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার পতন হলে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এই হত্যার বিচারের আশ্বাস দিয়ে বলেন, এই বিচার করা না হলে তারা জাতির কাছে দায়ী থাকবেন।

আর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত ২১ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমরা দেখেছি চাঞ্চল্যকর সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে শতাধিকবার সময় নেওয়া হয়েছে। এটা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না।

“তদন্ত কাজেই যদি একাধিক বছর সময় লেগে যায়, সে মামলার বিচারকাজ পরিচালনা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। কেননা সময়ের আবর্তে মামলার অনেক সাক্ষী ও সাক্ষ্য হারিয়ে যায়।”

সূত্র: বিডিনিউজ

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনি জোট নিয়ে কোনো দলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: আখতার

This will close in 6 seconds

সাগর-রুনি হত্যা: তদন্ত নিয়ে অসন্তুষ্ট আদালত বলল ‘আপ্রাণ চেষ্টা’ চালাতে

আপডেট সময় : ০৩:০৯:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত এ কার্যক্রম শেষ করতে আপ্রাণ চেষ্টার তাগিদ দিয়েছে।

রোববার ঢাকার মহানগর হাকিম মিনহাজুর রহমানের আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। পাশাপাশি তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে শুনানির দিন ছিল।

তদন্ত কর্মকর্তাকে হাজির হয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে গত ১১ অগাস্ট নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।

এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল আদালতে উপস্থিত হন। বেলা ১২টা ১০ মিনিটে মামলার তদন্তের অগ্রগতি বিষয়ে শুনানি শুরু হয়৷

আদালত তদন্ত কর্মকর্তা আজিজুলের কাছে জানতে চান, তিনি সিআইডিতে আছেন কি না? আজিজুল আদালতকে জানান, তিনি পিবিআইতে আছেন।

মামলা তদন্তের অগ্রগতি কতদূর? আদালত জানতে চাইলে এ তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “উচ্চ আদালতের নির্দেশে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তদন্ত শুরু হয়। এরপর আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তদন্তের। আমি এই মামলা সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন ও ডিএনএ এক্সপার্টদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি।

“দুজনের মিক্সড ডিএনএ তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এসব কারণে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে দেরি হচ্ছে।”

আজিজুল বলেন, “কিছুদিন আগে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় পার হলেও উচ্চ আদালতে থেকে আরও সময় নেওয়া হয়েছে।”

এসময় বিচারক বলেন, “যা বুঝলাম- এই মামলার আগের তদন্ত কর্মকর্তা যিনি ছিলেন, তিনিও একই কথা বলেছেন। আপনার তদন্তের অগ্রগতিতে আদালত অসন্তুষ্ট, আপনি আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।”

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া করা বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি।

সাগর সে সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলী রোমান শেরেবাংলা থানায় মামলা করেন।

ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন এক যুগেও দাখিল হয়নি। আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়েছে ১২১ বার। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত আগামী ৩০ নভেম্বর দিন ঠিক করেছে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই রফিকুল ইসলাম।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে র‌্যাবকে বাদ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সেদিন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করে এ তদন্ত কাজ সম্পন্ন করতে ছয় মাস বেঁধে দেয় হাই কোর্ট।

এর তিন সপ্তাহ বাদে গত ২৩ অক্টোবর আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্ত কাজ শেষ করতে টাস্কফোর্স গঠন করে সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংশ্লিষ্ট পরিপত্রে বলেছে, “ছয় মাসের মধ্যে টাস্কফোর্স তার প্রতিবেদন হাই কোর্টে দাখিল করবে। টাস্কফোর্স প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।”

পরে গত ২২ এপ্রিল টাস্কফোর্সকে আরো ছয় মাস সময় দিয়েছে হাই কোর্ট। টাস্কফোর্সের অধীনে পিবিআই মামলাটির তদন্ত করছে।

২০১২ সালে সাগর-রুনিকে হত্যার রাতে সেই ফ্ল্যাটে তাদের সঙ্গে ছিল একমাত্র সন্তান পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ। তাকে উদ্ধৃত করে পুলিশ তখন জানিয়েছিল, খুনি ছিল দুজন।

আলোড়ন সৃষ্টি করা ওই হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর বছরের পর বছর গড়ালেও হত্যা রহস্যের কিনারা হয়নি।

হত্যার পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন রুনির ভাই নওশের রোমান। বিভিন্ন সময়ে মোট আটজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজন জামিনও পান।

তারা হলেন- রুনির বন্ধু তানভীর রহমান, বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।

প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তে নামে। চার দিন পর তদন্তের ভার দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে।

তারা রহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল তদন্তভার র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

দায়িত্ব পেয়ে ডিএনএসহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক পরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থল থেকে বটি, পরিধেয় কাপড়সহ বেশ কিছু বস্তু পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবেও পাঠায় র‌্যাব। কিন্তু এতদিনেও তার ফল প্রকাশ করা হয়নি।

তদন্ত প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা নিহত সাংবাদিক দম্পতির পরিবার এবং পেশাজীবীদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই মামলার দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

এর আগে বিভিন্ন সময় সাবেক সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এই হত্যাকাণ্ডের কূলকিনারা করার আশা দিলেও সুফল মেলেনি।

শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার পতন হলে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এই হত্যার বিচারের আশ্বাস দিয়ে বলেন, এই বিচার করা না হলে তারা জাতির কাছে দায়ী থাকবেন।

আর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত ২১ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমরা দেখেছি চাঞ্চল্যকর সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে শতাধিকবার সময় নেওয়া হয়েছে। এটা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না।

“তদন্ত কাজেই যদি একাধিক বছর সময় লেগে যায়, সে মামলার বিচারকাজ পরিচালনা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। কেননা সময়ের আবর্তে মামলার অনেক সাক্ষী ও সাক্ষ্য হারিয়ে যায়।”

সূত্র: বিডিনিউজ