ঢাকা ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কি হতে পারে: নির্বাচন, না নতুন অন্তর্বর্তী সরকার? ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সড়ক ছাড়লো বাসটার্মিনাল এলাকার বাসিন্দারা টেকনাফ জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক: দলীয় লেজুড়বৃত্তির সাংবাদিকতা থেকে বেরিয়ে আসুন উখিয়ায় পুলিশের পৃথক অভিযানে মিলল ১০ হাজার ইয়াবা ওপার থেকে ছোড়া গুলি পায়ে বিঁধলো নারীর খুনিয়া পালংয়ে চলন্তগাড়িতে ফিল্মি কায়দায় ডা’কা’তি, মোবাইলও টাকা ছিনতাই চকরিয়ায় ফের ২ মোটরসাইকেল আরোহীর মৃ’ত্যু সেন্ট মার্টিন দখলকারীদের বিরুদ্ধে জোরালো বার্তা দিয়েছি: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উখিয়ায় ৮ খুদে হাফেজার কোরআন সবিনা খতম উপলক্ষে নানান আয়োজন বাবার সাথে মাছ ধরতে গিয়ে রেজুখালে স্কুল শিক্ষার্থী নিখোঁজ মহেশখালীর যুবদল নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ আরফাতের অকাল মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদের শোক রামু বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে কঠিন চীবর দান সম্পন্ন বসতি বে রিসোর্টের সাথে লুৎফর রহমান কাজলের সম্পৃক্ততা নেই – কর্তৃপক্ষ নির্বাচনি জোট নিয়ে কোনো দলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: আখতার রেস্তোরাঁ শিল্প বাঁচাতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কক্সবাজারের রেস্তোরাঁ মালিকদের…

শেষবেলার স্যালুটটাও পেলেন না তাঁরা

একটি খেলাকে আমরা যতটা মনে রাখি জয় ও পরাজয়ের জন্য, তার চেয়ে বেশি মনে রাখি বিদায়ের মুহূর্তগুলোর জন্য। কিন্তু সময়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা গুলো যেন হারিয়ে গেল নীরবতায়—না কোনো স্টেডিয়ামের গর্জনে, না কোনো শেষ আলিঙ্গনে। শুধু একটা পোস্ট, একটা টাইমলাইন, আর ফেসবুকের নিঃশব্দ কিছু শব্দ।

বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনি, সাকিব আল হাসান,  মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল সহ আরো অনেক নাম।

এই নামগুলো এক একটা ইতিহাস। এই মানুষগুলো ছিলেন এক একটা অধ্যায়। কিন্তু তাঁদের প্রস্থানে ছিল না কোনো জাঁকজমক, ছিল না কোনো শেষ ম্যাচ, ছিল না মাঠভরা বিদায়ি হাততালি।

২০২৫ সালের মে মাসের শুরুতে বিরাট কোহলি তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের অবসান ঘোষণা করলেন—একটি একান্ত ব্যক্তিগত টুইটার পোস্টে। ক্যাপশনে শুধু লিখলেন,

“১৭ বছর, সাদা জার্সির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা চিরদিন থাকবে। বিদায় টেস্ট ক্রিকেট।”

সেই পোস্টে ছিল স্মৃতির ছবি, কিছু স্ট্যাটস—কিন্তু ছিল না কোনো বিদায় ম্যাচ, ছিল না কোনো স্ট্যান্ডিং ওভেশন।

কোথাও থেকে গেল এক অপূর্ণতা। কোহলির মতো একজন কিংবদন্তি কি এমন নিঃশব্দে চলে যাওয়ার জন্যই ছিলেন?

ধোনি, ভারতের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক, বিদায় নিলেন ইনস্টাগ্রামে এক লাইন লেখে—“৭:২৯ থেকে আমাকে অবসরপ্রাপ্ত ভাবুন।”

না কোনো সংবর্ধনা, না কোনো অফিশিয়াল ম্যাচ—শুধু নীরব একটি ঘোষণা। বিশ্ব হতবাক, কিন্তু মাঠটা ছিল খালি।

একইভাবে বাংলাদেশের কিংবদন্তিদের বিদায়ও লেখা হলো স্ট্যাটাসেই-

তামিম ইকবাল, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের মালিক, হঠাৎ অবসরের ঘোষণা দিলেন সংবাদ সম্মেলনে, পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে ফিরে এলেও, এরপর আবার ফেসবুক পোস্টে শেষ বিদায় জানালেন—নীরব এবং একাকী।

সাকিব আল হাসান, একসময়ের সেরা অলরাউন্ডার, ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছেন—না কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, না কোনো বিদায় ম্যাচ। ফেসবুক পোস্ট, ধোঁয়াশা আর গুঞ্জন—তাতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে ক্যারিয়ারের গল্প।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ—বাংলাদেশের অনেক জয়ের নায়ক—একটি টেস্ট ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়লেন, সবাই ভেবেছিল আবার ফিরবেন, পরে ফেসবুকে এল তাঁর টেস্ট অবসরের ঘোষণা।

আজকাল খেলোয়াড়রা যেন নিজেরাও বুঝে যান—বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। বোর্ড, পারফরম্যান্স, রাজনীতি—সব মিলে এক সময় নিজেকেই বিদায় নিতে হয়, চুপিসারে।

আমরা, দর্শকরা, হয়তো চেয়েছিলাম—

ধোনিকে শেষবার চেন্নাইয়ে স্ট্যাম্প হাতে বিদায় নিতে।

তামিমকে মিরপুরে গার্ড অফ অনার পেতে।

কোহলিকে ওভাল কিংবা ইডেনে ব্যাট তুলে শেষবার চিৎকার শুনতে।

সাকিবকে আবার বল হাতে চার উইকেট নিয়ে কাঁদতে দেখতে।

কিন্তু বাস্তবতা অনেকটা এমন— তাঁরা চলে যান, অথচ মাঠ তা জানতেই পারে না।

খেলা চলবে, নতুন তারকারা আসবে। কিন্তু ইতিহাসের পাতায়, এই মহানায়কদের বিদায়গুলো থাকবে অসম্পূর্ণ।

না কোনো প্রস্থানের দিন, না কোনো শেষ ইনিংস—শুধু একটি স্ট্যাটাস, একটি স্মৃতি, আর বুকের ভেতর জমে থাকা না বলা কষ্ট।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

কি হতে পারে: নির্বাচন, না নতুন অন্তর্বর্তী সরকার?

This will close in 6 seconds

শেষবেলার স্যালুটটাও পেলেন না তাঁরা

আপডেট সময় : ০৪:০৭:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

একটি খেলাকে আমরা যতটা মনে রাখি জয় ও পরাজয়ের জন্য, তার চেয়ে বেশি মনে রাখি বিদায়ের মুহূর্তগুলোর জন্য। কিন্তু সময়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা গুলো যেন হারিয়ে গেল নীরবতায়—না কোনো স্টেডিয়ামের গর্জনে, না কোনো শেষ আলিঙ্গনে। শুধু একটা পোস্ট, একটা টাইমলাইন, আর ফেসবুকের নিঃশব্দ কিছু শব্দ।

বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনি, সাকিব আল হাসান,  মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল সহ আরো অনেক নাম।

এই নামগুলো এক একটা ইতিহাস। এই মানুষগুলো ছিলেন এক একটা অধ্যায়। কিন্তু তাঁদের প্রস্থানে ছিল না কোনো জাঁকজমক, ছিল না কোনো শেষ ম্যাচ, ছিল না মাঠভরা বিদায়ি হাততালি।

২০২৫ সালের মে মাসের শুরুতে বিরাট কোহলি তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের অবসান ঘোষণা করলেন—একটি একান্ত ব্যক্তিগত টুইটার পোস্টে। ক্যাপশনে শুধু লিখলেন,

“১৭ বছর, সাদা জার্সির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা চিরদিন থাকবে। বিদায় টেস্ট ক্রিকেট।”

সেই পোস্টে ছিল স্মৃতির ছবি, কিছু স্ট্যাটস—কিন্তু ছিল না কোনো বিদায় ম্যাচ, ছিল না কোনো স্ট্যান্ডিং ওভেশন।

কোথাও থেকে গেল এক অপূর্ণতা। কোহলির মতো একজন কিংবদন্তি কি এমন নিঃশব্দে চলে যাওয়ার জন্যই ছিলেন?

ধোনি, ভারতের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক, বিদায় নিলেন ইনস্টাগ্রামে এক লাইন লেখে—“৭:২৯ থেকে আমাকে অবসরপ্রাপ্ত ভাবুন।”

না কোনো সংবর্ধনা, না কোনো অফিশিয়াল ম্যাচ—শুধু নীরব একটি ঘোষণা। বিশ্ব হতবাক, কিন্তু মাঠটা ছিল খালি।

একইভাবে বাংলাদেশের কিংবদন্তিদের বিদায়ও লেখা হলো স্ট্যাটাসেই-

তামিম ইকবাল, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের মালিক, হঠাৎ অবসরের ঘোষণা দিলেন সংবাদ সম্মেলনে, পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে ফিরে এলেও, এরপর আবার ফেসবুক পোস্টে শেষ বিদায় জানালেন—নীরব এবং একাকী।

সাকিব আল হাসান, একসময়ের সেরা অলরাউন্ডার, ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছেন—না কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, না কোনো বিদায় ম্যাচ। ফেসবুক পোস্ট, ধোঁয়াশা আর গুঞ্জন—তাতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে ক্যারিয়ারের গল্প।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ—বাংলাদেশের অনেক জয়ের নায়ক—একটি টেস্ট ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়লেন, সবাই ভেবেছিল আবার ফিরবেন, পরে ফেসবুকে এল তাঁর টেস্ট অবসরের ঘোষণা।

আজকাল খেলোয়াড়রা যেন নিজেরাও বুঝে যান—বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। বোর্ড, পারফরম্যান্স, রাজনীতি—সব মিলে এক সময় নিজেকেই বিদায় নিতে হয়, চুপিসারে।

আমরা, দর্শকরা, হয়তো চেয়েছিলাম—

ধোনিকে শেষবার চেন্নাইয়ে স্ট্যাম্প হাতে বিদায় নিতে।

তামিমকে মিরপুরে গার্ড অফ অনার পেতে।

কোহলিকে ওভাল কিংবা ইডেনে ব্যাট তুলে শেষবার চিৎকার শুনতে।

সাকিবকে আবার বল হাতে চার উইকেট নিয়ে কাঁদতে দেখতে।

কিন্তু বাস্তবতা অনেকটা এমন— তাঁরা চলে যান, অথচ মাঠ তা জানতেই পারে না।

খেলা চলবে, নতুন তারকারা আসবে। কিন্তু ইতিহাসের পাতায়, এই মহানায়কদের বিদায়গুলো থাকবে অসম্পূর্ণ।

না কোনো প্রস্থানের দিন, না কোনো শেষ ইনিংস—শুধু একটি স্ট্যাটাস, একটি স্মৃতি, আর বুকের ভেতর জমে থাকা না বলা কষ্ট।