ঢাকা ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে? টেকনাফে এসে অপহরণের শিকার সেন্টমার্টিনের যুবক: ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি স্বাধীনতাবিরোধী ও সরকারসৃষ্ট দল দুটি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়: হাফিজ উদ্দিন বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমানায় মাসব্যাপী জরিপ করবে নরওয়ে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দিলে ‘খারাপ নজির’ সৃষ্টি হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে: সেনাপ্রধান যুবকের জরিমানাসহ ৭ বছরের কারাদণ্ড বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি অংশে জরিপে নামছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে ৪ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইইউ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হলেন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, এরপর আমরা বিদায় নেব : আসিফ নজরুল তিস্তা প্রকল্পে চীনা ঋণ নিতে চায় সরকার, চেয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাত্ররাজনীতিতে পরিবর্তন চান শিক্ষার্থীরা ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন ইনানীতে আত্মপ্রকাশ করলো শফির বিল জেলে কল্যাণ সমিতি

লেবু পানি কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

আর্দ্র থাকতে লেবু পানি উপকারী। তবে পান করার ক্ষেত্রে সাবধানতারও প্রয়োজন আছে।
লেবু পানি কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

গরমে পিপাসা মেটাতে অথবা হালকা কোনো পানীয় খুঁজতে গিয়ে অনেকেই লেবু পানি বেছে নেন। স্বাদের দিক থেকে এটি যেমন টক তেমনি এর নানান স্বাস্থ্যগত দাবি রয়েছে।

কেউ বলেন এটি রোগ প্রতিরোধ করে, কেউ বলেন ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে প্রশ্ন হল, লেবু পানি আসলেই কি এত ভালো? নাকি এসব শুধুই প্রচলিত ধারণা।

কী এই লেবু পানি?

লেবু পানি মানে খুব সাধারণভাবে বলা যায় পানির মধ্যে লেবুর রস মেশানো। কেউ কেউ এক ফালি লেবু পানিতে ভাসিয়ে দেন, আবার কেউ শুধু রস চিপে পান করেন।

লস অ্যাঞ্জেলেস-ভিত্তিক পুষ্টিবিদ ম্যাগি মুন রিয়েলসিম্পল ডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পরামর্শ দিয়েছেন, “লেবুর খোসা ভালোভাবে ধুয়ে এর কিছুটা অংশ পানিতে ঘষে দিলে তা আরও সুগন্ধি হয় এবং লেবুর তেল পানিতে মিশে যায়।”

অর্থাৎ স্বাদ ও গন্ধের দিক থেকেও এই পানীয় বেশ আকর্ষণীয়।

আর্দ্রতা বাড়ায়

শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশই পানি। এই পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, কোষে পুষ্টি সরবরাহ এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে। যথাযথ পানি না পেলে দেহে পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেইশন) দেখা দিতে পারে।

ম্যাগি মুন বলেন, “যদি লেবু পানি মানুষকে বেশি করে পানি পান করতে উদ্বুদ্ধ করে, তবে আমি এর পক্ষে।”

তিনি আরও বলেন, “মস্তিষ্কের বেশিরভাগই তরল দিয়ে তৈরি, তাই পানির অভাবে মনোযোগ কমে যায়, ক্লান্তি আসে, এমনকি গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।”

দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে সহায়ক

‘কেমেলব্যাক নিউট্রিশন অ্যান্ড ওয়েলনেস’য়ের প্রতিষ্ঠাতা পুষ্টিবিদ ক্রিস্টেন কারলি একই প্রতিবেদনে বলেন, “লেবুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কোষ ধ্বংস বা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস রোধে সাহায্য করে।”

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেল্থ (এনআইএইচ)-এর তথ্যানুসারে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহ টাইপ-টু ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

এনআইএইচ-এর তথ্যানুসারে- ভিটামিন সি শুধু রোগ প্রতিরোধে নয়, ক্ষত নিরাময়, আয়রন বা লৌহ শোষণ এবং কোষের সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ম্যাগি মুন বলেন, “লেবু পানি শরীরে প্রতিদিনের ভিটামিন সি চাহিদা পূরণে সাহায্য করে।”

স্নায়ুবিক কার্যক্রমে সাহায্য করে

লেবুতে সামান্য পরিমাণ পটাসিয়ামও থাকে। প্রতি আউন্স লেবুর রসে প্রায় ৩২ মি.গ্রা. এবং প্রতি চামচ লেবুর খোসায় প্রায় ১০ মি.গ্রা.।

পটাসিয়াম স্নায়ুর কার্যক্রম, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং কোষে পুষ্টি পরিবহনে সহায়ক।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা

২০১৯ সালে করা একটি ছোট গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন দুই লিটার লেবুর পানি পান করেছিল, তাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে গিয়েছিল।

সিট্রিক অ্যাসিড নামক উপাদানটি লেবুতে থাকার কারণে এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করতে পারে।

লৌহ শোষণে সাহায্য করে

বিশ্বজুড়ে লৌহের ঘাটতি বা রক্তাল্পতা লক্ষ করা যায়, যা বিশেষ করে নারী ও শিশুর মধ্যে বেশি।

ম্যাগি মুন বলেন, “শাকসবজি বা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া লৌহের শোষণ বাড়াতে ভিটামিন সি প্রয়োজন, যা লেবু পানি থেকে পাওয়া যায়।”

বিনস, পালংশাক ইত্যাদি উদ্ভিজ্জ উৎসের লৌহ শরীর সহজে শোষণ করতে পারে না। তবে এক গ্লাস লেবু পানি সেই শোষণ প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে পারে।

ত্বক সুন্দর রাখতে সহায়ক

ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোলাজেনের পরিমাণ কমে যায়, ফলে ত্বকে বলিরেখা পড়ে।

ক্রিস্টেন কারলি বলেন, “লেবুর রসে থাকা ভিটামিন সি ত্বকে কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে।”

একই সঙ্গে, লেবু পানি শরীরকে আর্দ্র রাখে, যা ত্বককে উজ্জ্বল ও তরতাজা রাখতে পারে।

‘দ্য ল্যানসেট জার্নাল’য়ে প্রকাশিত ২০২৩ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি পানি পান করেন, তারা তুলনামূলকভাবে ধীরে বুড়িয়ে যান এবং দীর্ঘায়ু হন।

চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রিয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা জানাচ্ছে, প্রায় ৬৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিদিন চিনি-মিশ্রিত পানীয় পান করেন।

ম্যাগি মুন ও কারলি দুজনেই মন্তব্য করেন, “যদি কেউ চিনি-মেশানো পানীয়র পরিবর্তে লেবু পানি গ্রহণ করেন, তবে এটি অবশ্যই ভালো বিকল্প।”

এই পানীয় একদিকে শরীরকে আর্দ্র রাখে, অন্যদিকে চিনি খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে

লেবু লালারস বৃদ্ধি করে, যা মুখ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এর অম্লীয় গুণ মুখের পিএইচ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, আর এতে থাকা ভিটামিন সি ব্যাক্টেরিয়াকে প্রতিরোধ করে। অনেক টুথপেস্ট ও মাউথওয়াশে তাই লেবুর সুগন্ধ ব্যবহার করা হয়।

হাড়ের জোড়ের ব্যথা কমায়

‘লেমন এক্সট্রাক্ট’ (যা লেবুর খোসা থেকে তৈরি হয়) প্রদাহ প্রতিরোধে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি অস্থিসন্ধি ব্যথা ও বাতজনিত সমস্যা হ্রাস করতে পারে। চাইলে পানিতে কয়েক ফোঁটা লেবু এক্সট্রাক্টও মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

মেজাজ ভালো করে

সিট্রাসের ঘ্রাণ মস্তিষ্কে সুখানুভূতি তৈরি করে। জাপানের শিতেনোজি বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১০ মিনিট সিট্রাস ঘ্রাণ নেওয়ার পর ৩০ মিনিট পর্যন্ত মন ভালো থাকে। লেবু পানি খেলে শুধু শরীরই ভালো থাকে না, মনও চাঙা হয়।

সাবধানতা অবলম্বন জরুরি

তবে লেবু পানি সবার জন্য উপযোগী নাও হতে পারে। কিছু ঝুঁকির কথাও বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন।

অতিরিক্ত অ্যাসিড দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে। তাই স্ট্র ব্যবহার করা ভালো।
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সে ভুগলে লেবু পানি সমস্যা বাড়াতে পারে।
অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণে বমি বমি ভাব বা কিডনিতে পাথর হতে পারে।
কারও লেবুতে অ্যালার্জি থাকলে এড়িয়ে চলাই ভালো।

সূত্র: বিডিনিউজ

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে?

This will close in 6 seconds

লেবু পানি কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

আপডেট সময় : ০৩:২৩:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫

আর্দ্র থাকতে লেবু পানি উপকারী। তবে পান করার ক্ষেত্রে সাবধানতারও প্রয়োজন আছে।
লেবু পানি কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

গরমে পিপাসা মেটাতে অথবা হালকা কোনো পানীয় খুঁজতে গিয়ে অনেকেই লেবু পানি বেছে নেন। স্বাদের দিক থেকে এটি যেমন টক তেমনি এর নানান স্বাস্থ্যগত দাবি রয়েছে।

কেউ বলেন এটি রোগ প্রতিরোধ করে, কেউ বলেন ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে প্রশ্ন হল, লেবু পানি আসলেই কি এত ভালো? নাকি এসব শুধুই প্রচলিত ধারণা।

কী এই লেবু পানি?

লেবু পানি মানে খুব সাধারণভাবে বলা যায় পানির মধ্যে লেবুর রস মেশানো। কেউ কেউ এক ফালি লেবু পানিতে ভাসিয়ে দেন, আবার কেউ শুধু রস চিপে পান করেন।

লস অ্যাঞ্জেলেস-ভিত্তিক পুষ্টিবিদ ম্যাগি মুন রিয়েলসিম্পল ডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পরামর্শ দিয়েছেন, “লেবুর খোসা ভালোভাবে ধুয়ে এর কিছুটা অংশ পানিতে ঘষে দিলে তা আরও সুগন্ধি হয় এবং লেবুর তেল পানিতে মিশে যায়।”

অর্থাৎ স্বাদ ও গন্ধের দিক থেকেও এই পানীয় বেশ আকর্ষণীয়।

আর্দ্রতা বাড়ায়

শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশই পানি। এই পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, কোষে পুষ্টি সরবরাহ এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে। যথাযথ পানি না পেলে দেহে পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেইশন) দেখা দিতে পারে।

ম্যাগি মুন বলেন, “যদি লেবু পানি মানুষকে বেশি করে পানি পান করতে উদ্বুদ্ধ করে, তবে আমি এর পক্ষে।”

তিনি আরও বলেন, “মস্তিষ্কের বেশিরভাগই তরল দিয়ে তৈরি, তাই পানির অভাবে মনোযোগ কমে যায়, ক্লান্তি আসে, এমনকি গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।”

দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে সহায়ক

‘কেমেলব্যাক নিউট্রিশন অ্যান্ড ওয়েলনেস’য়ের প্রতিষ্ঠাতা পুষ্টিবিদ ক্রিস্টেন কারলি একই প্রতিবেদনে বলেন, “লেবুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কোষ ধ্বংস বা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস রোধে সাহায্য করে।”

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেল্থ (এনআইএইচ)-এর তথ্যানুসারে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহ টাইপ-টু ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

এনআইএইচ-এর তথ্যানুসারে- ভিটামিন সি শুধু রোগ প্রতিরোধে নয়, ক্ষত নিরাময়, আয়রন বা লৌহ শোষণ এবং কোষের সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ম্যাগি মুন বলেন, “লেবু পানি শরীরে প্রতিদিনের ভিটামিন সি চাহিদা পূরণে সাহায্য করে।”

স্নায়ুবিক কার্যক্রমে সাহায্য করে

লেবুতে সামান্য পরিমাণ পটাসিয়ামও থাকে। প্রতি আউন্স লেবুর রসে প্রায় ৩২ মি.গ্রা. এবং প্রতি চামচ লেবুর খোসায় প্রায় ১০ মি.গ্রা.।

পটাসিয়াম স্নায়ুর কার্যক্রম, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং কোষে পুষ্টি পরিবহনে সহায়ক।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা

২০১৯ সালে করা একটি ছোট গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন দুই লিটার লেবুর পানি পান করেছিল, তাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে গিয়েছিল।

সিট্রিক অ্যাসিড নামক উপাদানটি লেবুতে থাকার কারণে এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করতে পারে।

লৌহ শোষণে সাহায্য করে

বিশ্বজুড়ে লৌহের ঘাটতি বা রক্তাল্পতা লক্ষ করা যায়, যা বিশেষ করে নারী ও শিশুর মধ্যে বেশি।

ম্যাগি মুন বলেন, “শাকসবজি বা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া লৌহের শোষণ বাড়াতে ভিটামিন সি প্রয়োজন, যা লেবু পানি থেকে পাওয়া যায়।”

বিনস, পালংশাক ইত্যাদি উদ্ভিজ্জ উৎসের লৌহ শরীর সহজে শোষণ করতে পারে না। তবে এক গ্লাস লেবু পানি সেই শোষণ প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে পারে।

ত্বক সুন্দর রাখতে সহায়ক

ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোলাজেনের পরিমাণ কমে যায়, ফলে ত্বকে বলিরেখা পড়ে।

ক্রিস্টেন কারলি বলেন, “লেবুর রসে থাকা ভিটামিন সি ত্বকে কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে।”

একই সঙ্গে, লেবু পানি শরীরকে আর্দ্র রাখে, যা ত্বককে উজ্জ্বল ও তরতাজা রাখতে পারে।

‘দ্য ল্যানসেট জার্নাল’য়ে প্রকাশিত ২০২৩ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি পানি পান করেন, তারা তুলনামূলকভাবে ধীরে বুড়িয়ে যান এবং দীর্ঘায়ু হন।

চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রিয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা জানাচ্ছে, প্রায় ৬৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিদিন চিনি-মিশ্রিত পানীয় পান করেন।

ম্যাগি মুন ও কারলি দুজনেই মন্তব্য করেন, “যদি কেউ চিনি-মেশানো পানীয়র পরিবর্তে লেবু পানি গ্রহণ করেন, তবে এটি অবশ্যই ভালো বিকল্প।”

এই পানীয় একদিকে শরীরকে আর্দ্র রাখে, অন্যদিকে চিনি খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে

লেবু লালারস বৃদ্ধি করে, যা মুখ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এর অম্লীয় গুণ মুখের পিএইচ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, আর এতে থাকা ভিটামিন সি ব্যাক্টেরিয়াকে প্রতিরোধ করে। অনেক টুথপেস্ট ও মাউথওয়াশে তাই লেবুর সুগন্ধ ব্যবহার করা হয়।

হাড়ের জোড়ের ব্যথা কমায়

‘লেমন এক্সট্রাক্ট’ (যা লেবুর খোসা থেকে তৈরি হয়) প্রদাহ প্রতিরোধে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি অস্থিসন্ধি ব্যথা ও বাতজনিত সমস্যা হ্রাস করতে পারে। চাইলে পানিতে কয়েক ফোঁটা লেবু এক্সট্রাক্টও মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

মেজাজ ভালো করে

সিট্রাসের ঘ্রাণ মস্তিষ্কে সুখানুভূতি তৈরি করে। জাপানের শিতেনোজি বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১০ মিনিট সিট্রাস ঘ্রাণ নেওয়ার পর ৩০ মিনিট পর্যন্ত মন ভালো থাকে। লেবু পানি খেলে শুধু শরীরই ভালো থাকে না, মনও চাঙা হয়।

সাবধানতা অবলম্বন জরুরি

তবে লেবু পানি সবার জন্য উপযোগী নাও হতে পারে। কিছু ঝুঁকির কথাও বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন।

অতিরিক্ত অ্যাসিড দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে। তাই স্ট্র ব্যবহার করা ভালো।
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সে ভুগলে লেবু পানি সমস্যা বাড়াতে পারে।
অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণে বমি বমি ভাব বা কিডনিতে পাথর হতে পারে।
কারও লেবুতে অ্যালার্জি থাকলে এড়িয়ে চলাই ভালো।

সূত্র: বিডিনিউজ