ঢাকা ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
চুপ প্রশাসন, নিষেধাজ্ঞা না মেনে আতশবাজি ফুটল সৈকতে বার্মিজ মার্কেট এলাকার বাসিন্দা বকুল আর নেই: জানাজা বৃহস্পতিবার ভালো কিছু শুরুর আশা পঁচিশের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে আসা পর্যটকদের স্বামীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত খালেদা জিয়া জনজোয়ারে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ঢাকায় পাকিস্তানের স্পিকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জনতার ঢল সংসদ ভবনের পথে খালেদা জিয়ার মরদেহ কক্সবাজারে খালেদা জিয়ার শেষ সফর ছিলো ২০১৭ সালে থার্টি ফার্স্টে লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম হবে: মানতে হবে পুলিশী নির্দেশনা, বার বন্ধ থাকবে শোক পালন: সাগরতীরের তারকা হোটেলগুলোতে থার্টি-ফার্স্টের আয়োজন বাতিল চকরিয়ায় যুবদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যা রুমিন ফারহানা-নীরবসহ ৮ জনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার থার্টি ফার্স্ট নাইট:জেলা পুলিশের কঠোর বিধি-নিষেধ

রোদ-বৃষ্টি মাখা প্রকৃতি: কক্সবাজারে ঘুরছে জ্বর ও শরীর ব্যথা

পুরো বর্ষা জুড়েই কক্সবাজারে থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরেছে। এখন বর্ষার শেষ সপ্তাহ, মাঝে মাঝে মিলছে তীব্র রোদের দেখা, সঙ্গে বেড়েছে গরমও। আর এই রোদ-বৃষ্টি মাখা প্রকৃতিতে ভাসছে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব। কক্সবাজারে এখন ঘরে ঘরে জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে, আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত।

প্রচন্ড জ্বর ও শরীর ব্যথা নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে এসেছেন শহরের বাহারছড়ার বাসিন্দা নওরিন সুলতানা।তার স্বামী শাহাদাত হোসেন বলেন, “প্রথমে আমার জ্বর হয়, তারপর আমার স্ত্রী ও সন্তানের হয়েছে। এখন আমি সুস্থ আছি। তবে আমার স্ত্রী তিনদিন ধরে জ্বর, মাথা ব্যথা ও শরীর ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে। ডাক্তার বলেছে এটা ভাইরাল জ্বর, বেশি পানি খেতে আর বিশ্রাম নিতে হবে”।

একই এলাকার বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেন, “আমাদের বাসায় প্রথমে আমি অসুস্থ হই, তারপর আমার ছোট বোন আর মা-ও আক্রান্ত হয়। তিন দিন পর একটু ভালো লাগছে, কিন্তু এখনও অনেক দুর্বল লাগছে।”

এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রিপন চৌধুরী বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের এলাকায় ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। অনেক রোগী জ্বরের পাশাপাশি সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা ও শরীর ব্যথার সমস্যায় আসছেন”।

তিনি আরও বলেন, “এই সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ভাইরাস সহজে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে যারা বাইরে বেশি ঘোরাফেরা করছেন বা ভিড় এলাকায় যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে”।

এই সংক্রমণের কারণ হিসেবে চিকিৎসক চৌধুরী ধারণা করছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা তার কোনো ভ্যারিয়েন্ট, করোনা ভাইরাস কিংবা ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া।

তবে এসব রোগের চিকিৎসা জটিল নয় জানিয়ে তিনি বলেন, বারে বারে তরল খাবার গ্রহণ, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবন এবং পর্যাপ্ত বিশ্রামে সাধারণত ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব। তবে দুর্বলতা কাটতে ৭-১০ দিন সময় লাগতে পারে। তাই ভয় না পেয়ে মনোবল রেখে প্রতিকার করার পরামর্শ দেন তিনি।

ডা. রিপন চৌধুরী সতর্ক করে বলেন, “আবহাওয়ার পরিবর্তনের এই সময়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হলো ডেঙ্গু, যাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। তাই জ্বর হলে অবশ্যই CBC টেস্ট করুন।যদিও ডেঙ্গুর নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক নেই। তবে অধিক বিশ্রাম ও সঠিক পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সুস্থ হওয়া যায়”।

স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা জনগণকে সচেতন থাকার, নিয়মিত হাত ধোয়া, ভিড় এড়িয়ে চলা, হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

ট্যাগ :

This will close in 6 seconds

রোদ-বৃষ্টি মাখা প্রকৃতি: কক্সবাজারে ঘুরছে জ্বর ও শরীর ব্যথা

আপডেট সময় : ০৮:৩১:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

পুরো বর্ষা জুড়েই কক্সবাজারে থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরেছে। এখন বর্ষার শেষ সপ্তাহ, মাঝে মাঝে মিলছে তীব্র রোদের দেখা, সঙ্গে বেড়েছে গরমও। আর এই রোদ-বৃষ্টি মাখা প্রকৃতিতে ভাসছে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব। কক্সবাজারে এখন ঘরে ঘরে জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে, আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত।

প্রচন্ড জ্বর ও শরীর ব্যথা নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে এসেছেন শহরের বাহারছড়ার বাসিন্দা নওরিন সুলতানা।তার স্বামী শাহাদাত হোসেন বলেন, “প্রথমে আমার জ্বর হয়, তারপর আমার স্ত্রী ও সন্তানের হয়েছে। এখন আমি সুস্থ আছি। তবে আমার স্ত্রী তিনদিন ধরে জ্বর, মাথা ব্যথা ও শরীর ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে। ডাক্তার বলেছে এটা ভাইরাল জ্বর, বেশি পানি খেতে আর বিশ্রাম নিতে হবে”।

একই এলাকার বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেন, “আমাদের বাসায় প্রথমে আমি অসুস্থ হই, তারপর আমার ছোট বোন আর মা-ও আক্রান্ত হয়। তিন দিন পর একটু ভালো লাগছে, কিন্তু এখনও অনেক দুর্বল লাগছে।”

এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রিপন চৌধুরী বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের এলাকায় ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। অনেক রোগী জ্বরের পাশাপাশি সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা ও শরীর ব্যথার সমস্যায় আসছেন”।

তিনি আরও বলেন, “এই সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ভাইরাস সহজে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে যারা বাইরে বেশি ঘোরাফেরা করছেন বা ভিড় এলাকায় যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে”।

এই সংক্রমণের কারণ হিসেবে চিকিৎসক চৌধুরী ধারণা করছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা তার কোনো ভ্যারিয়েন্ট, করোনা ভাইরাস কিংবা ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া।

তবে এসব রোগের চিকিৎসা জটিল নয় জানিয়ে তিনি বলেন, বারে বারে তরল খাবার গ্রহণ, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবন এবং পর্যাপ্ত বিশ্রামে সাধারণত ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব। তবে দুর্বলতা কাটতে ৭-১০ দিন সময় লাগতে পারে। তাই ভয় না পেয়ে মনোবল রেখে প্রতিকার করার পরামর্শ দেন তিনি।

ডা. রিপন চৌধুরী সতর্ক করে বলেন, “আবহাওয়ার পরিবর্তনের এই সময়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হলো ডেঙ্গু, যাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। তাই জ্বর হলে অবশ্যই CBC টেস্ট করুন।যদিও ডেঙ্গুর নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক নেই। তবে অধিক বিশ্রাম ও সঠিক পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সুস্থ হওয়া যায়”।

স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা জনগণকে সচেতন থাকার, নিয়মিত হাত ধোয়া, ভিড় এড়িয়ে চলা, হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।