ঢাকা ০২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
এবার নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু, আজ ষষ্ঠী রাখাইনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে: ড. খলিলুর রহমান রামু বাইপাসে ‘খালেকুজ্জামান চত্বর’ পূনর্বহালের দাবিতে হাজারো মানুষের মানববন্ধন খালেদা জিয়া নারী শিক্ষায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন: রামুতে কাজল ভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩৬ জন নিহত ঐক্যবদ্ধ না হলে গুপ্ত স্বৈরাচারের আবির্ভাব হবে : তারেক রহমান সাংবাদিকদের ৩টি কলিজা লাগে: জামায়াত আমির তারা নাকি জান্নাতের টিকিট দেবে, নাউজুবিল্লাহ: সালাহউদ্দিন আহমদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলেই কি কক্সবাজারে পর্যটনের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে? রোহিঙ্গা ছাড়া জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সম্মেলন: ‘নায়ক ছাড়া নাটক’ মন্তব্য কক্সবাজার সৈকত দখল ও অব্যবস্থাপনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে দুষছে টুরিস্ট পুলিশ টেকনাফে মাটি খুঁড়ে মিললো ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা প্রত্যাবাসন চাই- জাতিসংঘে সম্মেলনের আগে ক্যাম্পে সমাবেশ করে বিশ্বকে রোহিঙ্গাদের বার্তা অবহেলার বোঝা নামিয়ে টেকসই ভবিষ্যতের ডাক চায় সিসিএডি

নামাজের শেষে মুনাজাত ও দোয়া

নামাজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম এবং মুমিনের জন্য আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি সংযোগের মাধ্যম।

নামাজের শেষে মুনাজাত বা দোয়া করা একটি সুন্নাহ আমল, যা রাসুল (সা.) নিজে পালন করতেন এবং সাহাবিদের তা শিখিয়েছেন। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, “তোমাদের প্রতিপালক বলেন: তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।” (সুরা গাফির, আয়াত: ৬০)

এই আয়াত থেকে দোয়ার গুরুত্ব স্পষ্ট। নামাজের শেষে মুনাজাত দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ এ সময় মুমিন আল্লাহর সামনে অধিক নম্র হয়।

নামাজের শেষে দোয়ার নিয়ম

রাসুল (সা.) নামাজের পর হাত তুলে দোয়া করতেন এবং সাহাবিদের তা অনুসরণ করতে বলতেন।

১. সালাম ফিরানোর পর দোয়া

নামাজের সালাম ফিরিয়ে শেষ করার পর মুনাজাত শুরু করতে হবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) নামাজের পর দোয়া করতেন এবং বলতেন, “নামাজের পর দোয়া কবুল হয়।” (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৯৯)

২. হাত তুলে দোয়া করা

দুই হাত কাঁধের সমান উঁচু করে তালু কিবলার দিকে রেখে দোয়া করা সুন্নাহ। রাসুল (সা.) বলেছেন, “আল্লাহ লজ্জাশীল, তাই যখন কোনো বান্দা দুই হাত তুলে দোয়া করে, তিনি তা ফিরিয়ে দেন না।” (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১৪৮৮)

৩. আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ পড়া

মুনাজাত শুরু করার আগে আল্লাহর প্রশংসা (যেমন আলহামদুলিল্লাহ) এবং রাসুল (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়া সুন্নাহ। এটি দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বাড়ায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮০)

৪. নিজের ভাষায় দোয়া করা

দোয়া নিজের ভাষায় করা যায়। আরবিতে বা বাংলায় যেকোনো ভাষায় দোয়া করলে কবুল হয়, যদি আন্তরিকতা থাকে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “দোয়া করার সময় তোমাদের প্রভুর কাছে কী চাও, তা স্পষ্ট করে বলো।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩৪০)

৫. আমিন বলে শেষ করা

দোয়া শেষে “আমিন” বলা সুন্নাহ, যা দোয়ার কবুলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

নামাজের শেষে মুনাজাতের জন্য কয়েকটি হাদিসে বর্ণিত দোয়া উল্লেখ করা হলো:

১. রাসুল (সা.)-এর শেখানো দোয়া

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) নামাজের পর এই দোয়া পড়তেন:

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতাস সালামু ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম।
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি শান্তির উৎস এবং তোমার কাছ থেকে শান্তি আসে, তুমি মহিমান্বিত, হে মহত্ত্ব ও সম্মানের অধিকারী। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৯১)

২. ইস্তিগফারের দোয়া

উচ্চারণ: আসতাগফিরুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ।
অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।
এভাবে তিনবার পড়া। রাসুল (সা.) নামাজের পর ইস্তিগফার করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৪৪)

৩. আয়াতুল কুরসি

নামাজের পর আয়াতুল কুরসি (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫৫) পড়া ফজিলতপূর্ণ। এটি দুশ্চিন্তা দূর করে এবং সুরক্ষা প্রদান করে। (সুনান নাসাই, হাদিস: ৯৯২৮)

৪. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস

এই তিনটি সুরা নামাজের পর পড়া শয়তানের ক্ষতি ও দুশ্চিন্তা থেকে রক্ষা করে। রাসুল (সা.) এগুলো তিনবার পড়তেন। (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ২৯০৩)

নামাজের শেষে দোয়ার ফজিলত অপরিসীম। দোয়া একটি সুন্নাহ আমল, যা নামাজের পূর্ণতা বাড়ায় এবং দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বাড়ায়। রাসুল (সা.)-এর শেখানো দোয়া, ইস্তিগফার, মুমিনের জন্য আধ্যাত্মিক শান্তি ও গুনাহ মাফের মাধ্যম।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

এবার নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

This will close in 6 seconds

নামাজের শেষে মুনাজাত ও দোয়া

আপডেট সময় : ১১:৫৪:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

নামাজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম এবং মুমিনের জন্য আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি সংযোগের মাধ্যম।

নামাজের শেষে মুনাজাত বা দোয়া করা একটি সুন্নাহ আমল, যা রাসুল (সা.) নিজে পালন করতেন এবং সাহাবিদের তা শিখিয়েছেন। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, “তোমাদের প্রতিপালক বলেন: তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।” (সুরা গাফির, আয়াত: ৬০)

এই আয়াত থেকে দোয়ার গুরুত্ব স্পষ্ট। নামাজের শেষে মুনাজাত দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ এ সময় মুমিন আল্লাহর সামনে অধিক নম্র হয়।

নামাজের শেষে দোয়ার নিয়ম

রাসুল (সা.) নামাজের পর হাত তুলে দোয়া করতেন এবং সাহাবিদের তা অনুসরণ করতে বলতেন।

১. সালাম ফিরানোর পর দোয়া

নামাজের সালাম ফিরিয়ে শেষ করার পর মুনাজাত শুরু করতে হবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) নামাজের পর দোয়া করতেন এবং বলতেন, “নামাজের পর দোয়া কবুল হয়।” (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৯৯)

২. হাত তুলে দোয়া করা

দুই হাত কাঁধের সমান উঁচু করে তালু কিবলার দিকে রেখে দোয়া করা সুন্নাহ। রাসুল (সা.) বলেছেন, “আল্লাহ লজ্জাশীল, তাই যখন কোনো বান্দা দুই হাত তুলে দোয়া করে, তিনি তা ফিরিয়ে দেন না।” (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১৪৮৮)

৩. আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ পড়া

মুনাজাত শুরু করার আগে আল্লাহর প্রশংসা (যেমন আলহামদুলিল্লাহ) এবং রাসুল (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়া সুন্নাহ। এটি দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বাড়ায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮০)

৪. নিজের ভাষায় দোয়া করা

দোয়া নিজের ভাষায় করা যায়। আরবিতে বা বাংলায় যেকোনো ভাষায় দোয়া করলে কবুল হয়, যদি আন্তরিকতা থাকে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “দোয়া করার সময় তোমাদের প্রভুর কাছে কী চাও, তা স্পষ্ট করে বলো।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩৪০)

৫. আমিন বলে শেষ করা

দোয়া শেষে “আমিন” বলা সুন্নাহ, যা দোয়ার কবুলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

নামাজের শেষে মুনাজাতের জন্য কয়েকটি হাদিসে বর্ণিত দোয়া উল্লেখ করা হলো:

১. রাসুল (সা.)-এর শেখানো দোয়া

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) নামাজের পর এই দোয়া পড়তেন:

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতাস সালামু ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম।
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি শান্তির উৎস এবং তোমার কাছ থেকে শান্তি আসে, তুমি মহিমান্বিত, হে মহত্ত্ব ও সম্মানের অধিকারী। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৯১)

২. ইস্তিগফারের দোয়া

উচ্চারণ: আসতাগফিরুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ।
অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।
এভাবে তিনবার পড়া। রাসুল (সা.) নামাজের পর ইস্তিগফার করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৪৪)

৩. আয়াতুল কুরসি

নামাজের পর আয়াতুল কুরসি (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫৫) পড়া ফজিলতপূর্ণ। এটি দুশ্চিন্তা দূর করে এবং সুরক্ষা প্রদান করে। (সুনান নাসাই, হাদিস: ৯৯২৮)

৪. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস

এই তিনটি সুরা নামাজের পর পড়া শয়তানের ক্ষতি ও দুশ্চিন্তা থেকে রক্ষা করে। রাসুল (সা.) এগুলো তিনবার পড়তেন। (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ২৯০৩)

নামাজের শেষে দোয়ার ফজিলত অপরিসীম। দোয়া একটি সুন্নাহ আমল, যা নামাজের পূর্ণতা বাড়ায় এবং দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বাড়ায়। রাসুল (সা.)-এর শেখানো দোয়া, ইস্তিগফার, মুমিনের জন্য আধ্যাত্মিক শান্তি ও গুনাহ মাফের মাধ্যম।