কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও উপপরিদর্শক (এসআই) বদিউল আলমকে কেন প্রত্যাহার করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন কেন গঠন করা হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), কক্সবাজারের জেল সুপারসহ সাত জনকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের দায়ের করা রিটের শুনানিনিয়ে রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীয় রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহীনুজ্জামান।
পরে আইনজীবী বলেন, গত ২৬ নভেম্বর রাতে কক্সবাজারের টেকনাফে বাবাকে না পেয়ে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে ধরে নিয়ে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। আমরা বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে এনে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করার আবেদন করি। হাইকোর্ট বিষয়টি আমলে নিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে কোর্টকে অবহিত করার নির্দেশ দেন। এর পরের দিন কক্সবাজার আদালতের মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থী জামিনে মুক্তি পান। এরপর আমরা এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন এবং টেকনাফ মডেল থানার সংশ্লিষ্ট ওসি ও এসআইকে প্রত্যাহার করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে হাইকোর্টে রিট দায়ের করি। রিটের শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করলেন।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ‘গত ২৭ নভেম্বর ভোরে বাবাকে না পেয়ে টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ওই শিক্ষার্থীকে অস্ত্র মামলায় আদালতে পাঠানো হয়।’
‘কক্সবাজারের টেকনাফে থানা পুলিশের দাবি, কিশোরটির বাবা ও তার এক সহযোগীকে আটক করতে গেলে তারা পালিয়ে যান। পরে কিশোরকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছে একটি শপিং ব্যাগে বিদেশি পিস্তল, গুলি, কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।’
‘তবে শিক্ষার্থীর পরিবার ও প্রতিবেশীরা বলছেন, যুবলীগ নেতা বাবাকে ঘরে না পেয়ে গত ২৭ নভেম্বর ভোরে এই শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ওই শিক্ষার্থীকে অস্ত্র মামলায় আদালতে পাঠানো হয়। আর পুলিশ বলছে, ভোরে রাস্তায় অভিযান চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে এই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এ সময় তার হাতে থাকা ব্যাগে মিলেছে বিদেশি পিস্তল ও গুলি। যদিও পুলিশের দায়ের করা মামলার দুই সাক্ষী পুলিশের বক্তব্যের ভিন্ন কথা বলেছেন’ মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।