প্রবাসী ব্যবসায়ী এবং চন্দনাইশ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আহমেদ গত ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেল থেকে বাড্ডা থানার একটি মারামারির ঘটনায় গ্রেফতার হন। এই সুযোগে রংধনু গ্রুপ বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে অনৈতিক উদ্দেশ্যে সংবাদ প্রচার শুরু করে।
জসিম আহমেদ একজন নিবেদিত প্রাণ জনদরদী নেতা, বিগত সরকারের আমলে তিনি ক্ষমতাসীন দলের চন্দনাইশ উপজেলা সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পক্ষের লোক হিসেবে প্রচার করে রংধনু গ্রুপ নিজেদের বিভৎসতা এবং ভয়ংকর অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করছে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।
প্রকৃতপক্ষে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের কর্মকান্ড যাচাই করলে দেখা যায়, রফিক নিজেই কুখ্যাত দুর্নীতিবাজ এবং প্রতারক। হলমার্ক এবং বিসমিল্লাহ গ্রুপের মত লাগামহীন দুর্নীতি করে আসছিলেন রংধনুর চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে রয়েছে প্রতারণা, দুর্নীতি, ভূমিদস্যুতা সহ ব্যাংকে টাকা আত্মসাৎ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের মত অসংখ্য অভিযোগ। এমন ধুরন্ধর দুর্নীতিবাজ রফিক নিজের বিক্রিত সম্পদ আবার ব্যাংকের বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি টাকা লোপাট করে নিয়েছিলেন। দখল, ভূমিদস্যুতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন একসময়ের বাড্ডা এলাকার ডিম বিক্রেতা আন্ডা রফিক।
তার বিশাল ভয়ংকর গুন্ডাবাহিনীর তাণ্ডবে আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ। ভয়ংকর এই রফিক আন্ডা রফিক নামে পরিচিত।জমি দখল করতে দিনে দুপুরে হামলা চালানো হতো স্থানীয় মানুষের বাড়ি বাড়ি, বাড়িতে ঢুকে লুটপাট এবং ভাঙচুর করা হতো বাড়ির মালামাল। তার হিংস্রতা এখানেই থেমেছিল না, বাড়ির যুবতি মেয়েদের তুলে নেয়ার হুমকি দিয়ে থাকত তার গুন্ডা পান্ডারা। লুটপাটের পাশাপাশি অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ দেশের বাইরে পাচার করত আন্ডা রফিক।
ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ দোসর আন্ডা রফিক অপরাধ জগতের মুকুটহীন সম্রাট হয়েও তৎকালীন আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় ছিলেন বহাল তবিয়তে। ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পলায়নের পর আত্মগোপনে চলে যান ভয়ংকর সন্ত্রাসী গডফাদার আন্ডা রফিক। বিদেশের মাটিতে বসে সময়ের আবর্তে সে আবারও দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা করছে, এরই ধারাবাহিকতায় বিশিষ্ট জনদরদি ও সাবেক চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম আহমেদের মালিকানাধীন কক্সবাজারের পাঁচ তারকামানের একটি হোটেলসহ জেসিকা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন।
দুর্নীতিবাজ এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের ঘনিষ্ঠ দোসর রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের দুই পুত্র কাউসার আহমেদ অপু এবং মেহেদী হাসান দীপু সম্প্রতি দেশে এসে পিতার অবৈধ কর্মকান্ডের দায়িত্ব পালন করছেন। দেশবিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত সন্ত্রাসী গডফাদার ভূমিদস্যু আন্ডা রফিক ও তার পুত্রদ্বয়ের অপরাধের লাগাম টেনে ধরা এখন সময়ের দাবি। পিতার অপকর্মের অন্যতম হোতা এই পুত্রদ্বয়কে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা যেন অসংখ্য ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেসিকা গ্রুপের কর্ণধার ও সাবেক চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম আহমেদের মালিকানাধীন হোটেলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে আন্ডা রফিকের নির্দেশে তার অপরাধ জগতের সহযোগী আওয়ামী লীগের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের ঘনিষ্ঠ সহচর ও যুবলীগ নেতা সম্রাটের পৃষ্ঠপোষক কাউসার আহমেদ অপু এবং মেহেদী হাসান দিপু বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জসিম আহমেদকে ঘায়াল করার কাজে লিপ্ত হয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু সিনিয়র নেতাদের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষক রংধনু গ্রুপ তাদের অপরাধ জগতের বিস্তার ঘটানোর চেষ্টা করছেন। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র জনতাকে নিপীড়নকারী এই ভূমিদস্যূ পরিবারের সদস্যরা ফোনে হুমকি ধমকি দিচ্ছেন জসিম আহমেদের পরিবারসহ জেসিকা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের।
চন্দনাইশ সহ চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের জনসাধারণ আন্ডা রফিকের এই ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ছাত্র জনতা ফ্যাসিস্ট সরকারকে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করলেও কিছু কিছু প্রেতাত্মা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সুবিধাভোগী নেতাদের ছত্রছায়ায় তাদের অপরাধের ডানা পুনরায় বিস্তারের চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাই এরা সাধারণ ব্যবসায়ি জনদরদী নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে নিজেদের কুকর্ম ঢাকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কুখ্যাত অপরাধী আন্ডা রফিক ও তার পুত্রদয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন লোক দিয়ে জসিম আহমেদের পরিবার আত্মীয়-স্বজনকে ছাত্র হত্যার মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের মাধ্যমে আন্ডা রফিক ও তার দুই পুত্র কাউসার আহমেদ অপু এবং মেহেদী হাসান দিপু জেসিকা গ্রুপের হোটেলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জসিম সাহেবকে মালিকানা ছেড়ে দিয়ে রংধনু গ্রুপের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছিলেন। ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন এর মাধ্যমে সরকার বিতাড়িত হলে তখনকার মত রক্ষা পায় জসিম আহমেদের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
উল্লেখ্য, জসিম আহমেদ একজন প্রবাসী হোটেল ব্যবসায়ী হওয়ায় তার সুদক্ষ নেতৃত্বে জেসিকা গ্রুপের মালিকাধীন হোটেলটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। আওয়ামী মদদপুষ্ট সাবেক কায়েতপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম অপরাধ দক্ষতা আর জালিয়াতির মাধ্যমে আন্ডা বিক্রেতা রফিক বনে গেলেন শিল্পপতি রফিকুল ইসলাম। দেশের সাধারণ জনগণ এবং আগামী সরকারের রোশানলে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প মালিকরা আশা করছেন আওয়ামী দোসরদের সারা দেশে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা বন্ধ করতে বর্তমান সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
প্রতিবাদকারিঃ
তানজিনা সুলতানা
চেয়ারম্যান, জেসিকা গ্রুপ।