ঢাকা ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সেহরি ও ইফতারে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয় কল দিতে বললেন শেখ সাদী, ফোনে টাকা নেই পরীমণির ফেসবুকে ‘ডাকাত’ গুজব! নিয়ন্ত্রণে আছে আইনশৃঙ্খলা – ওসি উখিয়া চকরিয়ায় ছয় দোকান,চৌদ্দটি বসতঘর পুড়ে ছাই সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত মাদকের এডি দিদারের প্রত্যাহার চেয়ে সাংবাদিকদের মানববন্ধন আমি আর বাঁচতে চাইনা,ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ’ চেয়ে কক্সবাজারে মশাল মিছিল কুতুবদিয়ায় জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালিত কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে নানান কর্মসূচী মাধ্যমে সালাউদ্দিন আহমেদের ১১ তম গুম দিবস পালন কক্সবাজারে মার্কিন নারীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার “ এফ-কমার্স এন্ড ডিজিটাল মার্কেটিং ” শীর্ষক প্রশিক্ষণের সনদ বিতরণ সম্পন্ন কক্সবাজারে দুর্যোগ প্রস্তুতি মহড়া ও র‍্যালী অনুষ্ঠিত উখিয়ায় ঢালুতে আটকে আছে মালবাহী লরি! দীর্ঘ যানজট হলেও জানেন না হাইওয়ে ওসি মাগুরার শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দিয়ে আওয়ামী লীগকে ‘অপ্রাসঙ্গিক’ করা হবে : হাসনাত

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ এর মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ‘নাৎসি বাহিনীর’ মত ‘অপ্রাসঙ্গিক’ ঘোষণা করার কথা বলেছেন গণ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।একইসঙ্গে ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ‘মুজিববাদী’ সংবিধান হিসেবে তুলে ধরে তার ‘কবর’ রচনা করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

রোববার রাজধানীর বাংলামোটরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত বলেন, এরই মধ্যে ঘোষণাপত্রের খসড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়েছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ ডিসেম্বর এই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র আরো আগে দেওয়া উচিত ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “মানুষ যে আশা-আকাঙ্খা নিয়ে লড়াই করেছে, ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে, সেই প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করতে আগামী ৩১ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আগামীর বাংলাদেশের ঘোষণাপত্র ‘জুলাই প্রোক্লেমেশন’ উপস্থাপন করা হবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, “জনগণ কেমন বাংলাদেশ চায়, আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে তা এই ঘোষণাপত্রে থাকবে। এখানে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিতসহ জনগণের অধিকারের কথা তুলে ধরা হবে।

“এই ঘোষণাপত্রের মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা ও মুজববাদী ৭২’র সংবিধানের কবর রচনা করা হবে।”

শনিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও আন্দোলনের সমর্থক নাগরিকদের নিয়ে গড়া সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা নিজেদের ফেইসবুকে ৩১ ডিসেম্বর নিয়ে পোস্ট দেন। এসব পোস্টে ওইদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জমায়েতের ইঙ্গিত দেওয়া হয়। সেদিন জুলাই গণআন্দোলনের ‘ঘোষণাপত্র’ উপস্থাপনের খবরও এসেছে সংবাদমাধ্যমে।

সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাই মাসের শুরু থেকে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গড়ে ওঠা গণআন্দোলনে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।

আন্দোলনের সময় সহিংসতায় হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায় বলে আন্দোলনকারীদের তরফে বলা হচ্ছে। ক্ষমতার পালাবদলের পর হত্যা, গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-এমপি, দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা, পুলিশের সাবেক আইজিপি, সেনা কর্মকর্তার বিচার চলছে।

‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

অক্টোবরে রাষ্ট্রপতির অপসারণের আন্দোলনের সময় ‘প্রোক্লেমেশনের অব রিপাবলিকের’ দাবি জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বাহাত্তরের সংবিধান বাতিলের দাবিও ছিল তাদের।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “বিপ্লবের ঘোষণাপত্র আরো আগেই দেওয়া প্রয়োজন ছিল। তবে রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন সেক্টর থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।”

তিনি বলেন, “বিগত যেসব ব্যবস্থা মানুষ গ্রহণ করেনি এবং নতুন যেসব ব্যবস্থা চালু হবে, তার মধ্যে পার্থক্য হিসেবে এই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের একটি দলিল হয়ে থাকবে। যারা দেশ পরিচালনায় আসবেন, এই ঘোষণাপত্র তাদের জন্য একটি নির্দেশক হিসেবে থাকবে।”

জুলাই অভ্যুত্থানকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ উপস্থাপনের জন্য শহীদ মিনারে মঙ্গলবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াসহ ১৫৮ জন সমম্বয়ক শপথ গ্রহণ করবেন। এই অনুষ্ঠানে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা রয়েছে।

ঘোষণাপত্রে উপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তির ১৯৪৭ সাল, এরপর ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, পাকিস্তান থেকে মুক্তির ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থান, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান প্রভৃতি বিষয়সহ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সকল আন্দোলন সংগ্রাম স্থান পাবে। একইসঙ্গে জনআকাঙ্খাকে স্থান দেওয়ার কথা বলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ, মিডিয়া সেলের সদস্য জাহিদ আহসানসহ অন্যরা।

সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

সেহরি ও ইফতারে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়

This will close in 6 seconds

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দিয়ে আওয়ামী লীগকে ‘অপ্রাসঙ্গিক’ করা হবে : হাসনাত

আপডেট সময় : ০৯:৫২:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ এর মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ‘নাৎসি বাহিনীর’ মত ‘অপ্রাসঙ্গিক’ ঘোষণা করার কথা বলেছেন গণ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।একইসঙ্গে ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ‘মুজিববাদী’ সংবিধান হিসেবে তুলে ধরে তার ‘কবর’ রচনা করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

রোববার রাজধানীর বাংলামোটরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত বলেন, এরই মধ্যে ঘোষণাপত্রের খসড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়েছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ ডিসেম্বর এই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র আরো আগে দেওয়া উচিত ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “মানুষ যে আশা-আকাঙ্খা নিয়ে লড়াই করেছে, ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে, সেই প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করতে আগামী ৩১ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আগামীর বাংলাদেশের ঘোষণাপত্র ‘জুলাই প্রোক্লেমেশন’ উপস্থাপন করা হবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, “জনগণ কেমন বাংলাদেশ চায়, আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে তা এই ঘোষণাপত্রে থাকবে। এখানে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিতসহ জনগণের অধিকারের কথা তুলে ধরা হবে।

“এই ঘোষণাপত্রের মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা ও মুজববাদী ৭২’র সংবিধানের কবর রচনা করা হবে।”

শনিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও আন্দোলনের সমর্থক নাগরিকদের নিয়ে গড়া সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা নিজেদের ফেইসবুকে ৩১ ডিসেম্বর নিয়ে পোস্ট দেন। এসব পোস্টে ওইদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জমায়েতের ইঙ্গিত দেওয়া হয়। সেদিন জুলাই গণআন্দোলনের ‘ঘোষণাপত্র’ উপস্থাপনের খবরও এসেছে সংবাদমাধ্যমে।

সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাই মাসের শুরু থেকে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গড়ে ওঠা গণআন্দোলনে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।

আন্দোলনের সময় সহিংসতায় হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায় বলে আন্দোলনকারীদের তরফে বলা হচ্ছে। ক্ষমতার পালাবদলের পর হত্যা, গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-এমপি, দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা, পুলিশের সাবেক আইজিপি, সেনা কর্মকর্তার বিচার চলছে।

‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

অক্টোবরে রাষ্ট্রপতির অপসারণের আন্দোলনের সময় ‘প্রোক্লেমেশনের অব রিপাবলিকের’ দাবি জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বাহাত্তরের সংবিধান বাতিলের দাবিও ছিল তাদের।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “বিপ্লবের ঘোষণাপত্র আরো আগেই দেওয়া প্রয়োজন ছিল। তবে রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন সেক্টর থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।”

তিনি বলেন, “বিগত যেসব ব্যবস্থা মানুষ গ্রহণ করেনি এবং নতুন যেসব ব্যবস্থা চালু হবে, তার মধ্যে পার্থক্য হিসেবে এই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের একটি দলিল হয়ে থাকবে। যারা দেশ পরিচালনায় আসবেন, এই ঘোষণাপত্র তাদের জন্য একটি নির্দেশক হিসেবে থাকবে।”

জুলাই অভ্যুত্থানকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ উপস্থাপনের জন্য শহীদ মিনারে মঙ্গলবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াসহ ১৫৮ জন সমম্বয়ক শপথ গ্রহণ করবেন। এই অনুষ্ঠানে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা রয়েছে।

ঘোষণাপত্রে উপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তির ১৯৪৭ সাল, এরপর ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, পাকিস্তান থেকে মুক্তির ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থান, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান প্রভৃতি বিষয়সহ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সকল আন্দোলন সংগ্রাম স্থান পাবে। একইসঙ্গে জনআকাঙ্খাকে স্থান দেওয়ার কথা বলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ, মিডিয়া সেলের সদস্য জাহিদ আহসানসহ অন্যরা।

সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম