ঢাকা ০৯:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ছেড়ে দেয়া হলো পুলিশ হেফাজতে থাকা ২৭ আন্দোলনকারীকে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণা চ্যালেঞ্জিং হলেও সুস্থ-সবল প্রজন্ম গড়ে তুলতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা জিনিয়াসহ আটকরা এখনো থানায় জুলাই আন্দোলনের নেতা জিনিয়াসহ আটকদের মুক্তি দাবী ও শিক্ষকদের আন্দোলনে উদীচীর সংহতি দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে? টেকনাফে এসে অপহরণের শিকার সেন্টমার্টিনের যুবক: ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি স্বাধীনতাবিরোধী ও সরকারসৃষ্ট দল দুটি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়: হাফিজ উদ্দিন বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমানায় মাসব্যাপী জরিপ করবে নরওয়ে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দিলে ‘খারাপ নজির’ সৃষ্টি হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে: সেনাপ্রধান যুবকের জরিমানাসহ ৭ বছরের কারাদণ্ড বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি অংশে জরিপে নামছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে ৪ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইইউ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হলেন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান
সারাদিন উখিয়ায় যা হলো

ছেড়ে দেয়া হলো পুলিশ হেফাজতে থাকা ২৭ আন্দোলনকারীকে

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলন চলাকালে আটক হওয়া ২৭ জনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে ৭ ঘন্টা পর সর্বদলীয় বৈঠকের মাধ্যমে উখিয়া থানা থেকে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন।

মো. জসীম উদ্দিন বলেন, “২৫ তারিখ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কক্সবাজার সফর রয়েছে। তার আগে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সড়কে বিশৃঙ্খলা করবেনা ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করবেনা এই শর্তে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।”

আন্দোলকারীদের আটকের কারণ জানতে চাইলে জসীম উদ্দিন বলেন, তারা সড়কে বিশৃঙ্খলা করছিলো, তাই জনগণের জানমালের স্বার্থে তাদেরকে আমরা হেফাজতে নিয়েছিলাম।

আন্দোলনকারীদের মুক্তির আগে থানায় পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একটি বৈঠকের কথা জানিয়েছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজা উদ্দিন। বৈঠকে অংশ নেন বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত, গণ অধিকার পরিষদের নেতাসহ ২০ সদস্যের একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে সুজা উদ্দিন বলেন, “আমরা একটা ঐক্যমত পেপার করেছি। সেখানে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবী যেনো আদায় হয় আর তাদের উপর যে অন্যায় হয়েছে সে বিষয় গুলো উল্লেখ আছে। দাবী আদায়ে সর্বোচ্চ জায়গা পর্যন্ত কথা বলা হবে।”

বিকেল ৫ টার দিকে মুক্তিপ্রাপ্তরা সহ সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল ও আন্দোলনকারীরা উখিয়া শহীদ মিনারে জড়ো হন ।

সেখানে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সরোয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফর থাকায় আন্দোলন স্থগিত করার পাশাপাশি ‘দাবী আদায়ে’ প্রধান উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠকের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আন্দোলনে সংহতি জানাতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হওয়া ২৪’ এর গণ অভ্যুত্থানের সমন্বয়ক ও বাগছাসের সংগঠক জিনিয়া শারমিন রিয়া মুক্তির পর বলেন, আন্দোলনকারীদের উপর হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি’র পাশাপাশি সৃষ্ট ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার দাবী জানাচ্ছি।

শিক্ষক আন্দোলনের সমন্বয়ক শামিম হোসেন বলেন, আমাদের অন্যায়ভাবে গালিগালাজ করে ওসি সাহেব গ্রেফতার করে। আমাদের হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।

এর আগে সকাল ৮ টার দিকে আন্দোলন চলাকালে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে নারী সহ তিন শিক্ষক গুরুতর আহত হয়, আটক করা হয় আন্দোলনের মুখপাত্র সাইদুল ইসলাম শামীম সহ অন্তত ৭ জনকে।

এর কিছুক্ষণ পর সকাল ১১ টার দিকে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের দেখতে যাওয়া আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ।

বাগছাসের নেতা জিনিয়া শারমিন রিয়া সহ অন্তত ২০ জন কে দ্বিতীয় দফায় পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে উখিয়া থানা ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে কমপক্ষে ৫ শতাধিক আন্দোলনকারী। এসময় থানার দিকে মাইক লাগিয়ে ওসির পদত্যাগ দাবী করে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে আন্দোলনকারীরা। প্রিজন ভ্যান দিয়ে থানায় প্রবেশের পথ আটকে দেয়া হলে ফের পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশকে ফের লাঠিপেটা করতে দেখা যায়।

পরে দুপুর দেড়টার দিকে থানায় প্রবেশ করেন সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। বিকেল ৩ টায় আন্দোলনকারীরা ফটকের তালা ভেঙ্গে থানার ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ আরেকদফা লাঠিচার্জ করে। এতে এনসিপির জেলা সংগঠক খালিদ বিন সাইদ ও গণমাধ্যম কর্মীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানীয় বাংলাদেশি শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। তবে অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে গত জুলাইয়ে প্রায় দেড় হাজার স্থানীয় শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষকরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলনে নামেন।

গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত তারা কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এসময় উভয় পাশে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে, যাত্রী ও চালকেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা জানান, প্রশাসন সমাধানের আশ্বাস দিলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, যুক্তরাষ্ট্র ফান্ড বন্ধ করায় ক্যাম্পের প্রায় প্রকল্প ঘিরে অর্থ সংকট চলছে। ইউনিসেফেরও অর্থ সংকট রয়েছে।

মিজানুর রহমান বলেন, তারা (ইউনিসেফ) আমাদের জানিয়েছে, তারা চেষ্টা করছে আন্দোলনরত শিক্ষকদের জন্য কিছু করতে। যদি টাকা না পায় কী করার আছে। তবে স্থানীয়রাও তো ক্ষতিগ্রস্ত, এসব চাকরির মাধ্যমে তারা কিছুটা স্বস্তি পায়।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, প্রকল্পটি ইউনিসেফের অর্থায়নে হয়ে থাকে। অর্থ সংকটের কারণে ওই প্রকল্পের ১ হাজার ১৭৯ জন স্থানীয় শিক্ষকের চাকরির চুক্তি শেষ হয়। কিন্তু শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে একটি বৈঠক হয়, সেখানে এক মাসের মধ্যে ইউনিসেফ তহবিল সংগ্রহ করতে পারলে শিক্ষকদের চাকরিতে পুনর্বহালের চেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১ মাস পার হলেও তহবিল সংগ্রহ হয়নি।

জেলা প্রশাসক বলেন, ইতোমধ্যে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাধ্যমে আশ্রয়শিবিরে ১৫০টি শিক্ষাকেন্দ্র চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। চাকরি হারানো শিক্ষকদের মধ্য থেকে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই প্রকল্পে চাকরি দেওয়া হবে, যা ৭ আগস্ট আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেও জানানো হয়েছে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

ছেড়ে দেয়া হলো পুলিশ হেফাজতে থাকা ২৭ আন্দোলনকারীকে

This will close in 6 seconds

সারাদিন উখিয়ায় যা হলো

ছেড়ে দেয়া হলো পুলিশ হেফাজতে থাকা ২৭ আন্দোলনকারীকে

আপডেট সময় : ০৭:০২:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলন চলাকালে আটক হওয়া ২৭ জনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে ৭ ঘন্টা পর সর্বদলীয় বৈঠকের মাধ্যমে উখিয়া থানা থেকে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন।

মো. জসীম উদ্দিন বলেন, “২৫ তারিখ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কক্সবাজার সফর রয়েছে। তার আগে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সড়কে বিশৃঙ্খলা করবেনা ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করবেনা এই শর্তে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।”

আন্দোলকারীদের আটকের কারণ জানতে চাইলে জসীম উদ্দিন বলেন, তারা সড়কে বিশৃঙ্খলা করছিলো, তাই জনগণের জানমালের স্বার্থে তাদেরকে আমরা হেফাজতে নিয়েছিলাম।

আন্দোলনকারীদের মুক্তির আগে থানায় পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একটি বৈঠকের কথা জানিয়েছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজা উদ্দিন। বৈঠকে অংশ নেন বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত, গণ অধিকার পরিষদের নেতাসহ ২০ সদস্যের একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে সুজা উদ্দিন বলেন, “আমরা একটা ঐক্যমত পেপার করেছি। সেখানে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবী যেনো আদায় হয় আর তাদের উপর যে অন্যায় হয়েছে সে বিষয় গুলো উল্লেখ আছে। দাবী আদায়ে সর্বোচ্চ জায়গা পর্যন্ত কথা বলা হবে।”

বিকেল ৫ টার দিকে মুক্তিপ্রাপ্তরা সহ সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল ও আন্দোলনকারীরা উখিয়া শহীদ মিনারে জড়ো হন ।

সেখানে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সরোয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফর থাকায় আন্দোলন স্থগিত করার পাশাপাশি ‘দাবী আদায়ে’ প্রধান উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠকের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আন্দোলনে সংহতি জানাতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হওয়া ২৪’ এর গণ অভ্যুত্থানের সমন্বয়ক ও বাগছাসের সংগঠক জিনিয়া শারমিন রিয়া মুক্তির পর বলেন, আন্দোলনকারীদের উপর হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি’র পাশাপাশি সৃষ্ট ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার দাবী জানাচ্ছি।

শিক্ষক আন্দোলনের সমন্বয়ক শামিম হোসেন বলেন, আমাদের অন্যায়ভাবে গালিগালাজ করে ওসি সাহেব গ্রেফতার করে। আমাদের হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।

এর আগে সকাল ৮ টার দিকে আন্দোলন চলাকালে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে নারী সহ তিন শিক্ষক গুরুতর আহত হয়, আটক করা হয় আন্দোলনের মুখপাত্র সাইদুল ইসলাম শামীম সহ অন্তত ৭ জনকে।

এর কিছুক্ষণ পর সকাল ১১ টার দিকে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের দেখতে যাওয়া আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ।

বাগছাসের নেতা জিনিয়া শারমিন রিয়া সহ অন্তত ২০ জন কে দ্বিতীয় দফায় পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে উখিয়া থানা ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে কমপক্ষে ৫ শতাধিক আন্দোলনকারী। এসময় থানার দিকে মাইক লাগিয়ে ওসির পদত্যাগ দাবী করে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে আন্দোলনকারীরা। প্রিজন ভ্যান দিয়ে থানায় প্রবেশের পথ আটকে দেয়া হলে ফের পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশকে ফের লাঠিপেটা করতে দেখা যায়।

পরে দুপুর দেড়টার দিকে থানায় প্রবেশ করেন সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। বিকেল ৩ টায় আন্দোলনকারীরা ফটকের তালা ভেঙ্গে থানার ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ আরেকদফা লাঠিচার্জ করে। এতে এনসিপির জেলা সংগঠক খালিদ বিন সাইদ ও গণমাধ্যম কর্মীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানীয় বাংলাদেশি শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। তবে অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে গত জুলাইয়ে প্রায় দেড় হাজার স্থানীয় শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষকরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলনে নামেন।

গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত তারা কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এসময় উভয় পাশে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে, যাত্রী ও চালকেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা জানান, প্রশাসন সমাধানের আশ্বাস দিলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, যুক্তরাষ্ট্র ফান্ড বন্ধ করায় ক্যাম্পের প্রায় প্রকল্প ঘিরে অর্থ সংকট চলছে। ইউনিসেফেরও অর্থ সংকট রয়েছে।

মিজানুর রহমান বলেন, তারা (ইউনিসেফ) আমাদের জানিয়েছে, তারা চেষ্টা করছে আন্দোলনরত শিক্ষকদের জন্য কিছু করতে। যদি টাকা না পায় কী করার আছে। তবে স্থানীয়রাও তো ক্ষতিগ্রস্ত, এসব চাকরির মাধ্যমে তারা কিছুটা স্বস্তি পায়।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, প্রকল্পটি ইউনিসেফের অর্থায়নে হয়ে থাকে। অর্থ সংকটের কারণে ওই প্রকল্পের ১ হাজার ১৭৯ জন স্থানীয় শিক্ষকের চাকরির চুক্তি শেষ হয়। কিন্তু শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে একটি বৈঠক হয়, সেখানে এক মাসের মধ্যে ইউনিসেফ তহবিল সংগ্রহ করতে পারলে শিক্ষকদের চাকরিতে পুনর্বহালের চেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১ মাস পার হলেও তহবিল সংগ্রহ হয়নি।

জেলা প্রশাসক বলেন, ইতোমধ্যে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাধ্যমে আশ্রয়শিবিরে ১৫০টি শিক্ষাকেন্দ্র চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। চাকরি হারানো শিক্ষকদের মধ্য থেকে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই প্রকল্পে চাকরি দেওয়া হবে, যা ৭ আগস্ট আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেও জানানো হয়েছে।