“চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক: ডিভাইডারসহ চার লেন চাই, নিরাপদ যাত্রা হোক সবার অধিকার” স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে দেড়শত বছরের গৌরবময় ইতিহাসের ধারক কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
শনিবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে সাংগঠনিক যাত্রা শুরু করা প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের বর্ণাঢ্য শপথ ও অভিষেক অনুষ্ঠানে এই দাবি জানানো হয়।
এছাড়া ‘আলোকিত কক্সবাজার বিনির্মাণে আমরা কসউবিয়ান’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় কক্সবাজারের উন্নয়ন ও শিক্ষার প্রসারে পরিষদের অঙ্গীকার তুলে ধরা হয় এবং ‘কসউবিয়ান শিক্ষাবৃত্তি’ চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে শপথ ও অভিষেক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবগঠিত একচল্লিশ সদস্যের নির্বাহী পরিষদের যাত্রা শুরু হয়। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে দেশের অন্যতম প্রাচীন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুসংগঠিত প্ল্যাটফর্ম পেল বলে জানায় কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
নবনির্বাচিত পরিষদের নেতৃত্বে রয়েছেন প্রবীণ শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম (১৯৬৫ ব্যাচ), যিনি প্রধান নির্বাহী সংগঠকের দায়িত্ব পেয়েছেন।
এছাড়া সাংগঠনিক সমন্বয়ক হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোহিব্বুল মোক্তাদীর তানিম (১৯৯৮ ব্যাচ) এবং সাংগঠনিক সচিব হিসেবে তরুণ উদ্যোক্তা সাঈদ বিন জেবর (২০০২ ব্যাচ) দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৬৫ সাল থেকে শুরু করে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্রদের প্রতিনিধিত্বে এই একচল্লিশ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছে।
শপথ পরবর্তী বক্তব্যে এম এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, “এই পরিষদ শুধুমাত্র প্রাক্তন ছাত্রদের মিলনকেন্দ্র নয়, বরং কক্সবাজারের শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন এবং মানবিক সেবায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। একইসাথে প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
সাংগঠনিক সমন্বয়ক মোহিব্বুল মোক্তাদীর তানিম বলেন, “এটি একটি অরাজনৈতিক, অসাম্প্রদায়িক, সেবামূলক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। পরিষদ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাজ করবে এবং কক্সবাজারের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষায় অবদান রাখবে।”
এছাড়াও প্যানেল আলোচনায় বক্তারা বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি ও বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। তাই এই অঞ্চলের নিরাপত্তা, উন্নয়ন এবং স্থানীয় অধিকার রক্ষায় প্রাক্তন ছাত্রদের সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তারা আশা প্রকাশ করেন যে এই পরিষদ কক্সবাজারের অগ্রগতির পথে একটি শক্তিশালী প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে।
সমাপনী বক্তব্যে সাংগঠনিক সচিব সাঈদ বিন জেবর বলেন, “এই পরিষদ স্কুলের প্রতিটি প্রাক্তন ছাত্রকে প্রতিনিধিত্ব করে। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক অটুট রেখে আমরা কক্সবাজার তথা বাংলাদেশের কল্যাণে নিবেদিত থাকব।”
অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ১৯৬৫ সাল থেকে শুরু করে প্রায় পঞ্চাশটি ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্রদের প্রতিনিধি, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক এবং বর্তমান ছাত্রদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শপথ ও অভিষেক শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় গানের দল ‘পেনোয়া’। চমৎকার পরিবেশনার মধ্যদিয়ে পেনোয়ার ভোকাল ও কসউবির প্রাক্তনী ইয়াসির আরাফাত বলেন, আমরা তো সুরে ও কথায় এই শহরের কথা বলি, এই স্কুল সেই কথারই প্রাসঙ্গিক উপাদান।
সবশেষে পুরো অনুষ্ঠানে অনন্য মাত্রা এনে দেয় পেনোয়া৷