বঙ্গোপসাগর থেকে জেগে উঠা দুই দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী ও কুতুবদিয়া নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-২ আসন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার তিন আসনে প্রার্থী দিলেও এই আসন খালি রেখেছে দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি।
গতকাল (৩ নভেম্বর) দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণার সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আসনটির প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে।
বিএনপির এমন সিদ্ধান্তে কক্সবাজারের রাজনৈতিক মহলে নানা গুঞ্জন চলছে, অনেকেই মনে করছেন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জোটগত কৌশলের অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে গড়ে উঠা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর সাথে বিএনপি জোট করছে কিনা এমন কোন ঘোষণা এখন পর্যন্ত আসেনি।
এনসিপির নির্বাচন কমিটির প্রধান ও দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) গণমাধ্যম’কে জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনি আসনে এনসিপি কোনো প্রার্থী দেবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, জোট হলে সম্ভাব্য আসন সমঝোতার অংশ হিসেবে দুই দল থেকে ‘ছাড় দেওয়ার’ এমন সিদ্ধান্তগুলো পরিলক্ষিত হচ্ছে।
অন্যদিকে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এর মতো মেগাপ্রকল্প ঘিরে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার আন্তর্জাতিক ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব তৈরি হয়েছে।
এনসিপির একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে কক্সবাজার-২ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এ এস এম সুজা উদ্দিন।
একসময়ের আলোচিত সাংবাদিক সুজার জন্ম পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালীতে, তরুণ এই রাজনীতিবিদকে বলা হচ্ছে এনসিপি’র ট্রাম্পকার্ড।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ দল যদি মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি আশাবাদী কারণ মহেশখালী-কুতুবদিয়ার মানুষ আমাকে ভালোবাসেন। সবাইকে একসাথে নিয়ে একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ জনপদ গড়ে তুলতে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।’
বিএনপির সাথে সমঝোতা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ এটি আসলে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে, তবে এখন পর্যন্ত এরকম কিছু হয়নি। ‘
কক্সবাজারের বাকি তিনটি আসনে বিএনপির যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তারা সবাই দলটির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য।
চকরিয়া-পেকুয়া নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-১ আসনে বিএনপির জাতীয় কমিটির স্থায়ী সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমেদ মনোনয়ন পেয়েছেন।
কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান কাজলকে সদর, রামু ও ঈঁদগাহ নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-৩ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী উখিয়া-টেকনাফ নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-৪ থেকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, কক্সবাজারে বিএনপির রাজনৈতিক ঐতিহ্য এবং তুমুল জনপ্রিয়তা আছে। আগামী নির্বাচনেও ইনশাআল্লাহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই জেলার সব আসনে বিএনপির প্রার্থীরা জয়লাভ করবেন এবং সে লক্ষ্যে নেতাকর্মীরা মাঠে আছেন।’
সর্বশেষ আওয়ামী লীগের আমলে তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্যে শুধুমাত্র ২০১৮ সালে কক্সবাজারের সব আসনে বিএনপির প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন।
তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পেলেও কক্সবাজারের চারটি আসনের তিনটিতেই জিতেছিলেন বিএনপি সমর্থিত তৎকালীন জোটের প্রার্থীরা।
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: 




















