এক ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সিম থাকলে সেগুলো শনিবার থেকে বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে বিটিআরসি।
গত ছয় মাস আগে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের মাধ্যমে অতিরিক্ত সিম ‘ডি-রেজিস্টার’ করতে বলেছিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসি। অতিরিক্ত সিম বন্ধ করতে গিয়ে গ্রাহক ভোগান্তির আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদুল বারী গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “অতিরিক্ত সিম বন্ধ করতে ১ নভেম্বর থেকে ফোর্স করবে বিটিআরসি। এই কাজটা ধাপে ধাপে করা হবে। যাদের অতিরিক্ত সিম আছে তাদের তালিকা করে কোন অপারেটরের কয়টা সিম আছে তা আগে নির্ধারণ করা হবে।
“তারপর অপারেটরগুলোকে অতিরিক্ত সিম বন্ধ করতে বলা হবে। এই ক্ষেত্রে অপারেটরগুলো সবচেয়ে কম ব্যবহৃত সিমটি বন্ধ করে দিবে।”
তবে এই প্রক্রিয়ায় কোন ব্যক্তির ব্যবহৃত প্রধান সিমটি বন্ধ হওয়ার শঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
তিনি বলছেন, “আগে অতিরিক্ত সিম দিয়ে ভেহিক্যাল ট্রাকারসহ বিভিন্ন ধরনের আইওটি ডিভাইস চালানো হতো। তবে এখন আই ও টি সিম গুলো একেবারেই আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে অতিরিক্ত সিম রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
“ধাপে ধাপে একক ব্যক্তির নামে সিমের সংখ্যা আরো কমিয়ে আনা হবে বলেও বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে চাপ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন। তিনি।
এর আগে গত মে মাসে কমিশন সভায় ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ সিমের সংখ্যা ১৫ থেকে ১০টিতে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত দেয় বিটিআরসি। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ফলে ১০টির অতিরিক্ত সিম আছে, এমন ২৬ লাখ গ্রাহকের ৬৭ লাখ সিম বন্ধ করে দেওয়া হবে।
একক নামে কতো সিম আছে, সেটা জানা যাবে *১৬০০১# ডায়াল করে। ১০টির অতিরিক্ত সিম গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে ‘ডি-রেজিস্টার’ করতে পারবেন।
২০১৭ সালে একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করা যাবে বলে নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। এর আট বছর পর চলতি বছরের ১৯ মে কমিশন সভায় ১৯ মে সিমের সংখ্যা কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি। সিম কমানোর এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কমিশন এ-সংক্রান্ত পর্যালোচনা করেছে।
তাদের পর্যালোচনা বলছে, এতগুলো সিম একজন গ্রাহক ব্যবহার করেন না। পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা, অপারেটরদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক অনুশীলন চর্চা বিবেচনায় একজনের নামের বিপরীতে সিম সর্বোচ্চ ১০টি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কমিশনের মে মাসের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার। আর বিক্রি হওয়া সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ৬২ লাখ। এসব গ্রাহকের মধ্যে পাঁচটি বা তার কম সিম রয়েছে ৮০ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহকের।
পাঁচ থেকে ১০টি পর্যন্ত সিম রয়েছে ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহকের। ১১ থেকে ১৫টি পর্যন্ত সিম রয়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ গ্রাহকের।
অপারেটরগুলোর ১৫টি সিমধারী গ্রাহকের রেজিস্ট্রেশনের তথ্য পর্যালোচনা করে কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, “দেশে প্রতিমাসে ৫০ লাখ সিম বিক্রি হয়। গ্রাহকের সিম নিবন্ধনের তথ্য পর্যালোচনা করে আরও দেখা গেছে, একজন গ্রাহক একদিনে দুই বা ততোধিক সিম নিবন্ধন করছেন, যা অস্বাভাবিক। কিছু অসাধু রিটেইলার (খুচরা ব্যবসায়ী) গ্রাহকের বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ) সংরক্ষণ করে অতিরিক্ত সিম নিবন্ধন করে থাকেন, যা ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”
সূত্র:বিডিনিউজ
টিটিএন ডেস্ক: 














