ঢাকা ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পুলিশের অসহযোগীতার অভিযোগ ভুক্তভোগীর ডাকাত শাহীনের ‘ক্যাশিয়ার’ ইকবালসহ র‍‍্যাবের হাতে দু’জন গ্রেফতার এসএসসিতে সাফল্য ধরে রেখেছে কুতুবদিয়া মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজ পায়ুপথে ইয়াবা পাচার: বিএনপি নেতা আটক পাঁচ পুলিশ সদস্য ক্লোজড “আমার ছেলেটা বুকে ফিরে আসুক” উখিয়ার ইউপি সদস্য কামাল হত্যা: বিএনপি নেতাসহ ৮ জনের নামে হত্যা মামলা উখিয়ায় দোকানদার কর্তৃক নারীকে মারধর ও শ্লীলতাহানি, থানায় মামলা ডাকাত শাহীনের সহযোগী গর্জনিয়ার স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জাহাঙ্গীর র‍‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার নিখোঁজের ৩ দিন পর নাইক্ষ্যংছড়ির বিবিশন বড়ুয়ার লাশ মিললো খালে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনি প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি দোকানের ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বেই মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: পুলিশ রাজসাক্ষী হিসেবে সহায়তার শর্তে চৌধুরী মামুনকে ক্ষমা করেছে ট্রাইব্যুনাল পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে মা ফোন করে জানান কাঠমান্ডুগামী বিমানে বোমা

রাখাইনে ‘সেইফ জোন’ চায় রোহিঙ্গারা, জাতিসংঘের কাছে আরটুপি’র প্রত্যাশা

বাংলাদেশে চারদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় এবং এই সংকটের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগ ও সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ তার এই দ্বিতীয় সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তাৎপর্য বহুল এই সফরে তিনি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুক্রবার (১৪ মার্চ) রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন এবং প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন।

২০১৭ সালের শেষে দিকে প্রায় ৮ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়, বর্তমানে ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফের ৩৩ টি ক্যাম্পে বাস করেছে।

৮ বছর অতিবাহিত হলেও আলোর মুখ দেখেনি প্রত্যাবাসন, অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারের রাখাইন গত দুই বছর ধরে উত্তপ্ত জান্তা এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির আভ্যন্তরীণ সংঘাতে।

এমনবস্থায় জাতিসংঘের মহাসচিবের সফর, নিজেদের দেশে ফিরতে মুখিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাশা, ২০০৫ সালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অনুমোদিত “রেস্পন্সিবিলিটি টু প্রোটেক্ট” বা আরটুপি বাস্তবায়ন সম্ভব হলে রাখাইনে ফেরার পথ সুগম হবে।

গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক জাতিসংঘের প্রাক্তন বিশেষ উপদেষ্টা ফ্রান্সিস ডেং’র এর মতে ” আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং প্রতিশ্রুতিশীল উদ্ভাবন হলো আরটুপি।”

গণহত্যার ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজন হিসেবে ‘আরটুপি’র বাস্তবায়ন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন রোহিঙ্গা এডভোকেসি এন্ড এওয়ারনেস এসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও যুব অধিকারকর্মী মুজিব খান।

তিনি বলেন, ” আমরা রাখাইনে নিপীড়ন -নির্যাতনের শিকার হয়েছি, আমি আশাবাদী জাতিসংঘ যদি আমাদের মানবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় আরটুপি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় তাহলে আমরা ফিরতে পারবো।”

জান্তার সাথে যুদ্ধ করতে থাকা আরকান আর্মির সাম্প্রতিক বিবৃতি বলছে, রাখাইনের প্রায় ১৪ টি শহর এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে৷ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত রাখাইনের মংডু, বুথিডংয়েও যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে যার প্রভাব পড়েছে সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের উপর।

এমন পরিস্থিতিতে আরটুপির পাশাপাশি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য “সেইফ জোন” অর্থাৎ একটি নিরাপত্তা কাঠামো তৈরির বিকল্প নেই জানিয়ে রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, “সেইফ জোন নিশ্চিত হলে আমরা এখনই দেশে ফিরতে প্রস্তুত আছি, আশা করছি জাতিসংঘ মহাসচিব আমাদের প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিবেন।”

বুধবার (১২ মার্চ), প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফরের ফলে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি আবার বৈশ্বিক আলোচনায় আসবে মনে করে সরকার ।

ট্যাগ :

This will close in 6 seconds

রাখাইনে ‘সেইফ জোন’ চায় রোহিঙ্গারা, জাতিসংঘের কাছে আরটুপি’র প্রত্যাশা

আপডেট সময় : ১২:০০:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশে চারদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় এবং এই সংকটের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগ ও সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ তার এই দ্বিতীয় সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তাৎপর্য বহুল এই সফরে তিনি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুক্রবার (১৪ মার্চ) রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন এবং প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন।

২০১৭ সালের শেষে দিকে প্রায় ৮ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়, বর্তমানে ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফের ৩৩ টি ক্যাম্পে বাস করেছে।

৮ বছর অতিবাহিত হলেও আলোর মুখ দেখেনি প্রত্যাবাসন, অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারের রাখাইন গত দুই বছর ধরে উত্তপ্ত জান্তা এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির আভ্যন্তরীণ সংঘাতে।

এমনবস্থায় জাতিসংঘের মহাসচিবের সফর, নিজেদের দেশে ফিরতে মুখিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাশা, ২০০৫ সালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অনুমোদিত “রেস্পন্সিবিলিটি টু প্রোটেক্ট” বা আরটুপি বাস্তবায়ন সম্ভব হলে রাখাইনে ফেরার পথ সুগম হবে।

গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক জাতিসংঘের প্রাক্তন বিশেষ উপদেষ্টা ফ্রান্সিস ডেং’র এর মতে ” আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং প্রতিশ্রুতিশীল উদ্ভাবন হলো আরটুপি।”

গণহত্যার ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজন হিসেবে ‘আরটুপি’র বাস্তবায়ন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন রোহিঙ্গা এডভোকেসি এন্ড এওয়ারনেস এসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও যুব অধিকারকর্মী মুজিব খান।

তিনি বলেন, ” আমরা রাখাইনে নিপীড়ন -নির্যাতনের শিকার হয়েছি, আমি আশাবাদী জাতিসংঘ যদি আমাদের মানবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় আরটুপি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় তাহলে আমরা ফিরতে পারবো।”

জান্তার সাথে যুদ্ধ করতে থাকা আরকান আর্মির সাম্প্রতিক বিবৃতি বলছে, রাখাইনের প্রায় ১৪ টি শহর এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে৷ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত রাখাইনের মংডু, বুথিডংয়েও যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে যার প্রভাব পড়েছে সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের উপর।

এমন পরিস্থিতিতে আরটুপির পাশাপাশি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য “সেইফ জোন” অর্থাৎ একটি নিরাপত্তা কাঠামো তৈরির বিকল্প নেই জানিয়ে রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, “সেইফ জোন নিশ্চিত হলে আমরা এখনই দেশে ফিরতে প্রস্তুত আছি, আশা করছি জাতিসংঘ মহাসচিব আমাদের প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিবেন।”

বুধবার (১২ মার্চ), প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফরের ফলে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি আবার বৈশ্বিক আলোচনায় আসবে মনে করে সরকার ।