পাকিস্তানের হাই কমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ দুই সপ্তাহের ছুটিতে নিজ দেশে গিয়েছেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশন।
জাতীয় একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, ১১ মে (রোববার) দুবাই হয়ে ইসলামাবাদ যেতে ঢাকা ত্যাগ করেন মারুফ এবং সেদিনই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানায় তাঁর দপ্তর।
গত ৯ মাসে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরতে দেখা গেছে এই কূটনীতিক’কে। গত তিন মাসের মধ্যে কক্সবাজারে একাধিক সফর করেন তিনি এবং সর্বশেষ রহস্যে ঘেরা এক সফরের পর আকস্মিক তাঁর ছুটিতে যাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে গুঞ্জন।
টিটিএনের কাছে আসা তথ্য বলছে, গত ৮ মে (বৃহস্পতিবার) রাত ৮ টায় ইউএস বাংলার বিএস-১৫৯ ফ্লাইটযোগে মারুফ কক্সবাজারে আসেন।
প্রতিবেদকের কাছে থাকা বিমান বন্দরের একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মারুফের পাশে ছিলেন এক নারী ও তার বন্ধু হিসেবে কূটনীতিক পাড়ায় পরিচিত ব্যবসায়ী আজহার মাহমুদ।
সেদিনই রাত্রীযাপনের উদ্দেশ্যে শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে উখিয়ার ইনানীস্থ বিলাসবহুল হোটেল সী-পার্লে যান তিনি।
এর আগেও গত ৬ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি এই হোটেলের ৩০৯ নং রুমে ছিলেন মারুফ, সেসময় সাথে তার পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন।
কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, সর্বশেষ সফরে নিজেকে আড়ালে রাখতে চেয়েছিলেন মারুফ। প্রশ্নের মুখোমুখি হলে স্থানীয় প্রশাসনকে ‘ ভ্রমণের জন্য এসেছেন’ বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, সফর নিয়ে বিস্তারিত অবগত না থাকলেও পাকিস্তানের হাইকমিশনার আগমনের খবরে জেলা পুলিশের একটি টিম তাঁকে প্রটোকল দিয়েছে।
মারুফের সফরকালে কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন ওআইসির সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত আরকান রোহিঙ্গা ইউনিয়নের ডিজি (ডিরেক্টর জেনারেল) রেজা উদ্দিন।
আমেরিকার নাগরিকত্ব পাওয়া রোহিঙ্গা একটিভিস্ট রেজা উদ্দিন ওআইসি’র নিউইয়র্ক গ্রুপের সাথে সম্পৃক্ত, যেটি পাক-ভারত উত্তেজনার প্রেক্ষিতে গত ২ মে বিবৃতি দিয়েছিলো।
রেজা ৯ মে উখিয়ার ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং ১০ মে উখিয়ার একটি কমিউনিটি সেন্টারে ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা যুবকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন।
পাক-ভারত প্রেক্ষাপট এবং সাম্প্রতিক সময়ের রোহিঙ্গা ইস্যুতে রেজা ও মারুফ কৌশলগত সাক্ষাৎ করে থাকতে পারেন বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে রেজা উদ্দিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মন্তব্য মিলেনি।
বিশেষ একটি সংস্থার স্পর্শকাতর ও অসমর্থিত প্রতিবেদন বলছে, ফেব্রুয়ারিতে কক্সবাজার সফরের সময় বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতা, রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের সাথে মারুফের সাক্ষাৎ হয়েছিলো।