ঢাকা ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
চকরিয়ায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মাদ্রাসা শিক্ষকের মৃত্যু স্ত্রীকে গলা কেটে হ’ত্যা: ঘা’ত’ক স্বামী আটক ১০ বছরে কক্সবাজার সৈকতে ৬০ জনের প্রাণহানি বাড়ছে বাস্তুচ্যুত, কমছে তহবিল- জাতিসংঘ মা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ভারতে জয় ভারতে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত, বহু হতাহতের শঙ্কা টেকনাফে কিশোরের হাতে নারী ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বামী হাতে স্ত্রী খুন তারেক রহমান চাইলে যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদে‌শের সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পদ জব্দ করলো যুক্তরাজ্য প্যারোলে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক দম্পতি শাকিল–ফারজানা ‘‌পুকুরের পানি সব ঘোলা করে ফেলেছি’ ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক রাজনীতিতে সুবাতাস বয়ে আনবে: রিজভী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ দফা নির্দেশনা কলম্বিয়ার বিপক্ষে দশজনের আর্জেন্টিনার মান বাঁচানো ড্র ভিনিসিয়ুসের গোলে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের জয়

আট হাজার কিলোমিটার দূর থেকে ক্যান্সার রোগীর সফল অপারেশন করলেন চীনা সার্জন!

বিশ্ব চিকিৎসাবিজ্ঞানে রীতিমতো এক বিপ্লব ঘটে গেল। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চীনের একজন চিকিৎসক ইউরোপের রোম শহর থেকে বসে সফলভাবে অপারেশন করলেন ৮,০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একজন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর। এই অভাবনীয় ঘটনা বাস্তবে রূপ দিলেন চীনা প্রখ্যাত সার্জন ড. ঝাং জু (Zhang Xu)। তিনি চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) জেনারেল হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের পরিচালক এবং চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের একজন সম্মানিত সদস্য।

ঘটনার দিন, ড. ঝাং রোমে একটি আন্তর্জাতিক মেডিকেল কনফারেন্সে অংশ নিচ্ছিলেন। সেই সময়ই তিনি চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অবস্থানরত এক প্রোস্টেট ক্যান্সার রোগীর উপর রিমোট রোবোটিক সার্জারি করেন। এই অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয় একটি অত্যাধুনিক ৫জি এবং ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক-এর মাধ্যমে। সার্জনের কনসোল ও বেইজিংয়ে থাকা সার্জিক্যাল রোবটের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হয়, যা সার্জনের প্রতিটি হাতের নড়াচড়াকে প্রায় রিয়েল-টাইমে (মাত্র ১৩৫ মিলিসেকেন্ড বিলম্ব) অনুকরণ করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ১৩৫ মিলিসেকেন্ড লেটেন্সি এতটাই কম যে এটি মানুষের চোখের পলকের চেয়েও দ্রুত। সাধারণত ২০০ মিলিসেকেন্ডের নিচে লেটেন্সি হলে সেটিকে নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হয়। অপারেশনটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় সম্মেলনে উপস্থিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চিকিৎসক ও প্রযুক্তিবিদদের সামনে। তাদের অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন এমন একটি অসম্ভবকে সম্ভব করার ঘটনায়।

ড. ঝাং তার দলকে নিয়ে এই সাহসী পদক্ষেপে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা কেবল শহরের সীমায় আবদ্ধ নয়। এই উদ্যোগ যুদ্ধক্ষেত্র, দুর্যোগপূর্ণ এলাকা বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী রোগীদের জন্য চিকিৎসা সেবার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তার ভাষায়— “একজন দক্ষ চিকিৎসকের হাত যদি বিশ্বমানের প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়, তাহলে সীমান্ত আর কোনো বাধা নয়। সেবা পৌঁছে যাবে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে।”

ইতোমধ্যে এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে। এই কৃতিত্বকে “মেডিক্যাল টেলিপ্রেজেন্স”-এর ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রোম থেকে বেইজিংয়ের এই সফল অপারেশন কেবল একটি চিকিৎসা নয়—এটি ভবিষ্যতের এক নিখুঁত বার্তা। উন্নত প্রযুক্তি ও মানবিক দক্ষতার সমন্বয়ে হয়তো একদিন চিকিৎসা হবে পুরোপুরি সীমাহীন। আর সেই পথেই আজ প্রথম পদক্ষেপ ফেললো মানব সভ্যতা।

সূত্র: SCMP, CGTN, TechTimes, Project Nightfall

ট্যাগ :

This will close in 6 seconds

আট হাজার কিলোমিটার দূর থেকে ক্যান্সার রোগীর সফল অপারেশন করলেন চীনা সার্জন!

আপডেট সময় : ০২:২৭:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫

বিশ্ব চিকিৎসাবিজ্ঞানে রীতিমতো এক বিপ্লব ঘটে গেল। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চীনের একজন চিকিৎসক ইউরোপের রোম শহর থেকে বসে সফলভাবে অপারেশন করলেন ৮,০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একজন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর। এই অভাবনীয় ঘটনা বাস্তবে রূপ দিলেন চীনা প্রখ্যাত সার্জন ড. ঝাং জু (Zhang Xu)। তিনি চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) জেনারেল হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের পরিচালক এবং চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের একজন সম্মানিত সদস্য।

ঘটনার দিন, ড. ঝাং রোমে একটি আন্তর্জাতিক মেডিকেল কনফারেন্সে অংশ নিচ্ছিলেন। সেই সময়ই তিনি চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অবস্থানরত এক প্রোস্টেট ক্যান্সার রোগীর উপর রিমোট রোবোটিক সার্জারি করেন। এই অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয় একটি অত্যাধুনিক ৫জি এবং ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক-এর মাধ্যমে। সার্জনের কনসোল ও বেইজিংয়ে থাকা সার্জিক্যাল রোবটের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হয়, যা সার্জনের প্রতিটি হাতের নড়াচড়াকে প্রায় রিয়েল-টাইমে (মাত্র ১৩৫ মিলিসেকেন্ড বিলম্ব) অনুকরণ করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ১৩৫ মিলিসেকেন্ড লেটেন্সি এতটাই কম যে এটি মানুষের চোখের পলকের চেয়েও দ্রুত। সাধারণত ২০০ মিলিসেকেন্ডের নিচে লেটেন্সি হলে সেটিকে নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হয়। অপারেশনটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় সম্মেলনে উপস্থিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চিকিৎসক ও প্রযুক্তিবিদদের সামনে। তাদের অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন এমন একটি অসম্ভবকে সম্ভব করার ঘটনায়।

ড. ঝাং তার দলকে নিয়ে এই সাহসী পদক্ষেপে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা কেবল শহরের সীমায় আবদ্ধ নয়। এই উদ্যোগ যুদ্ধক্ষেত্র, দুর্যোগপূর্ণ এলাকা বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী রোগীদের জন্য চিকিৎসা সেবার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তার ভাষায়— “একজন দক্ষ চিকিৎসকের হাত যদি বিশ্বমানের প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়, তাহলে সীমান্ত আর কোনো বাধা নয়। সেবা পৌঁছে যাবে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে।”

ইতোমধ্যে এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে। এই কৃতিত্বকে “মেডিক্যাল টেলিপ্রেজেন্স”-এর ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রোম থেকে বেইজিংয়ের এই সফল অপারেশন কেবল একটি চিকিৎসা নয়—এটি ভবিষ্যতের এক নিখুঁত বার্তা। উন্নত প্রযুক্তি ও মানবিক দক্ষতার সমন্বয়ে হয়তো একদিন চিকিৎসা হবে পুরোপুরি সীমাহীন। আর সেই পথেই আজ প্রথম পদক্ষেপ ফেললো মানব সভ্যতা।

সূত্র: SCMP, CGTN, TechTimes, Project Nightfall