ঢাকা ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতল পিএসজি নাফ নদে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ কিশোর ফিরলো লাশ হয়ে ছি’নতা’ইকারীর ধা’ক্কা’য় মায়ের সামনে ছেলের প্রা’ণ গেলো সড়কে রামুতে অপারেশন ডেভিল হান্টে ২ আওয়ামীলীগ নেতা আটক নাফ নদে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ কিশোর ফিরলো লাশ হয়ে রেফারিজ প্রশিক্ষণ কোর্সে উত্তীর্ণ কুতুবদিয়ার নিহাল মহেশখালীতে রশিদ হ’ত্যা: আসামিদের পাল্টা মামলায় হয়রানির শিকার বাদীর পরিবার চকরিয়ায় পানিতে ডুবে ৭ বছর বয়সী রাফির মৃত্যু বৈরী আবহাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সেন্টমার্টিন: খাদ্য সংকট সি-ট্রাকে নেই ডাস্টবিন: যাত্রীরা যত্রতত্র ফেলছে প্লাস্টিক বর্জ্য সি-ট্রাকে নেই ডাস্টবিন: যাত্রীরা যত্রতত্র ফেলছে প্লাস্টিক বর্জ্য পেকুয়ায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের মাঝে সংস্কৃতি উপদেষ্টার চেক বিতরণ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল রবিবার রোদ ঝলমলে আকাশ নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে জামায়াতের আপিলের রায় রবিবার

মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ: ছাত্রশিবিরকে ক্ষমা চাইতে বলল ছাত্রদল

জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের মাসিক প্রকাশনা ‘ছাত্র সংবাদ’ এর একটি প্রবন্ধে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

সংগঠনটি বলছে, এ ধরনের বক্তব্য একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসরদের ধৃষ্টতা এবং নিজেদের পরাজয়ের গ্লানি চাপা দেওয়ার অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই নিন্দা জানিয়েছেন বলে ছাত্রদলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

ছাত্রশিবিরের ‘ছাত্র সংবাদ’ নামের মাসিক প্রকাশনাটির ডিসেম্বর সংখ্যায় আহমেদ আফঘানি রচিত ‘যুগে যুগে স্বৈরাচার ও তাদের করুণ পরিণতি’ নামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। সেই প্রবন্ধে লেখা হয়েছে, ‘অনেক মুসলিম না বুঝে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল, এটা তাদের ব্যর্থতা ও অদূরদর্শিতা ছিল। আল্লাহ তায়ালা তাদের ক্ষমা করুন’।

প্রবন্ধের এই অংশ উদ্ধৃত করে ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “স্বাধীনতার দীর্ঘ পাঁচ দশক পেরিয়ে এসেও নিজেদের দলীয় প্রকাশনায় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করাকে ভুল ও অদূরদর্শিতা হিসেবে প্রচার করা এবং ‘পাপকাজ মনে করে’ ক্ষমা প্রার্থনা করা একটি গর্হিত এবং ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

“প্রকৃতপক্ষে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ কোনো ধর্মযুদ্ধ ছিল না। এটি ছিল অত্যাচারী, জালিম, দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্বিচারে গণহত্যার বিরুদ্ধে মজলুম বাংলাদেশীদের প্রতিরোধের যুদ্ধ। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণের অংশগ্রহণের কারণে মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি সত্যিকারের জনযুদ্ধ।”

ছাত্রদল বলেছে, “কেউ ভুল করে কিংবা না বুঝে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে এই বক্তব্য একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসরদের ধৃষ্টতা ও নিজেদের পরাজয়ের গ্লানি চাপা দেওয়ার অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। ছাত্রশিবিরের এরূপ কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রচারণার কারণে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্বাসনের প্রেক্ষাপট তৈরি করবে।

“ছাত্রশিবির একদিকে স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে ‘স্বাধীনতা এনেছি, স্বাধীনতা রাখব’ স্লোগান দিয়ে র‌্যালি করে, আবার অন্যদিকে নিজেদের দলীয় প্রকাশনায় মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়াকে ভুল ও অদূরদর্শিতা হিসেবে প্রচার করবে, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, এটি সুস্পষ্ট দ্বিচারিতা। এই দ্বিচারিতার ফলে প্রমাণিত হয় প্রকাশ্যে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করার কৌশল গ্রহণ করলেও ভেতরে ভেতরে ছাত্রশিবির পূর্বসূরি ছাত্রসংঘের মতো মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের মনোভাবই তারা ধারণ করে।”

মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করার জন্য ছাত্রশিবিরকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “ছাত্রশিবির কর্তৃক নিজেদের দলীয় পত্রিকায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে আপত্তিকর বক্তব্য প্রচারের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে ছাত্র শিবিরকে ক্ষমাপ্রার্থনা এবং মুক্তিযুদ্ধই আমাদের ভিত্তি ও অস্তিত্ব- এই সত্যকে মেনে নেওয়া ও ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

ট্যাগ :

This will close in 6 seconds

মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ: ছাত্রশিবিরকে ক্ষমা চাইতে বলল ছাত্রদল

আপডেট সময় : ০৩:২৫:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের মাসিক প্রকাশনা ‘ছাত্র সংবাদ’ এর একটি প্রবন্ধে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

সংগঠনটি বলছে, এ ধরনের বক্তব্য একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসরদের ধৃষ্টতা এবং নিজেদের পরাজয়ের গ্লানি চাপা দেওয়ার অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই নিন্দা জানিয়েছেন বলে ছাত্রদলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

ছাত্রশিবিরের ‘ছাত্র সংবাদ’ নামের মাসিক প্রকাশনাটির ডিসেম্বর সংখ্যায় আহমেদ আফঘানি রচিত ‘যুগে যুগে স্বৈরাচার ও তাদের করুণ পরিণতি’ নামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। সেই প্রবন্ধে লেখা হয়েছে, ‘অনেক মুসলিম না বুঝে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল, এটা তাদের ব্যর্থতা ও অদূরদর্শিতা ছিল। আল্লাহ তায়ালা তাদের ক্ষমা করুন’।

প্রবন্ধের এই অংশ উদ্ধৃত করে ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “স্বাধীনতার দীর্ঘ পাঁচ দশক পেরিয়ে এসেও নিজেদের দলীয় প্রকাশনায় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করাকে ভুল ও অদূরদর্শিতা হিসেবে প্রচার করা এবং ‘পাপকাজ মনে করে’ ক্ষমা প্রার্থনা করা একটি গর্হিত এবং ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

“প্রকৃতপক্ষে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ কোনো ধর্মযুদ্ধ ছিল না। এটি ছিল অত্যাচারী, জালিম, দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্বিচারে গণহত্যার বিরুদ্ধে মজলুম বাংলাদেশীদের প্রতিরোধের যুদ্ধ। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণের অংশগ্রহণের কারণে মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি সত্যিকারের জনযুদ্ধ।”

ছাত্রদল বলেছে, “কেউ ভুল করে কিংবা না বুঝে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে এই বক্তব্য একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসরদের ধৃষ্টতা ও নিজেদের পরাজয়ের গ্লানি চাপা দেওয়ার অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। ছাত্রশিবিরের এরূপ কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রচারণার কারণে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্বাসনের প্রেক্ষাপট তৈরি করবে।

“ছাত্রশিবির একদিকে স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে ‘স্বাধীনতা এনেছি, স্বাধীনতা রাখব’ স্লোগান দিয়ে র‌্যালি করে, আবার অন্যদিকে নিজেদের দলীয় প্রকাশনায় মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়াকে ভুল ও অদূরদর্শিতা হিসেবে প্রচার করবে, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, এটি সুস্পষ্ট দ্বিচারিতা। এই দ্বিচারিতার ফলে প্রমাণিত হয় প্রকাশ্যে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করার কৌশল গ্রহণ করলেও ভেতরে ভেতরে ছাত্রশিবির পূর্বসূরি ছাত্রসংঘের মতো মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের মনোভাবই তারা ধারণ করে।”

মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করার জন্য ছাত্রশিবিরকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “ছাত্রশিবির কর্তৃক নিজেদের দলীয় পত্রিকায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে আপত্তিকর বক্তব্য প্রচারের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে ছাত্র শিবিরকে ক্ষমাপ্রার্থনা এবং মুক্তিযুদ্ধই আমাদের ভিত্তি ও অস্তিত্ব- এই সত্যকে মেনে নেওয়া ও ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”