কক্সবাজারের মহেশখালী থানার ওসিকে ‘উলঙ্গ’ করে বের করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন সেখানকার পৌর বিএনপির আহবায়ক।
মহেশখালী উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক শফিউল আলম শফির স্মরণসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে থানার ওসিকে ঘিরে এমন ক্ষোভ উগরে দেন মহেশখালী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আকতার হোসেন। বক্তব্যে তিনি ওসিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। যা প্রকাশ অযোগ্য।
তার অভিযোগ, ওসি রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাত আচরণ করছেন এবং টাকার বিনিময়ে মামলা গ্রহণ করছেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৩টায় মহেশখালী পৌরসভার দীঘির পাড়ে আয়োজিত স্মরণসভায় আকতার হোসেন ওসিকে উদ্দেশ করে একের পর এক অভিযোগ তোলেন।
বক্তব্যে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ওসি সাহেব, আপনার দোকান বন্ধ করেন। ন্যাংটা করে মহেশখালী থেকে বের করে দেওয়া হবে। ফাইজলামি অনেক শুনেছি, অভিযোগ অনেক পেয়েছি।”
আখতার হোসেন দাবি করেন, থানার ওসির চেম্বার এখন এক ধরনের ‘দোকানে’ পরিণত হয়েছে, যেখানে টাকা দিলে মামলা নেয়া হয়।
তিনি বলেন, “যে টাকা বেশি দেবে মামলা তারটাই নেবে। আগামীকাল থেকে যদি আপনার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগও আসে, মহেশখালী থেকে বের করে দেবো।”
বিএনপির এই নেতার অভিযোগ, ওসি স্থানীয় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ মহল ও প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে মিলে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।
তিনি বলেন, “মহেশখালী থেকে বের করবো। এটা ওয়াদা আমার। টাকার বিনিময়ে আওয়ামী দোসরদের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করছেন- সব খবর আমার কানে আসে। আমি বেঁচে থাকতে এই মহেশখালীর মাটিতে আওয়ামী দোসরদের সাথে তাল মিলিয়ে চলা যাবে না। আল্লাহর কসম করে বলছি, ন্যাংটা করে মহেশখালী ছাড়তে বাধ্য করবো।”
“আশেক উল্লাহর (সাবেক এমপি) আত্মীয় স্বজন, শশুর শাশুড়ীর মানুষ আপনি। মনে করেছেন দুবাইয়ের ভিসা পাবেন। ”
সভায় উপস্থিত বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরাও ওসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিএনপি নেতার এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ওসি মনজুরুল হক জানান, তিনি এখনো ওই বক্তব্যের ভিডিও দেখেননি ও শোনেননি।
আখতার হোসেনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জানতে চাওয়া হয় মামলা বাণিজ্য ও আওয়ামীলীগের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে- ওসি বলেন, “এসব সত্য নয়। তারপরও তারা কি কারনে বলছেন তারা ভালো বলতে পারবেন।”
‘অকথ্য ভাষায়’ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি-না জানতে চাইলে ওসি মনজুরুল হক বলেন, “দেখি, এখনো চিন্তা করিনি।”
ওসি মনজুরুল হক চলতি বছরের ২০ মে মহেশখালী থানায় যোগদান করেন।
এধরণের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে মহেশখালী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আকতার হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে মহেশখালী থানার ওসিকে হুমকি এবং সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে আকতার হোসেনের সব পদ স্থগিত করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “মহেশখালী থানার ওসিকে অশোভন গালাগাল করে হুমকি এবং সংগঠন বিরোধী কার্যলাপের জন্য কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য ও মহেশখালী পৌর বিএনপির সাবেক আহবায়ক আকতার হোসেনকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তার প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়েছে।”