ঢাকা ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মুলহোতা বাবু আটক: বাকীদের খুঁজছে পুলিশ চুপ প্রশাসন, নিষেধাজ্ঞা না মেনে আতশবাজি ফুটল সৈকতে বার্মিজ মার্কেট এলাকার বাসিন্দা বকুল আর নেই: জানাজা বৃহস্পতিবার ভালো কিছু শুরুর আশা পঁচিশের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে আসা পর্যটকদের স্বামীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত খালেদা জিয়া জনজোয়ারে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ঢাকায় পাকিস্তানের স্পিকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জনতার ঢল সংসদ ভবনের পথে খালেদা জিয়ার মরদেহ কক্সবাজারে খালেদা জিয়ার শেষ সফর ছিলো ২০১৭ সালে থার্টি ফার্স্টে লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম হবে: মানতে হবে পুলিশী নির্দেশনা, বার বন্ধ থাকবে শোক পালন: সাগরতীরের তারকা হোটেলগুলোতে থার্টি-ফার্স্টের আয়োজন বাতিল চকরিয়ায় যুবদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যা রুমিন ফারহানা-নীরবসহ ৮ জনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার
ওয়ার্ল্ড ভিশনের জরিপ

চাকরি বেশি করেন উখিয়ার মেয়েরা

  • আফজারা রিয়া
  • আপডেট সময় : ০৭:৫২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
  • 1099

কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় নারীদের কর্মসংস্থানে অংশগ্রহণের হার অন্যান্য উপজেলাগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এমন চিত্র উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার বিভিন্ন কর্মসূচি, বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এনজিও কার্যক্রম, উখিয়ার নারীদের জন্য খুলে দিয়েছে চাকরির নতুন দরজা। ফলে একদিকে যেমন বেড়েছে নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা, অন্যদিকে বদলে যাচ্ছে পরিবার ও সমাজে নারীর ভূমিকার ধারণা।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু সুরক্ষা নেট প্রকল্পের আওতায় একটি গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর কোয়ালিটেটিভ রিসার্চ’ সাম্প্রতিক একটি জরিপ চালিয়েছে কক্সবাজারের সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায়। জরিপের পরিসংখ্যানে জেলার বিভিন্ন এলাকার নারীদের অবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রচলিত প্রথা ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে। জেলায় বর্তমানে ৭৫% নারী আত্মপরিচয় তৈরি করতে পেরেছে। তারা বিভিন্ন চাকরি ও কাজের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে। কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে উখিয়া উপজেলার নারীরা। এই উপজেলায় ৪২.৩% নারী স্বাবলম্বী হয়েছেন। অপরদিকে, সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে কক্সবাজার সদর, যেখানে এই হার মাত্র ৯.৯%।

কিন্তু নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে প্রতিবেদনে। গৃহস্থালি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সবচেয়ে এগিয়ে কক্সবাজার সদরের নারীরা। এখানে নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণের হার ৮১%। বিপরীতে, কর্মজীবনে এগিয়ে থাকলেও উখিয়ার নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে পিছিয়ে, যার হার মাত্র ৫০%।

অন্যদিকে লিঙ্গ সমতা বিষয়ে সচেতনতা এখনও অনেক কম। কেবল ৮% নারী ও পুরুষ লিঙ্গ সমতাকে সমর্থন করে। শিশু সুরক্ষার বিষয়ে জেলায় মোট সচেতনতা মাত্র ২৯.৭%, যেখানে পুরুষরা সবচেয়ে বেশি জানে, আর সবচেয়ে কম জানেন প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু সুরক্ষা নেট প্রকল্পের এই পরিসংখ্যানগুলো কক্সবাজারের নারী উন্নয়ন ও সামাজিক বাস্তবতা উপলব্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উখিয়ার নারীদের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে নারী অধিকার কর্মী ও আইনজীবী প্রতিভা দাশ বলেন, কক্সবাজারের সীমান্তঘেঁষা উপজেলা উখিয়ায় ঘটে যাচ্ছে নীরব এক সামাজিক বিপ্লব। এই অঞ্চলের নারীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি হারে চাকরিতে যুক্ত হচ্ছেন, যা দেশের অন্যান্য অনগ্রসর এলাকার তুলনায় এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত।

প্রতিভা দাশ বলেন, “এক সময় যারা চার দেয়ালের বাইরে পা রাখতেন না, আজ তারাই সংসারের ভরসা হয়ে উঠছেন- আত্মবিশ্বাসী মুখগুলো যেন বলছে, “আমরাও পারি।”

ট্যাগ :

This will close in 6 seconds

ওয়ার্ল্ড ভিশনের জরিপ

চাকরি বেশি করেন উখিয়ার মেয়েরা

আপডেট সময় : ০৭:৫২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় নারীদের কর্মসংস্থানে অংশগ্রহণের হার অন্যান্য উপজেলাগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এমন চিত্র উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার বিভিন্ন কর্মসূচি, বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এনজিও কার্যক্রম, উখিয়ার নারীদের জন্য খুলে দিয়েছে চাকরির নতুন দরজা। ফলে একদিকে যেমন বেড়েছে নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা, অন্যদিকে বদলে যাচ্ছে পরিবার ও সমাজে নারীর ভূমিকার ধারণা।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু সুরক্ষা নেট প্রকল্পের আওতায় একটি গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর কোয়ালিটেটিভ রিসার্চ’ সাম্প্রতিক একটি জরিপ চালিয়েছে কক্সবাজারের সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায়। জরিপের পরিসংখ্যানে জেলার বিভিন্ন এলাকার নারীদের অবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রচলিত প্রথা ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে। জেলায় বর্তমানে ৭৫% নারী আত্মপরিচয় তৈরি করতে পেরেছে। তারা বিভিন্ন চাকরি ও কাজের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে। কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে উখিয়া উপজেলার নারীরা। এই উপজেলায় ৪২.৩% নারী স্বাবলম্বী হয়েছেন। অপরদিকে, সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে কক্সবাজার সদর, যেখানে এই হার মাত্র ৯.৯%।

কিন্তু নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে প্রতিবেদনে। গৃহস্থালি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সবচেয়ে এগিয়ে কক্সবাজার সদরের নারীরা। এখানে নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণের হার ৮১%। বিপরীতে, কর্মজীবনে এগিয়ে থাকলেও উখিয়ার নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে পিছিয়ে, যার হার মাত্র ৫০%।

অন্যদিকে লিঙ্গ সমতা বিষয়ে সচেতনতা এখনও অনেক কম। কেবল ৮% নারী ও পুরুষ লিঙ্গ সমতাকে সমর্থন করে। শিশু সুরক্ষার বিষয়ে জেলায় মোট সচেতনতা মাত্র ২৯.৭%, যেখানে পুরুষরা সবচেয়ে বেশি জানে, আর সবচেয়ে কম জানেন প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু সুরক্ষা নেট প্রকল্পের এই পরিসংখ্যানগুলো কক্সবাজারের নারী উন্নয়ন ও সামাজিক বাস্তবতা উপলব্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উখিয়ার নারীদের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে নারী অধিকার কর্মী ও আইনজীবী প্রতিভা দাশ বলেন, কক্সবাজারের সীমান্তঘেঁষা উপজেলা উখিয়ায় ঘটে যাচ্ছে নীরব এক সামাজিক বিপ্লব। এই অঞ্চলের নারীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি হারে চাকরিতে যুক্ত হচ্ছেন, যা দেশের অন্যান্য অনগ্রসর এলাকার তুলনায় এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত।

প্রতিভা দাশ বলেন, “এক সময় যারা চার দেয়ালের বাইরে পা রাখতেন না, আজ তারাই সংসারের ভরসা হয়ে উঠছেন- আত্মবিশ্বাসী মুখগুলো যেন বলছে, “আমরাও পারি।”