গোপালগঞ্জের ঘটনায় আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনী বলপ্রয়োগে বাধ্য হয় জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায় সংস্থাটি।
বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর জানায়, গোপালগঞ্জ জেলায় একটি রাজনৈতিক দলের জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আহ্বানকৃত জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে এলাকার একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা গত ১৬ জুলাই সংঘবদ্ধভাবে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিক আহত হন। এছাড়াও, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সরকারি যানবাহনে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও স্থানীয় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করে এবং প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
আইএসপিআর আরও জানায়, রাজনৈতিক সংগঠনের সমাবেশ চলাকালীন মঞ্চে পুনরায় হামলা চালানো হয় এবং একই সাথে জেলা কারাগারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।
এমতাবস্থায়, সেনাবাহিনী হামলাকারীদের মাইকে বারংবার ঘোষণা দিয়ে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তারা সেনাবাহিনীর ওপর বিপুল সংখ্যক ককটেল ও ইট পাটকেল ছুড়ে হামলা করে এবং এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়। পরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ যৌথভাবে বিশৃঙ্খলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
অতঃপর, সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে পুলিশ সুপারের কার্যালয়, গোপালগঞ্জ এ আশ্রয় গ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গকে খুলনায় স্থানান্তর করা হয়। সর্বোপরি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পেশাদারিত্ব ও ধৈর্যের সাথে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বর্তমানে গোপালগঞ্জ জেলায় সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং প্রশাসন কর্তৃক জারিকৃত কারফিউ চলমান রয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব এবং প্রশাসনের অন্যান্য সংস্থাগুলো ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় রেখে কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল বুধবার সকাল থেকে চলমান এই রাজনৈতিক সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলায়, গোপালগঞ্জ জেলার জনসাধারণ অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে নিজেদের নিবৃত্ত রেখে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছেন। গুজব বা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে ধৈর্য ধারণ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সর্বসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তা রক্ষায় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।