নিজস্ব প্রতিবেদক
দুর্নীতি-অনিয়মে ডুবছে রাজধানীর খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। কোটি কোটি টাকা লোপাট, অবৈধভাবে সাড়ে চারশ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, ভর্তি-বদলি বাণিজ্যসহ পাহাড়সম অভিযোগ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) অডিটে গত ১১ বছরের এমন বহু দুর্নীতি-অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলটি।
অডিটের তথ্য বলছে, দুর্নীতির ৯৫ শতাংশই ঘটেছে গভর্নিং বডির যোগসাজশে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অনেক ক্ষেত্রে সরকারের বিধি মানা হচ্ছে না। সরকারি নির্দেশনাও আমলে নেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া গভর্নিং বডিতে রয়েছেন একাধিক বিতর্কিত ব্যক্তি। যাদের নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনা চলছে। যাতে মর্যাদা হারাচ্ছে রাজধানীর মতিঝিলের নামি এই প্রতিষ্ঠানটি।
কোচিং ‘বাণিজ্য’ ও গভর্নিং বডির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে কয়েকটি পক্ষের আধিপত্য বিস্তারের লড়াই চলছে। স্কুলের তিন ক্যাম্পাসে চলছে মহড়া ও পাল্টা মহড়া। ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্যের স্বার্থে শিক্ষকদের একটি বড় অংশই দলাদলিতে জড়িয়েছেন বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন।
আগামী ১৯ এপ্রিল ‘আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির নির্বাচন-২০২৪’ হওয়ার কথা রয়েছে। এ নির্বাচনকে ঘিরে নানা বিতর্ক শুরু হয়েছে। অভিভাবকদের একটি পক্ষ নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন। অন্য পক্ষটি যথাসময়ে নির্বাচনের পক্ষে।
এছাড়াও গত ২৩ সালে গভর্নিং বডির এক সদস্য সমালোচিত হন প্রতিষ্ঠানের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বিয়ে করে। এনিয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাবা মামলা দায়ের করেছে।
বিতর্কিত এসব কান্ডে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও অভিভাবক জানান, ‘আমরা লজ্জার মধ্যে আছি। যেখানে গভর্নিং বডিই প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে, সেখানে গভর্নিং বডির মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।’
প্রতিষ্ঠানটির নানা অনিয়মের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে উচ্চ আদালতও। আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু। রাজনৈতিক প্রভাবসহ নানা কারণে তাকে হত্যা করা হয়। যেটি এখন উচ্চ আদালতে তদন্তাধীন রয়েছে।
দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হওয়ায় গতবছর ২০২৩ সালে এক শুনানিতে উচ্চ আদালত এ প্রতিষ্ঠান নিয়ে এক মন্তব্যে বলেন, রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়। তাই এ প্রতিষ্ঠানকে সরকারি খাতে নেওয়া উচিত।
প্রতিষ্ঠানটির আজীবন দাতা সদস্য কাজী তৌহিদুজ্জামান ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ করেছেন, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির নির্বাচন-২০২৪’ এর দাতা ভোটার তালিকা হাল নাগাদের জন্য। আবেদনকারী ৯৮ জন আজীবন দাতা সদস্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটি গত ১৩ মার্চ অধ্যক্ষকে তদন্তের বিষয়ে জানানোর পরও তিনি নির্বাচনী তফশিল ঘোষণার জন্য ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভোটার তালিকা পাঠান।
এরপর গত ২০ মার্চ তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্তের জন্য স্কুলে উপস্থিত থেকে অধ্যক্ষ ও তিন জন সহকারী প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য নিয়েছেন। ৯৮ জন দাতা সদস্যকে বাদ দেয়ার কারণ হিসেবে যদি কোনো তথ্য উপাত্ত থাকে তাহলে সেগুলো নিয়ে অধ্যক্ষকে গত ২৫ মার্চ শিক্ষা বোর্ডে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়। এর আগেই গত ১৯ মার্চ তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হয়।
প্রতিষ্ঠানের এসব দুর্নীতি চাপিয়ে আবারও নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন মোঃ শাহাদাৎ ঢালী। তিনি প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির প্রাথমিক শাখার সদস্য ছিলেন এবং বর্তমান প্রার্থী। এছাড়াও তিনি সেফ আইডিয়াল স্কুলের এবং সেফ এডুকেশন ফ্যামিলি কোচিং সেন্টারের চেয়ারম্যান।
অভিযোগ আছে কোচিং বাণিজ্য করতে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করে তার পরিচালিত কোচিং সেন্টারে নিয়ে যায়। এছাড়াও শিক্ষক অভিভাবকদের অভিযোগ ওই কোচিং সেন্টারে ছাত্রী নির্যাতন ও যৌন হয়রানি করা হয়। এই সদস্যের বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা হয়েছে বলে জানান অভিযোগকারীরা।
এক নথিতে দেখা যায় ২০২৩ সালের শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিপত্র অনুযায়ী মহোদয়ের জমজ কোটায় ৯ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য সুপারিশ করেন। এছাড়াও মতিঝিল এক নথি অনুযায়ী দেখা যায়, তার নিজ সাক্ষরিত ইংলিশ ভার্সন থেকে ৫০ হাজার,বাংলা ভার্সন থেকে ৫০ হাজার, কলেজ শাখা থেকে ৫০ হাজার, মুগদা ভার্সন থেকে ৫০ হাজার, বনশ্রী ইংলিশ ভার্সন থেকে ৫০ হাজার ও বাংলা ভার্সন থেকে ৫০ হাজার এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষে সাংবাৎসরিক পরীক্ষার সম্মানী এবং একাদশ শ্রেণীর ভর্তির সম্মানী হিসেবে ৫ হাজার টাকা তুলেন। নথিতে আরও ১১ জনের নাম সেখানে যায়। তবে নিজ সাক্ষরিত সম্মানী তুলেন দাতা সদস্য খন্দকার মোস্তাক আহমেদ, মাধ্যমিক শাখার অভিভাবক সদস্য অধ্যাপক মোঃ আমজাদ হোসেন, সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য আজিজা বেগম, কলেজ শাখার সাধারণ শিক্ষক সদস্য মোঃ মিজানুর রহমান, স্কুল শাখার সাধারণ শিক্ষক সদস্য রোকুনুজ্জামান শেখ, সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক সদস্য ডাক্তার, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সদস্য সচিব ফাওজিয়া রাশেদী।
একজন কোচিং ব্যবসায়ী হয়ে কিভাবে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের প্রাথমিক শাখার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন এই বিষয়ে শাহাদাৎ ঢালীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এইগুলো সব ভিত্তিহীন। সরকার কোনো কোচিং সেন্টারকে অবৈধ ঘোষণা করে নাই কিংবা কোচিং সেন্টারের মালিক হয়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির নির্বাচন করা যাবে না এরকম কোন নীতিমালা নেই। আমরা সরকারকে ট্যাক্স দেই আমাদের লাইসেন্স আছে।
কিন্তু “মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০০৯ এর (১১) ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি নির্বাচনে প্রার্থীর অযোগ্যতা (গ) তে স্পষ্ট ভাবে বলা আছে
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বিরোধী বা ইহার সুনাম নষ্ট হয় এরূপ কোন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেন অথবা কোনভাবে উহাতে সহায়তা প্রদান করেন” তাহলে তিনি অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। কিন্তু কোচিং বাণিজ্য করে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ থাকা সত্বেও মতিঝিল আইডিয়ালের মান ক্ষুণ্ণ হলেও তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
অন্যদিকে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাওয়া প্রতিষ্ঠানটির সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মাকসুদা আক্তারকে ফরম কিনতে না দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, মাকসুদা আক্তার সাময়িক বরখাস্ত আছে। এ কারণে তাকে ফরম দেয়া হয়নি। যদিও উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় এক মাসের মধ্যে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে মাকসুদা আক্তার বলেন, ভোটার তালিকায় নাম থাকার পরও তাকে সদস্য পদের মনোনয়ন ফরম দেয়া হয়নি। সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি অধ্যক্ষ। তিনি হাইকোর্টের রায়ের বিষয়টি উল্লেখ করে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও ‘গভর্নিং বডির নির্বাচন-২০১৪’ কমিশনের প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। এরপরও তাকে ফরম দেয়া হয়নি বলে মাকসুদা আক্তারের অভিযোগ।
এবিষয়ে কথা হয় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের অবৈধ ক্ষমতাবলে নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক রোকুনুজ্জামান শেখ এর সাথে। নথিপত্রের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো ভুয়া। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এগুলোর জন্য থানায় জিডি করা হয়েছে। এসময় সাংবাদিক তার করা স্বাক্ষর নথি দেখিয়ে নকল স্বাক্ষর কি না জানতে চাইলে কোন উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান তিনি। একপর্যায়ে তিনি বলেন, অফিসিয়ালি আমাদের প্রতিষ্ঠান প্রধান ব্যতীত কারও গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ নেই। বক্তব্যের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অজুহাত দিলেও প্রতিষ্ঠান প্রধানের অন্যসব কাজ তিনিই করেন। আগামী ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডি নির্বাচনের বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে দেখা যায়। যেটা সম্পূর্ন নিয়ম বহির্ভূত এবং সেটির দায়িত্ব শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান প্রধানের।
প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেক শিক্ষকই কথা বলেছেন। কিন্তু কেউ নাম পরিচয় প্রকাশ করতে সাহস পাচ্ছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের এক অভিভাবক বলেন, ‘এখানে বড় সিন্ডিকেট রয়েছে। প্রভাবশালী একটি মহল এটি নিয়ন্ত্রণ করছে। যার মধ্যে রয়েছে সাবেক ও আগামী গভর্নিং বডির নির্বাচন করতে আসা প্রার্থীরা। তারা শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো কিছু করার চেয়ে তাদের নজর বেশি নিজেদের আখের গোছানোর দিকে। যারা আছেন বা যাদের একচ্ছত্র আধিপত্যে স্কুল চলছে, তারাই আবার আসবেন।
জিয়াউল কবীর নামে এক অভিভাবক বলেন, যে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির এত সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেখানে ভাবমূর্তি আর কী থাকবে। এর প্রধান দায় নিতে হবে গভর্নিং বডিকে।
এছাড়া আরও অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে। শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে সরকারের বিধি মানা হয় না। ইচ্ছেমতো শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ হয়। একজন সচিব সভাপতি থাকার কারণে গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া যাচ্ছে না—এমনটাই মনে করেন অভিভাবকরা।
এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অধিদপ্তর মাধ্যমিক উইং এর পরিচালক প্রফেসর সৈয়দ জাফর আলী বলেন, গভর্নিং বডির সদস্যদের সাংবাৎসরিক সম্মানী নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এটা শিক্ষকরা পেতে পারে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির কোনো সদস্য প্রতিষ্ঠানের কোন প্রকার টেন্ডারের কাজ করতে পারবেন না। প্রতিষ্ঠানের সংস্কার অথবা কোন সরঞ্জাম ক্রয় করার জন্য শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত নিয়ে রেজুলেশন করলেই হবে না অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বোর্ডের অনুমতি লাগবে। কোন কোচিং ব্যবসায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাব্যবস্থা সহজ করে দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য চলবে না, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল শিক্ষা কারিকুলাম চেঞ্জ করে এত সহজ করে দেওয়ার পরেও আমার মনে হয় না কোন কোচিং এর প্রয়োজন আছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ে ১০-২০ জনকে নিয়ে বিশেষ ক্লাস নেওয়া যেতে পারে কিন্তু সরকার এবং সংশ্লিষ্ট বোর্ড সব সময় আমরা কোচিং এর বিরুদ্ধে। যদি কারো বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বিরোধী কোন কাজের সাথে লিপ্ত থাকে বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হবে এমন কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসে তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে বোর্ডের সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘কে কোচিং পরিচালনা করছে, কী ব্যবসা করছে সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের দেখার বিষয় সে প্রকৃত অভিভাবক কি না।’ তবে কেউ যদি কোচিং সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগপত্র দেয় তখন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান বোর্ড চেয়ারম্যান।
প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য গোলাম আশরাফ তালুকদার গত ২৮ মার্চ ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘স্থায়ী অধ্যক্ষ না থাকায় ঘন ঘন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পরিবর্তন করায় অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার অভাবে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রাশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতা থাকায় মৌলবাদ শক্তি জেঁকে বসেছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসন্ন গভর্নিং বডি গঠনের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য জয় পরাজয়ের হিসাব নিকাশে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ওপর চলছে নিয়ম এবং আইন বহিভূর্ত নিপীড়ন, ভেঙে পড়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা, চলছে বিভক্তি, বিভাজন ও আঞ্চলিকভাবে বিষবাম্পের লেলিহান।’প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি মুখ থুবড়ে পড়ে যাবার সম্ভাবনা আসন্ন প্রায়।’