ঢাকা ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সাবেক ছাত্রদল নেতার ওপর হামলার নিন্দা ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জেলা বিএনপি নেতা রাসেলের বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র করবে যৌথ তিনটি সামরিক মহড়া বিএনপি নেতা সৈয়দ নুর জীবনের শেষ মুহুর্তেও ছিলেন মিছিলে, রেখেছেন বক্তব্য কাউন্সিলর একরাম হত্যা মামলায় বদি’কে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ সৎ, নীতিবান ও পেশাদার অফিসাররা পদোন্নতির দাবিদার: প্রধান উপদেষ্টা খালি পেটে এই ৭ কাজ করলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বেন বেগুন আগে খেয়েছেন এভাবে? গোপালগঞ্জের ঘটনায় গণগ্রেপ্তার হচ্ছে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মধ্যরাতে চকরিয়ার সড়কে বিক্ষোভ নি’ষি’দ্ধ ছাত্রলীগের, খবর ছড়ালো ফেসবুকে! সালাহউদ্দিন আহমদকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে কুতুবদিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল এখন আমাদের লড়াই করতে হবে ‘ট্যাবলেটের’ বিরুদ্ধে- হাসনাত হাসপাতালে অসুস্থ জামায়াত আমির’কে দেখতে গেলেন মির্জা ফখরুল গণতান্ত্রিক শক্তির লড়াইয়ে আরামে আছেন দিল্লিওয়ালা: সালাহউদ্দিন আহমদ ‘সালাহউদ্দিন উঁচু্মানের নেতা, কটুক্তি’র সাহসদাতাদের মূল উৎপাটন করা হবে’ এনসিপি নেতা পাটোয়ারীকে গ্রেফতারের দাবী পেকুয়া বিএনপির

‘সালাউদ্দিন আহমেদ’ কে নিয়ে ফেসবুকে যা লিখলেন প্রেস সচিব

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ওই পোস্টে তিনি বলেছেন, সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তার সংগ্রামগুলোই শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে তীব্রভাবে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল।

রোববার সকাল ১০টার দিকে দেওয়া নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই পোস্টটি শেয়ার করেন।

পোস্টে প্রেস সচিব লিখেন, ‘সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিরাপত্তা বাহিনী অপহরণ, নির্যাতন এবং সীমান্ত পার করে দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই তিনি গোপন স্থান থেকে বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালাচ্ছিল। খালেদা জিয়াকে গুলশানের অফিসে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল।’

তিনি লিখেছেন, ‘দলের শীর্ষ নেতারা অনেকেই আত্মগোপনে চলে যান, কেউবা ধরা পড়েন পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‍্যাবের হাতে। আমি এবং আমার দক্ষিণ এশিয়া প্রধান ক্রিস অটন ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির পক্ষ থেকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসনের সঙ্গে গোপনে খালেদা জিয়ার অফিসে প্রবেশ করে তার সাক্ষাৎকার নেই। সেখানে দায়িত্বে থাকা সাদাপোশাকধারী নিরাপত্তা কর্মীরা ভেবেছিল আমরা ব্রিটিশ হাইকমিশনের লোক।’

শফিকুল আলম জানান, ‘সেই সময় প্রতিদিন সালাহউদ্দিন আহমেদের বিবৃতি পেতাম। ক্রিস এবং আমি তার বিবৃতি আমাদের রিপোর্টে নিয়মিত ব্যবহার করতাম। কারণ, সেগুলো ছিল সুগঠিত, তীব্র এবং সোজাসাপটা। আমি সবসময় মনে করতাম, রুহুল কবির রিজভী দেশের অন্যতম আবেগপ্রবণ রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু তার লেখা বিবৃতি জটিল বাক্যে ভর্তি থাকত। একটা ভালো, চিত্তাকর্ষক উদ্ধৃতি খুঁজে পেতে কষ্ট হতো।’

‘কিন্তু রিজভী গ্রেপ্তার হওয়ার পর সালাহউদ্দিন আহমেদ যখন মুখপাত্রের দায়িত্ব নিলেন, তখন তার পাঠানো বিবৃতিগুলো ছিল বিএনপির ইতিহাসে সবচেয়ে সাহসী এবং জ্বালাময়ী। এগুলো যেন বিস্ফোরণ ঘটাতো, সরাসরি শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাতো। ভাষা ছিল কঠিন, সরাসরি এবং বারবার লক্ষ্যে আঘাত হানত। আমরা নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে শুনেছিলাম, শেখ হাসিনা এতটাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন যে, তিনি সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড়ের নির্দেশ দেন।’

‘অবশেষে ২০১৫ সালের শুরুর দিকে সালাহউদ্দিন আহমেদ অপহৃত হন এবং গুম করা হয়। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ একজন সাহসী নারী হিসেবে সেই সময় তার স্বামীর মুক্তির দাবিতে যেভাবে লড়াই চালিয়ে গেছেন, তা ছিল অভাবনীয়। তার সেই অবিরাম লড়াই এবং দৃঢ়তা — যেমনটি দেখা গেছে ‘মায়ের ডাক’-এর হাজেরা খাতুন ও তার মেয়েদের কাছ থেকেও — শেখ হাসিনার শাসনামলে এক নিদারুণ প্রতিরোধের ইতিহাস হয়ে আছে।’

প্রেস সচিব লিখেন, ‘সম্ভবত হাসিনা আহমেদের এই প্রতিবাদ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার সোচ্চার অবস্থান এবং মিডিয়ার নজরই কিছুটা হলেও সালাহউদ্দিনকে সীমান্ত পেরিয়ে শিলং পাঠানোর পেছনে ভূমিকা রেখেছে।’

শফিকুল আলম বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, আজকের অনেক তরুণ ও সহিষ্ণুতা হারানো বিএনপি কর্মী সেই সংগ্রামের দিনগুলোর কথা ভুলে গেছে। গতকাল আমরা দেখেছি কীভাবে সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপপ্রচার চালানো হয়েছে। কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিত — এই সংগ্রামগুলোই শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে তীব্রভাবে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগই আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রামের সেই সোনালী এবং গৌরবময় অধ্যায়গুলো ভুলে গেছেন। আজকের ভালো সময়গুলো আমাদের সমস্ত খারাপ স্মৃতি মুছে ফেলেছে বলে মনে হচ্ছে।’

ট্যাগ :

সাবেক ছাত্রদল নেতার ওপর হামলার নিন্দা ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জেলা বিএনপি নেতা রাসেলের

This will close in 6 seconds

‘সালাউদ্দিন আহমেদ’ কে নিয়ে ফেসবুকে যা লিখলেন প্রেস সচিব

আপডেট সময় : ১২:৫০:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ওই পোস্টে তিনি বলেছেন, সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তার সংগ্রামগুলোই শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে তীব্রভাবে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল।

রোববার সকাল ১০টার দিকে দেওয়া নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই পোস্টটি শেয়ার করেন।

পোস্টে প্রেস সচিব লিখেন, ‘সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিরাপত্তা বাহিনী অপহরণ, নির্যাতন এবং সীমান্ত পার করে দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই তিনি গোপন স্থান থেকে বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালাচ্ছিল। খালেদা জিয়াকে গুলশানের অফিসে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল।’

তিনি লিখেছেন, ‘দলের শীর্ষ নেতারা অনেকেই আত্মগোপনে চলে যান, কেউবা ধরা পড়েন পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‍্যাবের হাতে। আমি এবং আমার দক্ষিণ এশিয়া প্রধান ক্রিস অটন ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির পক্ষ থেকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসনের সঙ্গে গোপনে খালেদা জিয়ার অফিসে প্রবেশ করে তার সাক্ষাৎকার নেই। সেখানে দায়িত্বে থাকা সাদাপোশাকধারী নিরাপত্তা কর্মীরা ভেবেছিল আমরা ব্রিটিশ হাইকমিশনের লোক।’

শফিকুল আলম জানান, ‘সেই সময় প্রতিদিন সালাহউদ্দিন আহমেদের বিবৃতি পেতাম। ক্রিস এবং আমি তার বিবৃতি আমাদের রিপোর্টে নিয়মিত ব্যবহার করতাম। কারণ, সেগুলো ছিল সুগঠিত, তীব্র এবং সোজাসাপটা। আমি সবসময় মনে করতাম, রুহুল কবির রিজভী দেশের অন্যতম আবেগপ্রবণ রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু তার লেখা বিবৃতি জটিল বাক্যে ভর্তি থাকত। একটা ভালো, চিত্তাকর্ষক উদ্ধৃতি খুঁজে পেতে কষ্ট হতো।’

‘কিন্তু রিজভী গ্রেপ্তার হওয়ার পর সালাহউদ্দিন আহমেদ যখন মুখপাত্রের দায়িত্ব নিলেন, তখন তার পাঠানো বিবৃতিগুলো ছিল বিএনপির ইতিহাসে সবচেয়ে সাহসী এবং জ্বালাময়ী। এগুলো যেন বিস্ফোরণ ঘটাতো, সরাসরি শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাতো। ভাষা ছিল কঠিন, সরাসরি এবং বারবার লক্ষ্যে আঘাত হানত। আমরা নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে শুনেছিলাম, শেখ হাসিনা এতটাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন যে, তিনি সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড়ের নির্দেশ দেন।’

‘অবশেষে ২০১৫ সালের শুরুর দিকে সালাহউদ্দিন আহমেদ অপহৃত হন এবং গুম করা হয়। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ একজন সাহসী নারী হিসেবে সেই সময় তার স্বামীর মুক্তির দাবিতে যেভাবে লড়াই চালিয়ে গেছেন, তা ছিল অভাবনীয়। তার সেই অবিরাম লড়াই এবং দৃঢ়তা — যেমনটি দেখা গেছে ‘মায়ের ডাক’-এর হাজেরা খাতুন ও তার মেয়েদের কাছ থেকেও — শেখ হাসিনার শাসনামলে এক নিদারুণ প্রতিরোধের ইতিহাস হয়ে আছে।’

প্রেস সচিব লিখেন, ‘সম্ভবত হাসিনা আহমেদের এই প্রতিবাদ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার সোচ্চার অবস্থান এবং মিডিয়ার নজরই কিছুটা হলেও সালাহউদ্দিনকে সীমান্ত পেরিয়ে শিলং পাঠানোর পেছনে ভূমিকা রেখেছে।’

শফিকুল আলম বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, আজকের অনেক তরুণ ও সহিষ্ণুতা হারানো বিএনপি কর্মী সেই সংগ্রামের দিনগুলোর কথা ভুলে গেছে। গতকাল আমরা দেখেছি কীভাবে সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপপ্রচার চালানো হয়েছে। কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিত — এই সংগ্রামগুলোই শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে তীব্রভাবে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগই আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রামের সেই সোনালী এবং গৌরবময় অধ্যায়গুলো ভুলে গেছেন। আজকের ভালো সময়গুলো আমাদের সমস্ত খারাপ স্মৃতি মুছে ফেলেছে বলে মনে হচ্ছে।’