সাবেক খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলামের ১৫টি ব্যাংক হিসাবের ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছে আদালত।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, “কামরুল ইসলামের নামে দুদকের মামলা রয়েছে। এসব মামলার ১৫টি ব্যাংক একাউন্টে ৩ কোটি ৫৫ লাখ ১০ হাজার ১৮৩ টাকা রয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে উক্ত ব্যাংক একাউন্টগুলো অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
গত ৫ অগাস্টে সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অন্য অনেক প্রভাবশালী নেতাদের মত রাজনীতিবিদ এই আইনজীবীকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না।
এরপর গত ১৮ নভেম্বর উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১৯ নভেম্বর তাকে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে। বর্তমানে কামরুল কারাগারে আছেন।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক সময়ের প্রভাবশালী এই নেতা ২০০৮ নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে আসেন। এরপর থেকে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ পর্যন্ত টানা চারবার জয়ী হন।
নবম সংসদে জয়ের পর ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় তিনি আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য সরকারের পরের মেয়াদে ২০১৪ সালে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে পরের দুই মেয়াদের মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি।
আইন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব পালনকালে ২০০৯ সালে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে সময় টেলিভিশন। পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শেষে যা ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল বাণিজ্যিক সম্প্রচারে আসে।
লাইসেন্স নেওয়ার সময়কালে এ টেলিভিশন স্টেশনে তৎকালীন মন্ত্রী কামরুলের ভাগ্নে আহমেদ জোবায়েরের নামে ৯৩ শতাংশ শেয়ার ছিল। ব্যবসায়িক ও পারিবারিক সূত্রের তথ্য, এর মধ্যে ৯০ শতাংশ শেয়ার কামরুল ইসলামের হলেও কাগজে কলমে তা ছিল আহমেদ জোবায়েরের নামে।
অন্য অংশীদারদের মধ্যে কামরুল ইসলামের ভাই মোরশেদুল ইসলামের ৩ শতাংশ শেয়ার ছিল।
ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
তার বিরুদ্ধে দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজ নামে ও সন্তানদের নামে দেশে বিদেশে অঢেল সম্পদ গড়েছেন তিনি। আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে নিম্ন আদালতে অধিকাংশ কর্মচারীর নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে ব্রাজিল থেকে নিম্নমানের গম ক্রয় করে সরকারি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।
সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম