ঢাকা ০৯:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কক্সবাজারে দুর্যোগ প্রস্তুতি মহড়া ও র‍্যালী অনুষ্ঠিত উখিয়ায় ঢালুতে আটকে আছে মালবাহী লরি! দীর্ঘ যানজট হলেও জানেন না হাইওয়ে ওসি মাগুরার শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে কক্সবাজার এসে পর্যটকদের আর চিন্তা নেই এসে গেছে ‘ভ্রমণিকা’ অ্যাপ শুক্রবার কক্সবাজার আসছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব জামালপুরের ‘যৌনপল্লী’ থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প – মাদকের এডি দিদারুলের যত অপকর্ম! সাংবাদিককে ফাঁসাতে কক্সবাজার মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের লাইভ নাটক! “আমার বোনের কান্না, আর না-আর না” পেকুয়ার বানৌজা শেখ হাসিনা নৌঘাঁটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে বানৌজা পেকুয়া পেকুয়ার নৌঘাঁটি সহ সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা-স্থাপনার নাম পরিবর্তন ধর্ম উপদেষ্টা কক্সবাজার আসছেন সোমবার: জেলা মডেল মসজিদ উদ্বোধন করবেন চকরিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান: ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা মব ভায়োল্যান্স সৃষ্টিকারী সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে: মাহফুজ আলম ব্যারিস্টার সাফফাত ফারদিন চৌধুরী – মরিচ্যাপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন সভাপতি রিজার্ভ এখন ২১.৪০ বিলিয়ন ডলার

ডিসি সম্মেলনে যেসব পরামর্শ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

  • টিটিএন ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৯:৫১:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 159

জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ভেতর প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব রাখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ পরামর্শ দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারকে একটা টিম হতে হবে। সরকার চালাতে টিম ওয়ার্ক লাগে। টিম গঠনের জন্য সবাই একত্র হয়, তখন কার কী করণীয়, সেগুলো নিয়ে আলোচনা থাকে। কার কী ঘাটতি রয়েছে, সেসব বিষয় থাকে। কারণ খেলা হলো সামগ্রিক একটা জিনিস। একজনের ভুল কাজে পুরো টিম তার সাফল্য থেকে বঞ্চিত হয়। তাই আমরা এমন ভুল যেন না করি, যাতে পুরো টিমের সাফল্য ব্যাহত হয়। এগুলো নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা।’

ড. ইউনসূ বলেন, ‘সরকার গঠনের পর ছয় মাস চলে গেল। আয়োজনের জন্য এটাকে আমরা বলছি প্রথম পর্ব। আয়োজনের সময় অনেক ভুলভ্রান্তি হয়েছে। এখন সেগুলো ঠিক করে পুরো খেলার জন্য প্রস্তুত। সেই প্রস্তুতি হলো কি না বা কী কী ঘাটতি রয়েছে সেগুলো ঠিক করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এই বৈঠক যদি বড় কোম্পানির এক্সিকিউটিভদের নিয়ে হতো। তাদের যারা শরিক থাকতো তারা কী বলতো, নিশ্চয় ম্যানেজিং ডিরেক্টরের প্রশংসায় সময় নষ্ট করতো তা। তারা বলতো আমাকে এই কাজ দিয়েছেন, আমি এই কাজ করেছি, আমার এই সাফল্য হয়েছে, এখন ওই কাজের জন্য প্রস্তুত। এখানে দুটি উদাহরণ তুলে ধরলাম। একটা মাঠের খেলোয়াড়দের নিয়ে আরেকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ফিল্ড অফিসারদের বক্তব্য।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সরকারের খোলোয়াড় আমরা যারা আছি, তাদের ভূমিকা ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোনো একটির মতো হতে হবে। অমরা কী করছি কী করা দরকার সেগুলো নিয়ে আলোচনা।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আজকের এই সম্মেলনে আমাকে প্রধান অতিথি বলাতে কষ্ট পেলাম। যেন আমাকে বাইরে রাখা হলো এই খেলার মাঠ থেকে। হওয়া উচিত ছিল আমি খেলার ক্যাপ্টেন। আমি অতিথি নয়, ক্যাপ্টেন হিসেবে বক্তব্য দিতে চাই।’

সরকারে কাজ কী ধরনের তা হাতেগোনা মাপা জিনিস উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কাজ একই, তবে বারে বারে একই ভঙ্গিতে আসছে। সেসব কাজ কে কীভাবে করছি, কীভাবে হলো ভালো হতো, ক্যাপ্টেনের সিগন্যালটা কীভাবে যাওয়া দরকার এগুলো নিয়ে আলোচনা।’

কো-অর্ডিনেশন নিয়ে সম্মেলনে আলোচনার পরামর্শ দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের বোঝাবুঝির মধ্যে যেন গলদ না থাকে। সেখানে কী কী বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত সবার ভালো করেই জানা আছে। জেলার দায়িত্ব সামগ্রিকভাবে একজনের ওপর। তার সঙ্গে বাকিদের কো-অর্ডিনেশন করতে হয়। সেই কো-অর্ডিনেশনের কি সমস্যা, নাকি পৃথক পৃথকভাবে হবে এগুলো পরিষ্কার করে নেয়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গ হলে কী করতে হবে। ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত চেইন অব কমান্ড কীভাবে যাবে। এই নয়, আমার কাজ ছিল না, তাই মনোযোগ দেই নাই। কিন্তু এটা হতে দেয়া যাবে না। কারণ আমরা হলাম সরকার। তাই এসব দায় এড়ালে হবে না। নারী ও শিশুদের রক্ষা বিশেষ দায়িত্ব। সংখ্যালঘুদের রক্ষা মস্তবড় দায়িত্ব। কারণ বিষয়টি নিয়ে আমাদের ওপর সারা দুনিয়া নজর রাখে। সরকারের দায়িত্ব হলো সব নাগরিকের সুরক্ষা বিধান করা। সামনে আমাদের যেসব কর্মসূচি নেব, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার কথা মাথায় থাকবে।’

বাজার দর নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সেখানে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থা থাকতে পারে। আমার জেলার বাজারদর সবচেয়ে ভালো। আমার জেরার শান্তিশৃঙ্খলা সবচেয়ে ভালো। আমার জেলায় কোনো চাঁদাবাজি নেই। খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতায় আমি ওপরে আছি। চেষ্টায় যে পিছিয়ে না পড়ি। র‌্যাংকিং থাকলে নিজেদের মধ্যে আনন্দ হয়। সবার মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব আসুক।’

ডিসিদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘এটাই সুযোগ নিজেকে প্রকাশ কারার, সৃজনশীলতা প্রকাশ করার। গৎবাঁধা কাজ থাকবে, তবে সৃজনশীলতাও থাকতে হবে।’

জন্ম সনদ নিয়ে ভোগান্তি কমানোর নির্দেশ দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘যেকোনো সময় যেন প্রতিটি নাগরিককে জন্ম সনদ প্রদানের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। ডিসিদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে জন্ম সনদ প্রদানের ভোগান্তি কমাতে হবে। একইভাবে পাসপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রেও ভোগান্তি কমাতে আন্তরিক হতে হবে।’

জেলা পর্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষাকে আরও উন্নয়ন করতে ডিসিদের পরিচর্যা করার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘কীভাবে কোন জেলায় শিক্ষার মান উন্নয়ন করা যায়, এ ব্যাপারে কাজ করতে হবে। পাসপোর্ট করতে হলে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না, এটা সবার নাগরিক অধিকার।’

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

কক্সবাজারে দুর্যোগ প্রস্তুতি মহড়া ও র‍্যালী অনুষ্ঠিত

This will close in 6 seconds

ডিসি সম্মেলনে যেসব পরামর্শ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৯:৫১:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ভেতর প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব রাখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ পরামর্শ দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারকে একটা টিম হতে হবে। সরকার চালাতে টিম ওয়ার্ক লাগে। টিম গঠনের জন্য সবাই একত্র হয়, তখন কার কী করণীয়, সেগুলো নিয়ে আলোচনা থাকে। কার কী ঘাটতি রয়েছে, সেসব বিষয় থাকে। কারণ খেলা হলো সামগ্রিক একটা জিনিস। একজনের ভুল কাজে পুরো টিম তার সাফল্য থেকে বঞ্চিত হয়। তাই আমরা এমন ভুল যেন না করি, যাতে পুরো টিমের সাফল্য ব্যাহত হয়। এগুলো নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা।’

ড. ইউনসূ বলেন, ‘সরকার গঠনের পর ছয় মাস চলে গেল। আয়োজনের জন্য এটাকে আমরা বলছি প্রথম পর্ব। আয়োজনের সময় অনেক ভুলভ্রান্তি হয়েছে। এখন সেগুলো ঠিক করে পুরো খেলার জন্য প্রস্তুত। সেই প্রস্তুতি হলো কি না বা কী কী ঘাটতি রয়েছে সেগুলো ঠিক করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এই বৈঠক যদি বড় কোম্পানির এক্সিকিউটিভদের নিয়ে হতো। তাদের যারা শরিক থাকতো তারা কী বলতো, নিশ্চয় ম্যানেজিং ডিরেক্টরের প্রশংসায় সময় নষ্ট করতো তা। তারা বলতো আমাকে এই কাজ দিয়েছেন, আমি এই কাজ করেছি, আমার এই সাফল্য হয়েছে, এখন ওই কাজের জন্য প্রস্তুত। এখানে দুটি উদাহরণ তুলে ধরলাম। একটা মাঠের খেলোয়াড়দের নিয়ে আরেকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ফিল্ড অফিসারদের বক্তব্য।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সরকারের খোলোয়াড় আমরা যারা আছি, তাদের ভূমিকা ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোনো একটির মতো হতে হবে। অমরা কী করছি কী করা দরকার সেগুলো নিয়ে আলোচনা।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আজকের এই সম্মেলনে আমাকে প্রধান অতিথি বলাতে কষ্ট পেলাম। যেন আমাকে বাইরে রাখা হলো এই খেলার মাঠ থেকে। হওয়া উচিত ছিল আমি খেলার ক্যাপ্টেন। আমি অতিথি নয়, ক্যাপ্টেন হিসেবে বক্তব্য দিতে চাই।’

সরকারে কাজ কী ধরনের তা হাতেগোনা মাপা জিনিস উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কাজ একই, তবে বারে বারে একই ভঙ্গিতে আসছে। সেসব কাজ কে কীভাবে করছি, কীভাবে হলো ভালো হতো, ক্যাপ্টেনের সিগন্যালটা কীভাবে যাওয়া দরকার এগুলো নিয়ে আলোচনা।’

কো-অর্ডিনেশন নিয়ে সম্মেলনে আলোচনার পরামর্শ দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের বোঝাবুঝির মধ্যে যেন গলদ না থাকে। সেখানে কী কী বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত সবার ভালো করেই জানা আছে। জেলার দায়িত্ব সামগ্রিকভাবে একজনের ওপর। তার সঙ্গে বাকিদের কো-অর্ডিনেশন করতে হয়। সেই কো-অর্ডিনেশনের কি সমস্যা, নাকি পৃথক পৃথকভাবে হবে এগুলো পরিষ্কার করে নেয়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গ হলে কী করতে হবে। ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত চেইন অব কমান্ড কীভাবে যাবে। এই নয়, আমার কাজ ছিল না, তাই মনোযোগ দেই নাই। কিন্তু এটা হতে দেয়া যাবে না। কারণ আমরা হলাম সরকার। তাই এসব দায় এড়ালে হবে না। নারী ও শিশুদের রক্ষা বিশেষ দায়িত্ব। সংখ্যালঘুদের রক্ষা মস্তবড় দায়িত্ব। কারণ বিষয়টি নিয়ে আমাদের ওপর সারা দুনিয়া নজর রাখে। সরকারের দায়িত্ব হলো সব নাগরিকের সুরক্ষা বিধান করা। সামনে আমাদের যেসব কর্মসূচি নেব, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার কথা মাথায় থাকবে।’

বাজার দর নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সেখানে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থা থাকতে পারে। আমার জেলার বাজারদর সবচেয়ে ভালো। আমার জেরার শান্তিশৃঙ্খলা সবচেয়ে ভালো। আমার জেলায় কোনো চাঁদাবাজি নেই। খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতায় আমি ওপরে আছি। চেষ্টায় যে পিছিয়ে না পড়ি। র‌্যাংকিং থাকলে নিজেদের মধ্যে আনন্দ হয়। সবার মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব আসুক।’

ডিসিদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘এটাই সুযোগ নিজেকে প্রকাশ কারার, সৃজনশীলতা প্রকাশ করার। গৎবাঁধা কাজ থাকবে, তবে সৃজনশীলতাও থাকতে হবে।’

জন্ম সনদ নিয়ে ভোগান্তি কমানোর নির্দেশ দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘যেকোনো সময় যেন প্রতিটি নাগরিককে জন্ম সনদ প্রদানের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। ডিসিদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে জন্ম সনদ প্রদানের ভোগান্তি কমাতে হবে। একইভাবে পাসপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রেও ভোগান্তি কমাতে আন্তরিক হতে হবে।’

জেলা পর্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষাকে আরও উন্নয়ন করতে ডিসিদের পরিচর্যা করার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘কীভাবে কোন জেলায় শিক্ষার মান উন্নয়ন করা যায়, এ ব্যাপারে কাজ করতে হবে। পাসপোর্ট করতে হলে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না, এটা সবার নাগরিক অধিকার।’