ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমি আজ ব্যক্তিগতভাবে অভিনন্দন জানাই, যাঁরা ডাকসু নির্বাচনে জয়ী হয়েছে তাঁদের। এটাই গণতন্ত্রের রীতি।’
কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি নির্বাচনে হয়েছিল উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যেহেতু যাত্রা অনেক বছর পরে হয়েছে, কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি ছিল।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) মুক্তিযোদ্ধা হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটি।
‘ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্যানেল জয়ী হয়েছে’ গণমাধ্যমের এমন খবরের কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমার জানামতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।’ ছাত্রশিবিরের নামে ও তাদের ব্যানারে কোনো প্যানেল প্রদান করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ডাকসুর ফলাফল জাতীয় রাজনীতিতে কোন প্রভাব রাখবে কি না, এমন প্রশ্ন তুলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘ডাকসুতে ভিপি–জিএস হয়েছেন অনেক নেতা জাতীয় রাজনীতিতে আছেন, কেউবা হারিয়ে গেছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁরা বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠনভুক্ত ছিলেন, কেউ কেউ জাতীয় সংসদে এসেছেন। বাকিরা এখন পর্যন্ত লড়াই করছেন, সংগ্রাম করছেন আসার জন্য। আমি কারও নাম নিয়ে বলাটা ঠিক হবে না, আমি তাঁদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের সংগ্রাম চালু রাখতে হবে। নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারা প্রচলন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা ফ্যাসিবাদের উত্থান–পুনরুত্থান না চাই, ব্যক্তি স্বৈরতান্ত্রিক পদ্ধতি অথবা দলীয় স্বৈরতান্ত্রিক পদ্ধতির উত্থান না চাই, সংসদীয় একনায়কতন্ত্র না চাই এবং একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কামনা না করি, তাহলে আমাদের নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।’
ভালো রাজনৈতিক স্থাপনার মধ্য দিয়ে অপরাজনীতির বিলুপ্তি ঘটাতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘সেই রাজনীতির চর্চা আমাদের করতে হবে। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে। কিন্তু দিন শেষে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমরা সবাই সবাইকে অভিনন্দন জানাব। এটাই আমাদের রীতি হবে।’
রাষ্ট্রীয় পরিবর্তনের সূতিকাগার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্ররাজনীতির চর্চা থাকতেই হবে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যাঁরা ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে বলেন বা ছাত্ররাজনীতি বন্ধের কথা বলেন, আমি তাঁদের বিরুদ্ধে। কারণ, রাজনীতির চর্চা শিক্ষাঙ্গন, পাঠশালা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়, সেখান থেকে জাতীয় রাজনীতির নেতৃত্ব উঠে আসে ক্রমবিকাশের মধ্য দিয়ে।’
বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমদ জাতীয়তাবাদী মহিলা নেতৃত্বকে আরও সুগঠিত হয়ে কাজ করা ও আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। বিএনপি সরকার গঠন করলে নারী নেতৃত্ব ও সংসদ নির্বাচনে সরাসরি নারী প্রার্থী বাড়ানোর বিধান করবে বলেও জানান তিনি।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ। সভায় মহিলা দলের ঢাকা মহানগর ও জেলার মহিলা দলের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: প্রথম আলো