ঢাকা ০২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জীবন বাঁচালো মৌমাছির কামড়! খুটাখালী ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠিত সৈয়দ আহবায়ক আক্তার সদস্য সচিব খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগ: প্রশংসা কুড়িয়েছেন ইউএনও ক্যথোয়াইপ্রু মারমা বৃষ্টি থাকছে জুন জুড়ে আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবস আজ রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে: জাতিসংঘে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা শনিবার ৬ ঘন্টা বিদ্যুৎহীন থাকবে কক্সবাজার শহর রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে: জাতিসংঘে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মহেশখালী উপজেলা যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত কক্সবাজারে সম্পন্ন হয়েছে ‘জেন্ডার এটিকেট’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ অস্ত্রসহ গ্রেফতার মুবিনুল যুবদলের কেউ নয় দাবী মহেশখালীতে যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ আটক এক ২৪ ঘন্টায় ৬০ জন ‘শয়তান শিকার’ কক্সবাজার পুলিশের! কক্সবাজারে জাতীয় ফলমেলা ২০২৫ এর উদ্বোধন আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘এরিক’

১৭ বছর পর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫শ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন

অবশেষে ১৭ বছর পর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫শ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রয় কমিটি। একইসাথে অনুমোদন পায় যশোর মেডিকেল কলেজও।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সোহেল বকস টিটিএনকে মুঠোফোনে বলেন, আমাদের কাছে খবর এসেছে আজকে এসিসিজিপির সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টি। এখনো অফিসিয়াল পত্র হাতে আসেনি, হয়তো আগামীকাল চলে আসতে পারে।

উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সোহেল বকস বলেন, আশা করছি দ্রুতই নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে। নির্মাণ ব্যয় কতো এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ও কাগজ হাতে এলে বলতে পারবো।

৫শ শয্যার এই হাসপাতালটি হবে ১০ তলা।

হাসপাতাল না হওয়ায় যেসব সংকটে কলেজটি:

২০০৮ সালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের পাশে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শুরু হয় কলেজের কার্যক্রম। এরপর দীর্ঘ আন্দোলনের পর ২০১৭ সালে ঝিলংজায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে শুরু হয় শ্রেণী কার্যক্রম। কিন্তু হাসপাতাল না থাকায় শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস করতে আসতে হতো ১০ কিলোমিটার দূরে জেলা সদর হাসপাতালে।

শিক্ষার্থীরা জানান, নামে আধুনিক কলেজ হলেও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে আছে মাত্র দুটি সাদামাটা বাস। সেই সাথে চরম শিক্ষক সংকট, আছে আবাসন সংকট। পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হবে, এমন প্রত্যাশার প্রহর গুণতে গুণতে দুর্ভোগ সাথী করেই বিদায় নিয়েছে কলেজের ১৪ টি ব্যাচ।

একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজের সাথে থাকার কথা ৫০০ শয্যার হাসপাতাল। ন্যুনতম ২০ টির মতো বিভাগে চিকিৎসা সেবা। কিন্তু এর কোনো ছোঁয়াই পায়নি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ।

শূন্য পড়ে আছে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকের অধিকাংশ পদ। ওএসডি মূলে সহকারী অধ্যাপককে কলেজে সংযুক্তি দিলেও মূলত জুনিয়র শিক্ষকদের দিয়ে কলেজটির কার্যক্রম জোড়াতালি দিয়ে চলছে।

এছাড়াও ১০ তলার একাডেমিক ভবনে নির্মাণ হয়েছে ৬ তলা। দুটি ছাত্রাবাসের ছয় তলা করে হওয়ার কথা থাকলেও তিনতলা করেই ফেলে রাখা হয়েছে। যার জন্য কক্ষ সংকটের কারনে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে থাকতে হয় গণরুমে। শিক্ষার্থীরা বলেন, এতে করে ব্যহত হয় নিয়মিত পড়াশোনা।

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদেরও চিকিৎসা সেবা দিতে হয় । এছাড়াও এখানে সমাগম হয় লাখ লাখ পর্যটকের। সবমিলিয়ে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতাল খুবই অপ্রতুল। যেখানে নির্ধারিত আসনের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। তাই কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে এটি এই অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ হবে।

হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হলেই এখানে এমনিতেই থাকবে সিসিইউ, আইসিইউ ও কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারও৷

কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক রিপন চৌধুরী বলেন, “আমরা একদম প্রথম দিককার ছাত্র কলেজের। একটি ক্যাম্পাস ও একটি পূর্ণাঙ্গ কলেজের জন্য আমাদের অনেক আন্দোলন ছিলো। আজ ভালো লাগছে খবরটি শুনে। বর্তমান অধ্যক্ষ সোহেল বকস বেশ কষ্ট করেছেন হাসপাতালের জন্য।”

ট্যাগ :

This will close in 6 seconds

১৭ বছর পর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫শ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন

আপডেট সময় : ০৫:০৪:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

অবশেষে ১৭ বছর পর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫শ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রয় কমিটি। একইসাথে অনুমোদন পায় যশোর মেডিকেল কলেজও।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সোহেল বকস টিটিএনকে মুঠোফোনে বলেন, আমাদের কাছে খবর এসেছে আজকে এসিসিজিপির সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টি। এখনো অফিসিয়াল পত্র হাতে আসেনি, হয়তো আগামীকাল চলে আসতে পারে।

উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সোহেল বকস বলেন, আশা করছি দ্রুতই নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে। নির্মাণ ব্যয় কতো এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ও কাগজ হাতে এলে বলতে পারবো।

৫শ শয্যার এই হাসপাতালটি হবে ১০ তলা।

হাসপাতাল না হওয়ায় যেসব সংকটে কলেজটি:

২০০৮ সালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের পাশে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শুরু হয় কলেজের কার্যক্রম। এরপর দীর্ঘ আন্দোলনের পর ২০১৭ সালে ঝিলংজায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে শুরু হয় শ্রেণী কার্যক্রম। কিন্তু হাসপাতাল না থাকায় শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস করতে আসতে হতো ১০ কিলোমিটার দূরে জেলা সদর হাসপাতালে।

শিক্ষার্থীরা জানান, নামে আধুনিক কলেজ হলেও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে আছে মাত্র দুটি সাদামাটা বাস। সেই সাথে চরম শিক্ষক সংকট, আছে আবাসন সংকট। পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হবে, এমন প্রত্যাশার প্রহর গুণতে গুণতে দুর্ভোগ সাথী করেই বিদায় নিয়েছে কলেজের ১৪ টি ব্যাচ।

একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজের সাথে থাকার কথা ৫০০ শয্যার হাসপাতাল। ন্যুনতম ২০ টির মতো বিভাগে চিকিৎসা সেবা। কিন্তু এর কোনো ছোঁয়াই পায়নি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ।

শূন্য পড়ে আছে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকের অধিকাংশ পদ। ওএসডি মূলে সহকারী অধ্যাপককে কলেজে সংযুক্তি দিলেও মূলত জুনিয়র শিক্ষকদের দিয়ে কলেজটির কার্যক্রম জোড়াতালি দিয়ে চলছে।

এছাড়াও ১০ তলার একাডেমিক ভবনে নির্মাণ হয়েছে ৬ তলা। দুটি ছাত্রাবাসের ছয় তলা করে হওয়ার কথা থাকলেও তিনতলা করেই ফেলে রাখা হয়েছে। যার জন্য কক্ষ সংকটের কারনে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে থাকতে হয় গণরুমে। শিক্ষার্থীরা বলেন, এতে করে ব্যহত হয় নিয়মিত পড়াশোনা।

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদেরও চিকিৎসা সেবা দিতে হয় । এছাড়াও এখানে সমাগম হয় লাখ লাখ পর্যটকের। সবমিলিয়ে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতাল খুবই অপ্রতুল। যেখানে নির্ধারিত আসনের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। তাই কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে এটি এই অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ হবে।

হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হলেই এখানে এমনিতেই থাকবে সিসিইউ, আইসিইউ ও কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারও৷

কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক রিপন চৌধুরী বলেন, “আমরা একদম প্রথম দিককার ছাত্র কলেজের। একটি ক্যাম্পাস ও একটি পূর্ণাঙ্গ কলেজের জন্য আমাদের অনেক আন্দোলন ছিলো। আজ ভালো লাগছে খবরটি শুনে। বর্তমান অধ্যক্ষ সোহেল বকস বেশ কষ্ট করেছেন হাসপাতালের জন্য।”